লালমনিরহাট জেলার চার উপজেলার প্রায় ১৯ লাখ মানুষ রেল সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ২০০৪ সালে লালমনি এক্সপ্রেস উদ্বোধনের পর থেকে লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকায় চলাচল করছে ট্রেনটি। এরপর গত বছরের ১২ মার্চ বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেন চালু হয়। প্রথম দিনে ট্রেনটি পাটগ্রামের বুড়িমারী রেলস্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে।
তথ্যমতে, লালমনিরহাট জেলাটি ভৌগলিকভাবে লম্বা। লালমনিরহাট জেলা সদর থেকে উত্তরে রয়েছে আদিতমারী উপজেলা। এরপর কালীগঞ্জ উপজেলা, এ উপজেলার পরেই রয়েছে হাতীবান্ধা উপজেলা। আর সবশেষে অবস্থিত পাটগ্রাম উপজেলা।এই চার উপজেলার বাসিন্দারা কাছের বা নিজেদের উপজেলা থেকে ট্রেন দুটিতে উঠতে পারছেন না। ফলে রাজধানীসহ বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। এ নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে একাধিক স্মারকলিপি জমা দেওয়া হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।
এসব উপজেলার মানুষের জন্য রেল সুবিধা দেওয়া না হলে বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
সম্প্রতি লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে সরাসরি বুড়িমারী টু ঢাকা আন্তনগর ট্রেন বাস্তবায়ন আন্দোলন পরিষদ।
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম অবস্থিত বুড়িমারী স্থলবন্দর। বিভিন্ন পণ্য এ স্থলবন্দর দিয়ে যেমন আমদানি রপ্তানি হয়ে থাকে তেমনি প্রতিদিন শতাধিক যাত্রী ভারত, নেপাল, ভুটান যাতায়াত করে থাকেন। কিন্তু বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে সরাসরি কোনো আন্তনগর ট্রেন না থাকায় রেলসেবা থেকে প্রায় বঞ্চিত থাকছেন দেশি-বিদেশি যাত্রীরা।
স্থানীয়রা বলছেন, সরাসরি ট্রেন চলাচলে বুড়িমারী রেলস্টেশনে ওয়াস ফিডসহ প্রয়োজনীয় কিছু অবকাঠামো তৈরিতে তিন মাসের সময় নিয়েছিল রেলওয়ের কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতির পর প্রায় ছয় মাসে কাজ শেষ করা হয়। এরপর বুড়িমারী এক্সপ্রেস চালুর বিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষ কয়েকবার প্রজ্ঞাপন জারি করেন। রেলের সময়সূচিতেও পরিবর্তন এনে বুড়িমারী থেকে ট্রেন পরিচালনার নতুন সূচি তৈরি করা হয়। কিন্তু ট্রেনটি বুড়িমারী থেকে থেকে চলাচল শুরু করেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রেল কর্মচারী বলেন, বুড়িমারী এক্সপ্রেস খাতা-কলমে বুড়িমারী থেকেই চলাচল করছে, কিন্তু বাস্তবতায় তা করছে না। বুড়িমারী টু ঢাকা আন্তনগর ট্রেন বাস্তবায়ন আন্দোলন পরিষদের সমন্বয়ক ফারুক হোসেন নিশাত বলেন, রাজধানীতে যাতায়াতে দুটি আন্তনগর ট্রেন চলে লালমনিরহাট সদর থেকে। কিন্তু বাকি চার উপজেলার মানুষ বড় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
স্কুলশিক্ষক আবদুর রাজ্জাক রুবেল বলেন, লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার মধ্যে চার উপজেলার মানুষজনসহ বুড়িমারী স্থলবন্দরের যাত্রীরা অন্তনগর ট্রেনে সরাসরি ঢাকা যেতে পারছেন না। আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক শামসুল আলম খান বুলেট বলেন, আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হলে তিস্তা ব্যারেজ ও লালমনিরহাট জেলা রেল বিভাগ ঘেরাও করা হবে।