শনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২

চাঁদপুরে ধোঁয়াশার মধ্যে জোড়া খুন, তিন দিন পর মামলা, আটক ৩

চাঁদপুর প্রতিনিধি
  ০১ জুন ২০২৪, ১০:৪৩
চাঁদপুরে ধোঁয়াশার মধ্যে জোড়া খুন, তিন দিন পর মামলা, আটক ৩
-ফাইল ছবি

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে জোড়া খুনের তিন দিন পার হলেও এখানো অধরা খুনিরা। এই ঘটনায় থানায় মামলা করেছেন গৃহবধূ শাহীনা আক্তার। তবে তিন দিন পরে দায়ের করা এই মামলায় কাউকে অভিযুক্ত করেননি তিনি। আসামি করেছেন অজ্ঞাতনামাদের।

এরই মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ মে রাতের কোনো একসময় হাজীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম রাধাসার গ্রামে প্রবাসী ইউসুফ হোসেনের বাড়িতে খুন হন তার মা হামিদুন নেছা (৭০) ও ছেলে আরাফাত হোসেন (১২)। এই ঘটনায় ওই প্রবাসীর আরেক মেয়ে হালিমা বেগম (১৪) অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হয়।

এদিকে, জোড়া খুনের ঘটনায় কে বাদী হবেন- এই নিয়ে দোটানায় ছিলেন ঘটনার শিকার পরিবারের সদস্যরা।

কারণ, নিহত বৃদ্ধা হামিদুন নেছার তিন ছেলেই প্রবাসে থাকেন। মা এবং সন্তানের এমন পরিণতির একদিন পর ইউসুফ হোসেন ও তার অন্য দুই ভাই দেশে ফেরেন। কিন্তু তাদের কেউ মামলা করতে চাননি। কারণ, আবারো দেশের বাইরে চলে যাবেন তারা।

তাই শেষমেষ ইউসুফ হোসেনের স্ত্রী শাহীনা আক্তার বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে থানায় মামলা করেন।

জিজ্ঞাবাদের জন্য যাদের আটক করা হয়েছে, মামলার তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম ও পরিচয় আপাতত প্রকাশ করতে চান না হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ।

তিনি আরো জানান, এরই মধ্যে চাঞ্চল্যকর এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, উপপরিদর্শক আব্দুর রহমানকে।

গৃহবধূ শাহীনা আক্তার থানায় দায়ের করা অভিযোগে জানান, ২৮ মে রাতে ঘূর্ণিঝড় রিমাল চলাকালে তার পাশের টিনের ঘরে শাশুড়ি হামিদুন নেছার সঙ্গে ঘুমাতে যান বড় মেয়ে হালিমা বেগম ও ছেলে আরাফাত হোসেন। ওই রাতের কোনো একসময় অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা ঘরের জানালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে।

পরে তিনজনের ওপর চড়াও হয় ধারাল অস্ত্র নিয়ে। এতে ঘটনাস্থলেই খুন হয় শাশুড়ি ও তার ছেলে এবং রক্তাক্ত জখম হয় মেয়ে। সেই মেয়ে হালিমা বেগম বর্তমানে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে।

তবে প্রবাসী ইউসুফ হোসেনের স্ত্রী শাহীনা আক্তার তার নিজের পাকা দালানে বসবাস করলেও পাশের টিনের ঘরে শাশুড়ি এবং দুই সন্তান ঘুমাতো। একসঙ্গে তারা কেন থাকতো না, সেই প্রশ্নের উত্তর মিলছে না। অন্যদিকে, ঘর থেকে কোনো কিছু খোয়া না গেলেও কেন এবং কি কারণে এতবড় ঘটনা। তার কোনো উত্তর মিলছে না এখনো। এতে পুলিশও ধোঁয়াশার মধ্যে আছে। এমন পরিস্থিতিতে থানা পুলিশের সঙ্গে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে ছায়া তদন্ত করছে।

ঘটনা সম্পর্কে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, জোড়া খুনের ঘটনাটি বেশ রহস্যজনক। কারণ, একজন নিরীহ বৃদ্ধার সঙ্গে শিশু খুন এবং কিশোরীকে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। তবে এই ঘটনায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত হালিমা বেগম সুস্থ হওয়ার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তখন তার কাছ থেকে হয়তো চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যেতে পারে।

পুলিশ সুপার আরো জানান, তারপরও আরো কিছু মোটিভ সামনে নিয়ে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। যাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলেও জানান তিনি। সেই পর্যন্ত গণমাধ্যমকর্মীদের অপেক্ষা করার জন্য বলেন পুলিশ সুপার।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে