চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতায় সাধারণ মানুষের মনে কাজ করছিলো নানা জল্পনা-কল্পনা।
প্রশ্ন উঠেছিলো চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আদৌ প্রস্তাবিত স্থানে হবে কীনা তা নিয়ে। অনেকের ধারণা ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়টি সরিয়ে নেওয়া হবে অন্যত্র। তবে এবার হতে যাচ্ছে অপেক্ষার অবসান। প্রস্তাবিত স্থানে হবে বিশ্ববিদ্যালয় অবকাঠামো। তারই প্রেক্ষিতে চলছে প্রক্রিয়া। আশা করা হচ্ছে, অধিগ্রহণ কার্যক্রম শেষ হবে ২০২৪ সালের মধ্যেই।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করা না গেলেও চালু আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম।
চাঁদপুর-কুমিল্লা সড়কের খলিসাডুলি এলাকায় দুটি ভবন ভাড়া নিয়ে চলমান আছে বিদ্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রম।
ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অধ্যয়নরত আছে তিনটি শাখায় ২৮২ জন শিক্ষার্থী। নিজস্ব অবকাঠামো না থাকায় ছাত্র-ছাত্রীরা বঞ্চিত হচ্ছে নানা রকম সুযোগ-সুবিধা থেকে। তারপরও শিক্ষকদের পরিশ্রমে এবং শিক্ষার্থীদের চেষ্টায় এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়েল পাঠদান।
ইতিমধ্যে কয়েকটি ইভেন্টে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রীরা রেখেছে তাদের মেধার স্বাক্ষর। কাছাকাছি সময়ে অনুমোদন পাওয়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে তৈরি করে নিয়েছে নিজেদের শক্ত অবস্থান। সীমাবদ্ধতার মাঝেও শিক্ষকবৃন্দ চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রমটি এগিয়ে নিতে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সাথে আলাপকালে তারা জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস থাকলে তাদের যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ভবনে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার কারণে সেই ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই ক্যান্টিন ও আবাসিক ব্যবস্থা। ক্লাসের বিরতিতে মানসিক ক্লান্তি দূর করতে নেই প্রাকৃতিক পরিবেশ। নির্ধারিত একটি স্থানেই চলছে শ্রেণি কার্যক্রম। সকাল বেলা বাসা থেকে খাবার খেয়ে পুনরায় ক্লাস শেষে বিকেলে বাসায় ফিরে খাবার খেতে হয়। মাঝে এখানে খাবারের কোন ব্যবস্থা নেই। স্থান সংকটের কারণে পড়াশোনায় যে ধরনের সরঞ্জাম থাকার কথা তা পর্যাপ্ত পরিমাণে নেই।
তবে পড়াশোনা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত, শিক্ষকরা তাদের যথেষ্ট সহযোগিতা করছে পড়াশোনায়। পিছিয়ে পড়লে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে অতিরিক্ত ক্লাসের। শিক্ষকবৃন্দ তাদের মানসিক সাহস জোগাড় করছেন ভালো ফলাফল আনার জন্য। সংকটের মাঝেও যথাসাধ্য চেষ্টা আছে শিক্ষকদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের দিনগুলোতে ভালো ফলাফল অর্জনে।
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো এবং শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাছিম আখতার বলেন, বাংলাদেশের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর প্রথমে একাডেমিক ভবন থাকে না। উদাহরণস্বরূপ যেমন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আজকে বিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়টি বড় কুটিতে থাকা যে রাজভবন ছিল ওই ভবনে ৬জন স্টুডেন্ট নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেছিল। আমরা সে তুলনায় ভালো আছি। একাডেমিক ভবন এবং জায়গা দুটোই হবে। সেটা সময়ের ব্যাপার। এটা প্রক্রিয়া চলমান। আমরা এ বিষয়ে আন্তরিক। বাকিটা নির্ভর করবে সরকারি তৎপরতার উপর।
তিনি আরো বলেন, ক্যাম্পাস ছাড়া একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মূল যে চালিকাশক্তি তা হচ্ছে শিক্ষক এবং সঠিক সময়ে ক্লাস নেওয়া সাথে ল্যাবগুলো সঠিক ব্যবহার। এ বিষয়ে আমাদের আন্তরিকতার অভাব নেই। আমরা এক সেমিস্টার এ নিয়ম মেনে ৩৯ টা ক্লাস করি। সাবজেক্টের সাথে যতগুলো ল্যাব হওয়া প্রয়োজন তা আমরা পরিপূর্ণ করি।
যাযাদি/ এসএম