ফেনীর পরশুরামে মুহুরি নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অপরাধে আওয়ামী লীগ নেতা মিরু চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে এবং সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের কর্মকর্তা ও নাগরিক কমিটির সংগঠক ইমাম হোসেন সজীবসহ ৩২জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৩০/৪০ জনের বিরুদ্ধে পরশুরাম থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পরশুরাম পৌর ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. ইয়াছিন বাদী হয়ে সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাতে মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ (সংশোধিত) ৪/৫/১১/১৫ ধারায় এই মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজহারে উল্ল্যেখ করা হয়েছে মুহুরী নদীর বিলোনীয়া খেয়াঘাটের ১০০ গজ দক্ষিণ হতে বাউরখুমা মৌজার দক্ষিণ সীমানা পর্যন্ত মুহুরি নদীর বালুমহাল (১ম অংশ) ১৪৩০ বাংলা সনে পূর্ণ মেয়াদে শাপলা টেডার্সের স্বর্তাধিকারী মিরু চৌধুরীর নামে ইজারা দেওয়া হয়েছিল। ইজারাদারদেরকে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে পরিবেশগত ও অবস্থানগত ছাড়পত্র জমা দিবেন এই শর্তে মিরু চৌধুরীকে ইজারা চুক্তি সম্পাদন করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে মিরু চৌধুরী ছাড়পত্র জমা না দেয়ায় তাকে উক্ত বালুমহালের কার্যাদেশ ও দখল প্রদান দেয়নি জেলা প্রশাসক।
এরপর ১৪৩২ বাংলা সনে ইজারার লক্ষ্যে দরপত্র আহবান করা হলেও অদ্যাবদি চুড়ান্ত কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়নি। ১৪৩১ বাংলা সনের শুরু হতে অদ্যাবদি উক্ত বালুমহাল ইজারা বিহীন অবস্থায় আছে।
বালু মহালের কার্যাদেশ ও দখল প্রদান না করা সত্ত্বেও আইন অমান্য করে মিরু চৌধুরী ইমাম হোসেন সজিবের সাথে একটি চুক্তিপত্রের মাধ্যমে বালুমহাল সাবলীজ প্রদান করেন, যা সম্পূর্ণ বেআইনি।
এরপর সজিবের নেতৃত্বে চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি থেকে ২৫ এপ্রিল পযন্ত মুহুরি নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বৈআইনি ভাবে দুই কোটি পচিশ লাখ টাকার নয় লাখ ঘনফুট বালু অবৈধ ভাবে উত্তোলন করে নদীর উভয় পাড়ে বিক্রির উদ্দেশ্যে স্তুপ করে রাখে।
এজহারে উল্ল্যেখ করা হয়েছে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অনিয়ন্ত্রীত ভাবে বালু উত্তোলনের কারণে নদীর তলদেশ থেকে মাটি সরে গিয়ে নদীর পাড় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে এবং নদীর পাড়ের জমি ও বসত ঘর ভাংগনের আশংকা দেখা দিয়েছে।
আসামীরা হলেন- আওয়ামী লীগ নেতা মীর আহমেদ চৌধুরী (৬০), সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্সের কর্মকর্তা ও মিশন হেলফ ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোঃ ইমাম হোসেন সজীব (৩৫), হাবিব উল্যা (৫০), পিংকু ভূঞা (৩৮), মোঃ হারুন ভূঞা (৩৫), ছায়দুল হক হাজারী (৩৫), আলী হোসেন (৪০), আবদুল মুনাফ (৪৮), আবদুল কাদের (৩৭) আবদুস সামাদ (৩৪), মোঃ মোস্তফা আবদুল হামিদ (৩৩), মোঃ রিপন (৪০), মোঃ এমরান (৪২), স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনসুর (২৮), মির্জানগর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য মোঃ ফারুক (২৭), মোঃ শিশু (৩৮), মির্জানগর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক মোঃ শাহজালাল (৩৩), মোঃ ছিদ্দিক (৩৫), মোঃ আলম (২৯), মোহাম্মদ বাবুল (২৯), মনছুর আলী (৫০), মাহবুল হক (৫১), উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক বাহার সর্দার (৪৫), বাবুল মিয়া (৩৯), আবদুর রহিম (৪০), হারেছ মিয়া (৩৮), জাহিদুল করিম (৩৯), মোহাম্মদ বাবু (২৫), মোহাম্মদ কাইয়ুম (৩৬), নুরুন্নবী (হোনা মিয়া) (৪৫), আমির হোসেন (৪২), জাকির হোসেন (৪০)।
পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো, নুরুল হাকিম মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
যাযাদি/ এসএম