ঈদুল আজহার নামাজ শেষে মুসল্লীর গরুর আগে সভাপতির গরু জবাই না দেয়ায় ইমামকে লাঞ্চিত করে ওই মসজিদ থেকে বিদায় করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বায়তুল নুর জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি কফিলউদ্দিনের বিরুদ্ধে। ঈদের দিনে এমন ঘটনায় মর্মাহত হয়েছেন ওই সমাজের মুসল্লীরা। সোমবার সকালের দিকে এমন ঘটনা ঘটেছে গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার ভাংনাহাটি গ্রামে। পরে বিকেলের দিকে ওই ইমাম মসজিদ ছেড়ে চলে যায়।
মসজিদের ইমাম, মুসল্লী ও স্থানীয় সুত্র জানায়, ৬ হাজার টাকা মাসিক বেতনে ২ মাস আগে শ্রীপুর পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড ভাংনাহাটি মধ্যপাড়া বায়তুল নুর জামে মসজিদের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব নেন আবু বকর সিদ্দিক। সোমবার ঈদের নামাজের পরপরই সকাল ১০টায় ওই মসজিদের মাঠ ও এর আশপাশে কোরবানির পশু জবাই করার প্রস্তুতি চলছিল। এসময় ইদ্রিস নামে এক মুসল্লীর কোরবানির গরু মাঠের পাশেই শুয়ানো হলে ইমামকে ওই গরু জবাই করার অনুরোধ করা হয়৷ একই সময়ে ওই মসজিদের সভাপতি কফিল উদ্দিনের কোরবানির গরু জবাইয়ের জন্য প্রস্তুত করা হয়। এসময় ইমামকে ডাক দিলে সঙ্গে সঙ্গেই ইমাম হাজির হলেও ইদ্রিসের গরু আগে জবাই করতে কেনো গেলেন তার কারন জানতে চায় সভাপতি। একপর্যায়ে উত্তেজিত হন এবং ইমামকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। পরে ইমামকে ওই গরু জবাই করতে না দিয়ে নিজেরাই জবাই করেন। এসময় ইমাম স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে বিষয়টি জানিয়ে মসজিদে ফিরে আসেন। এরই জেরে আসরের নামাজ শেষে ইমামকে লাঞ্চিত করে বিদায় করে দেন সভাপতি।
সুত্র আরও জানায়, ওই মসজিদে গনগন ইমাম পাল্টে যায়। গত ২ মাস আগেও এক ইমাম চলে গেছে। এর আগেও কয়েক ইমাম বিদায় হয়। সভাপতির অযাচিত ও অশোভন খবরদারিতে অতিষ্ঠ হয়েই ইমাম চলে যায় বলেও জানান তারা।
এ বিষয়ে মসজিদ পরিচালনা কমিটির কোষাধ্যক্ষ খোকন মিয়া বলেন,' দুজনেই উত্তেজিত ছিল। বিষয়টি ঠিক হয়নি।' এরআগে ইমাম কেনো গেলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিলাদ নিয়ে আগের ইমাম গেছে। এর আগের জন অনত্র চাকরি হয়েছে তাই গেছে। ইমামদেরও গরম কম থাকা ভালো।'
সভাপতির লাঞ্চনার শিকার ভাংনাহাটি মধ্যপাড়া বায়তুল নুর জামে মসজিদের ইমাম আবু বকর বলেন,' আমাকে গলা চেপে ধরেন সভাপতি। শ্রীপুরে কোথায় ইমামতি করি এটাও দেখে নেবেন বলে হুমকি দেওয়া হয়। আমি ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে জানিয়েছি। সভাপতি আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। মানসম্মানের ভয়ে চলে আসছি। '
বায়তুল নুর জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আল আমীন বলেন,'আমি ঘটনা শুনেছি। এমন ঘটনা সত্যিই দু:খজনক। তবে, খোঁজ নিয়ে পরে বিস্তারিত জানাতে পারবো।'
গলায় চেপে ধরার বিষয়টি অস্বীকার করে ভাংনাহাটি মধ্যপাড়া বায়তুল নুর জামে মসজিদের সভাপতি কফিল উদ্দিন বলেন,' এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছে। হুজুর চলে গেছে কেনো.এমন প্রশ্নের উত্তরে সভাপতি বলেন, 'উনি ছুটিতে গেছেন। আমি অসুস্থ। এ বিষয়ে আর কোনো কথা বলতে পারবো না।'
এ বিষয়ে শ্রীপুর পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান মন্ডল যায়যায়দিনকে বলেন, 'ইমাম আমার কাছে এসেছিল। ঈদের দিন উনার সাথে এমন আচরণ করা ঠিক হয়নি। কফিলউদ্দিন আগে থেকেই এমন। ওরা কারো সাথে ভালো আচরণ করতে পারেনা।'
যাযাদি/ এস