কথা ছিলো মঙ্গলবার (২-জুলাই) বরযাত্রী নিয়ে গোপালগঞ্জে যাবেন বিয়ে করতে এলেম দেওয়ান(২৫)। কিন্তু এরই মধ্যে বেঁধে গেলো বিপত্তি, অন্য মেয়ের সাথে প্রেমিকের বিয়ের খবর শুনে রবিবার (৩০-জুন) রাতে শরীয়তপুরের জাজিরার বড় গোপালপুর ইউনিয়নের দেওয়ান কান্দির রাজ্জাক দেওয়ানের বাড়িতে এসে হাজির হলেন বরের প্রেমিকা রোজিনা আক্তার(২৫)।
সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভুক্তভোগী তরুণী রোজিনা আক্তার বিয়ের দাবীতে রাজ্জাক দেওয়ানের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন। আশেপাশের লোকজন এসে জড়ো হয়েছেন রাজ্জাক দেওয়ানের বাড়িতে। রবিবার সকালে ভুক্তভোগী রোজিনা আক্তার জাজিরা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করার ফলে, এরইমধ্যে ঘটনা তদন্তে এসেছেন জাজিরা থানা পুলিশের সদস্যরা।
পার্শ্ববর্তী শিবচরের ভান্ডারি কান্দি থেকে আগত ভুক্তভোগী রোজিনা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, আত্মীয়তা থেকে প্রেম হওয়ায় প্রায় দশ বছর যাবৎ সম্পর্কে রয়েছেন তারা। ঢাকার এক আত্মীয়ের বাসায় সেখানকার এক কাজীর মাধ্যমে বিয়েও করেছেন তারা, তবে কাবীননামা দেয়া হয়নি তাকে। ঢাকার বিভিন্ন হোটেলে একসাথে স্বামী-স্ত্রীর মতোই রাত কাটিয়েছেন বহুবার, গড়েছেন শারীরিক সম্পর্কও। চাকুরী করে প্রায় ৮-১০ লক্ষ টাকাও দিয়েছেন এলেম দেওয়ানকে।
এসময় রোজিনা আক্তারকে আটকে রাখার হুমকি-ধমকি দেয়ার পাশাপাশি জোরপূর্বক গাড়িতে উঠাতে গিয়ে ধস্তাধস্তি ও মারধর করারও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী তরুণী। মারধরের ফলে আহতও হয়েছেন রোজিনা আক্তার। পরে চিকিৎসা নেয়ার পাশাপাশি রবিবার জাজিরা থানায় অভিযোগ দিয়ে পূণরায় আবার ঐ বাড়িতে যান রোজিনা আক্তার।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য অভিযুক্ত এলেম দেওয়ানকে পাওয়া না গেলেও তার বাবা রাজ্জাক দেওয়ানের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে কথা বলা শুরু করলেও একটি ফোনকল আসার পরে চেয়ারম্যান লিটু সরদার তাকে যেতে বলেছেন জানিয়ে তিনি সেখান থেকে চলে যান, পরে আর তাকে পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অভিযুক্ত এলেম দেওয়ানের এক প্রতিবেশী জানান, মেয়েটির সাথে এলেম দেওয়ানের সম্পর্কের বিষয়ে এখানকার অনেকেই জানে। এলেম দেওয়ান যেখানে চাকুরী করে সেখানে চাকুরী নেয়ার সময় বিবাহিত দেখানো লাগবে বলে এই মেয়েটিকেই এলেম দেওয়ানের স্ত্রী হিসেবে দেখিয়ে চাকুরী নিয়েছে বলে আমরা জানি। তবে এখন তারা এসব অস্বীকার করে অন্যত্র বিয়ের আয়োজন করেছে।
বিষয়টি নিয়ে বড় গোপালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান লিটু সরদারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জোর-জবরদস্তি ও মারধর সংক্রন্তে মেয়েটির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি মেয়েটিকে প্রশাসনের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। পাশাপাশি আত্মীয়তার সম্পর্ক থাকায় বিষয়টি সমাধানের জন্য সোমবার সকালে তার গার্জিয়ানদের নিয়ে আমার পরিষদে আসার জন্য বলেছিলাম, কিন্তু তারা কেউ আর আসেনি।
বিষয়টি নিয়ে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান জানান, ভুক্তভোগী রোজিনা আক্তার আমাদের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। আমরা অভিযোগটি তদন্ত করে দেখছি, অভিযোগ প্রমাণ হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
যাযাদি/ এস