ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে শ্রীমঙ্গল। কনকনে ঠান্ডা আর হিমেল হাওয়ায় জবুথবু এ উপজেলার মানুষ। দিনের তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে, সুর্যের দেখা নেই। সারাদিনে দু এক ঘন্টা দেখা মিলছে সুর্যের। এতে কষ্টে আছেন খেটে খাওয়া দীনমজুর আর চা বাগান এলাকার মানুষ।
শুকবার ১৩ (ডিসেম্বর) রাতে শ্রীমঙ্গলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে, সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এছাড়া বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দু দিন মঙ্গলবার ও বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক মোঃ আনিসুর রহমান তাপমাত্রা নিম্নমুখী হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে দৈনিক যায়যায়দিনকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় শ্রীমঙ্গলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সকাল ৬টায় রেকর্ড করা হয়েছিল ১১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।’
তিনি আরো জানান, তাপমাত্রা কমার পাশাপাশি প্রচুর কুয়াশা রয়েছে। চলতি মাসে তাপমাত্রা আরো নামবে। সেইসাথে শীতের মাত্রাও বাড়বে।
মঙ্গলবার থেকে সারাদিন সূর্যের দেখা মেলেনি। শীতের তীব্রতার কারণে খেটে খাওয়া মানুষগুলো পড়েছে বিপাকে। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা। এদিকে আবহাওয়া অফিসের পর্যবেকক্ষক আনিসুর রহমান বলেন, উপজেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এ উপজেলা চা বাগান পাহাড় ও হাওরের অনেকটা কাছাকাছি হওয়ায় তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি ঘন কুয়াশা এবং হিমেল শীতল বাতাসের প্রবাহ শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
অটোরিক্সা (টমটম) চালক শামছুল বলেন, এই ঠান্ডায় কোনো লোকজন নেই, লোকজন এখন রিক্সায় উঠতে চায় না। তাই টমটম নিয়ে বসে আছি। রাত হলেই কোন লোকজন থাকে না। এতে আমাদেও আয় রোজগার কমে গেছে।
কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন, ঠান্ডায় কাজকাম করা যায় না। হাত গুটিয়ে আসে। খুবই কষ্টের মধ্যে আছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন জানান, গত কয়েক দিন ধরে শ্রীমঙ্গলে জেঁকে বসেছে কনকনে শীত ও ঘন কুয়াশা। আর শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও অ্যাজমাজনিত রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশী। এজন্য তাদের খেয়াল রাখতে হবে যাতে কোনো প্রকার ঠান্ডা না লাগে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও অ্যাজমাজনিত রোগে ১৫ জন শিশু ও বৃদ্ধ ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইসলাম উদ্দিন দৈনিক যায়যায়দিনকে বলেন, শীতার্ত ও ছিন্নমূল মানুষের জন্য আনুমানিক কয়েক’শ কম্বল বিতরণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে জেলা প্রশাসকের সাথে আলোচনা শেষে উপজেলায় এরই মধ্যে বিতরণ শুরু হবে বলে জানান তিনি।
যাযাদি/ এস