ঈশ্বরদীর মাঠ জুড়ে ঝলমল করছে পাকা সোনালী ধান। সেই ধান কেটে ঘরে তুলতে দ্বিগুন মজুরীতেও মিলছে না শ্রমিক।
ফলশ্রুতিতে মাঠের সোনালী ফসল রেখে বড় ধরনের শ্রমিক সংকটে পরেছেন অত্রাঞ্চলের ধান চাষীরা।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এ বছর অত্রাঞ্চলে চলতি মৌসুমে বোরো ধানের মোট চাষের লক্ষমাত্রা ছিল ২৬৩৫ (দুই হাজার ছয়শত পঁয়ত্রিশ) হেক্টর জমিতে। কিন্তু তা বৃদ্ধি পেয়ে মোট চাষ হয়েছে ২৬৬৫ (দুই হাজার ছয়শত পঁয়শট্টি) হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ মাত্রার চেয়ে প্রায় ৩০ (ত্রিশ) হেক্টর বেশী জমিতে ধান চাষ হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১২৯৯৩ ( বারো হাজার নয়শত তিরানব্বই) মেট্রিক টন।
স্থানীয় একাধিক কৃষক বলছেন, ঈশ্বরদী অঞ্চলের চাষাবাদ করতে যে পরিমান শ্রমিক বা লোকবল প্রয়োজন হয় তার প্রায় অর্ধেক পূরণ করে থাকেন পার্শ্ববর্তী জেলা নাটোর। কেননা প্রতিদিন সকালে ঈশ্বরদীর সীমান্তবর্তী এলাকা নাটোরের লালপুর থেকে কয়েক হাজার শ্রমিক এসে স্থানীয়দের লোকবলের চাহিদা পূরণ করে থাকেন। কিন্তু এবার একই সময়ে ধানের সাথে লিচু এবং অন্যান্য সবজির ক্ষেতে শ্রমিকের চাহিদা থাকার কারনে ব্যাপক শ্রমিক ঘাটতি দেখা দিয়েছে অত্রাঞ্চলে। ফলস্রুতিতে দ্বিগুন মজুরী দিয়েও মিলছে না শ্রমিক।
ধানচাষী মো: আজিবার রহমান যায়যায়দিনকে বলেন, এবারে ধান কাটা শ্রমিক সংকটের কারনে প্রতিবিঘা ধান কাটা এবং মাড়াই করতে খরচ গুনতে হচ্ছে অন্যান্য বারের তুলনায় দ্বিগুন। কোন কোন ক্ষেত্রে দ্বিগুন টাকা দিলেও মিলছে না শ্রমিক। ফলে মাঠেই ঝড় বৃষ্টিতে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সোনালী ফসল ধানের।
মোখলেসুর রহমান স্বপন বিশ্বাস বলেন, মাঠে ধান পেকে ঝড়ে পড়ার অবস্থা হলেও কাজের লোকের কোন সিরিয়াল নেই! ৭ দিন (সাত দিন) আগে থেকে তাদের সিরিয়াল দিয়ে রাখলেও এবার তাদেরকে ধরা যাচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ফসল মাঠেই পড়ে থাকবে। আমরা ফসল সুস্থ্য ভাবে ঘরে তুলতে পারব না। ঝড় বৃষ্টিতেই সব শেষ হয়ে যাবে। তার উপর বাড়তি খরচ তো আছেই।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতারানী সরকার যায়যায়দিনকে জানান, এবারের বোরো মৌসুমে ঈশ্বরদী উপজেলায় লক্ষমাত্রর চেয়ে বেশী ধানচাষ হয়েছে। মোট ধান চাষ হয়েছে ২৬৬৫ হেক্টর জমিতে। যা থেকে মোট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে ১২৯৯৩ মেট্টিকটন।
যাযাদি/আর