শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

ঠিকানাহীন কল্পনার ঠাঁই হলো পাকা ভবনে 

গাজীপুর প্রতিনিধি
  ২৯ মে ২০২৪, ০৯:০২
ছবি-যায়যায়দিন

৫৫বছরের এক নারী কল্পনা শুধু নিজের নাম বলতে পারলেও তার কোন স্বজন ও পরিচিত কারো নাম-ঠিকানার কথা স্মরণ করতে পারছেন না। প্রায় দেড় বছর ধরে তিনি গাজীপুর শহরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রাস্তার পাশে রানী বিলাসমনি সরকারি স্কুলের হোস্টেলের পুকুর পাড়ে ময়লা স্তুপের পাশে বস্তা ও পুরানো পলিথিনে ঘর বানিয়ে বসবাস করছেন। এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে ময়লা আবর্জনা সংগ্রহ করে তা শুকিয়ে তিনি তার খুপরী ঘরের পাশেই স্তুপ করে রাখেন। প্রতিদিন কে/ বা কারা এসে তাকে খাবারও দিয়ে যান, কিন্তু তার নাম ঠিকানাও জানেন না তিনি।

গাজীপুর সমাজসেবা অফিসের উপ-পরিচালক মো. আনোয়ারুল করিম জানান, সম্প্রতি অতিবর্ষণে তিনি সেখানেই অবস্থান করছিলেন। এমন তথ্য জানতে পেরে তার খোঁজ নেন তিনি। পরে বিষয়টি গাজীপুর জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলামকে জানান। জেলা প্রশাসক মঙ্গলবার সহকারি কমিশনার ওয়াহিদা শাবাবকে পাঠালে তিনি ঘটনাস্থলে ঘিয়ে তাকে ভবঘুরে হিসেবে সনাক্ত করেন। পরে এদিন সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসন ও সমাজ সেবা কার্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে খুপড়ি ঘর থেকে চিকিৎসার কথা বলে গাজীপুর শহর সমাজ সেবা অফিসার আবু বকর মজুমদারের তত্ববধানে গাড়িতে তুলে গাজীপুরের পূবাইলের সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যান।

গাজীপুর শহর সমাজ সেবা অফিসার আবু বকর মজুমদার জানান, কল্পনা (৫৫) শুধু নিজের নামটি বলতে পারেন, আর কারো কথা তার মনে নেই। তার পায়ে ব্যথা থাকায় তিনি লাঠিতে ভর করে চলেন। গাজীপুর শহরের পুকুর পাড়েই তার নির্মাণ করা পলিথিনের খুপড়ি ঘরটিই আশ্রয়স্থল হিসেবে জানেন কল্পনা। পূবাইলে পাকা ভবনে নেয়ার পরেও তিনি ওই ঘরে ফিরে যাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, সেখানে না ফিরলে তার ঘরে পানি ঢুকবে, ঘরের সবকিছু ভিজে যাবে। তবে কে এই কল্পনা, তা কেউ জানেনা। তার সন্ধানের উদ্যোগ নিয়েছে সমাজসেবা অধিদপ্তরের গাজীপুরের কার্যালয়। উপযুক্ত প্রমান মিললে তাকে তার স্বজনদেও কাছে ফিরিয়ে দেয়া তবে।

ততদিন পর্যন্ত এ আশ্রমেই থাকবেন কল্পনা। এখানে থাকা অবস্থায় তার সকল ভরন-পোষণ, চিকিৎসা সেবাসহ প্রয়োজনীয় কাপড়/পোশাক সরবরাহ করা হবে তাকে। তার মতো এ কেন্দ্র প্রায় সাড়ে ৩শ’র মতো আশ্রয়হীন ও ভবঘুরে মানুষ বসবাস করছেন।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে