শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

রাজস্থলীতে বেড়েছে কলা আর লেবুর দাম

রাজস্থলী সংবাদদাতা
  ৩১ মার্চ ২০২৪, ১৯:৩৯
রাজস্থলীতে বেড়েছে কলা আর লেবুর দাম

কলা আর লেবুর বাজার এখন সরগরম। বাজার ভর্তি কলা আর লেবু। রমজান মাসে চাহিদা থাকায় মৌসুমি ব্যবসায়ীদেরও ছড়াছড়ি। তারপরও কেন অন্যান্য খাদ্যপণ্যের মতো দাম বাড়ছে লেবু ও কলার। এখানেও সিন্ডিকেট নয়তো? এমন প্রশ্ন ক্রেতাদের। বাজার ঘুরে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে কলার কোনো ঘাটতি নেই। রমজান মাসে ব্যাপক চাহিদা থাকায় স্থানীয় উৎপাদিত কলা সাপ্তাহিক তিনদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে নানা জাতের কলা আসছে রাজস্থলীর ইসলামপুর, বাঙ্গালহালিয়া ও রাজস্থলী বাজারে । তবে এই সময়ে লেবুর উৎপাদন কিছুটা কম হলেও চাহিদানুযায়ী ছোট-বড় নানা জাতের পর্যাপ্ত লেবু মিলছে বাজারে। কিন্তু হঠাৎ করে রমজানের শুরুতেই কলা ও লেবুর দাম বেড়েছে দ্বিগুণ- থেকে তিনগুণের চেয়েও বেশি। বিক্রেতারা যে যার মতো দরে তা বিক্রি করছেন।

উপজেলার হাট-বাজারে চওড়া দাম নিয়ে প্রায়ই ক্রেতা-বিক্রেতার বাক- বিতণ্ডা লক্ষণীয়। ভৌগোলিক কারণে পাহাড়ি উচু উচু টিলাবেষ্টিত রাজস্থলী উপজেলাজুড়ে কলা ও নানা জাতের লেবু উৎপাদন হয়। কলা ব্যাপক পরিসরে উৎপাদন হলেও পাশা পাশি এ রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলীর পাহাড়ি এলাকাগুলোতে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের লেবু দেশের চাহিদার যোগান দিয়ে দেশ বিদেশে রপ্তানি হয়। বিক্রেতারা জানালেন রমজান মাস এলেই লেবুর চাহিদা বাড়ে। এ কারণে লোকসানে থাকা অনেক চাষি বছরের এই সময়টার অপেক্ষায় থাকেন। তারা লেবু গাছের বাড়তি খরচ দিয়ে পরিচর্যা করেন। কারণ এই সময়টাতে গাছে কম ফলন আসে। তাই রমজানের শুরু থেকেই লেবুর দাম এক লাফেই দ্বিগুণ-তিনগুণ বেড়ে যায়। তারা জানালেন বেশি দর দিয়ে কিনতে হয় তাই দরদিয়েই তা বিক্রি করেন। রবিবার দেখা গেল প্রতি হালি কাগজী লেবু ৬০ টাকা। কৃষক রা জানালেন এখন লেবুর মৌসুম না থাকায় উৎপাদন কম। তাছাড়া যে বাগানগুলোতে লেবু মিলছে তারা বেশি ব্যয়ে পরিচর্যা করছেন। তাই কম দামে বিক্রি হলে তাদের চরম লোকসান গুনতে হবে। এই কৃষি পণ্যের উৎপাদন রক্ষায় চাষিদের দাবি যদি মৌসুমে (বর্ষায়) সারা বছরের জন্য লেবু প্রক্রিয়াজাত করে সংরক্ষণ করা যায় তাহলে হঠাৎ বেশি দামে লেবু ক্রয় করতে হবে না।

এদিকে বাজার ঘুরে খুচরা কলা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল কলার উৎপাদনের ঘাটতি নেই। স্থানীয় উৎপাদিত কলা জেলার ঘিলাছড়ি, গাইন্দ্যা বাঙালহালিয়া থেকে আসা আধা কাঁচা ও পাকা কলার যথেষ্ট যোগান রয়েছে। তবে চাহিদানুযায়ী পাকা কলার যোগান দিতে কেবল বিশেষ পদ্ধতিতে পাকানোতে কিছুটা সমস্যা পোহাতে হয়। বিক্রেতারা রমজান উপলক্ষে হঠাৎ কলার দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারেননি। পরিবহন ও শ্রমিক ব্যয় বাড়ার অজুহাতে কলার দাম রমজানে দুই থেকে তিনগুণের বেশি বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। তাছাড়া ভ্রাম্যমাণ দোকানিদের খরচ কম থাকলেও তারাও স্থায়ী দোকানিদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেশি দরে বিক্রি করছেন। কলাতেও সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানোর অভিযোগ ক্রেতাদের। এ বিষয়ে ক্রেতারা ক্ষোভের সঙ্গে বলছেন সবমিলিয়ে আমরা ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি। কারণে অকারণে নানা অজুহাতে তারা অধিক মুনাফার আশায় দাম বাড়াচ্ছে। আর রমজান এলেই বাড়ে দাম বাড়ানোর প্রবণতা। তারা অভিযোগ করে বলছেন বাজার মনিটরিং না থাকায় যে যার মতো করে মুনাফা লুটছেন। এখন সবকিছুতেই সিন্ডিকেট। দিন দিন সবই ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে যাচ্ছে। আমাদের নিয়ে কেউ ভাবে না। বলা চলে এই সময়টাতে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা খেয়ে না খেয়ে কোনোরকম জীবন বাঁচাচ্ছে।

এ বিষয়ে রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ পূর্বকোণ কে বলেন- রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা উপজেলা জুড়ে প্রতিনিয়তই বাজার মনিটরিং করছি। অভিযান হচ্ছে। এবিষয়ে উপজেলা প্রশাসন ব্যবসায়ীদের নিয়ে বসবে। ক্রেতারা দামের তারতম্য ও অনিয়ম দেখলে প্রশাসনকে জানানোর অনুরোধ জানান। তিনি এ বিষয়ে সকলকে সহযোগিতার আহ্বান জানান।

যাযাদি/এসএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে