সড়কের পিচ উঠে গেছে বছর পাঁচেক আগে। খানাখন্দ হয়ে খোয়া-বালুও আর নেই। বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের দুই ধার দেবে যাওয়ায় যান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। অনেক সময় সড়কেই যান উল্টে পড়ে। ঝুঁকিপূর্ণ এ সড়কে কোন রোগী আসতে চাননা। ৫ কিলোমিটার ঘুরে আসতে হয়। অথচ এ রাস্তাটির দৈর্ঘ মাত্র ৯০০ মিটিার।
এটি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ষোলটাকা ইউনিয়নের হুদাপাড়া কুঞ্জনগরের সড়কের চিত্র। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, গত ১৫ বছর এই সড়কে কোনো সংস্কারকাজ হয়নি। ওই পথে চলাচলকারী ব্যক্তিদের প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই অঞ্চলে প্রচুর অর্থকরী ফসল ও খাদ্য শস্য উৎপাদন হয়। সড়কটিতে চলাচল করে দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা ছাড়াও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। সড়কের বেশির ভাগ জায়গাজুড়ে খানাখন্দ।
কুঞ্জনগর মিকুশিস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসি জানান, এ সড়ক দিয়ে শিমুলতলা, সহড়াবাড়িয়া, হুদাপাড়া, কুঞ্জনগর মিনাপাড়া ঝোরপাড়া ও ভোলাডাঙ্গাসহ অন্ততঃ ১০ গ্রামের মানুষ চলাচল করেন। বিদ্যালয়ে যাওয়া আসাসহ নানা ধরনের অসুবিধা হয়। মাঝে মধ্যে বিভিন্ন প্রকার যানবাহন উল্টে লোকজন আহত হন আবার ফসলের গাড়ি উল্টে গিয়ে ফসল নষ্ট হয়। অনেক সময় রোগী বহনের জন্য অ্যাম্বুলেন্স বা কোন গাড়ি ওই পথে যেতে চায় না। রোগীরা ঝাকুনি খাবার ভয়ে ওই রাস্তায় আসতে চান না।
হুদাপাড়ার ব্যবসায়ি সিদ্দিক জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে ঠিকাদার আইয়ুব আলী যেনতেন ভাবে রাস্তাটি নির্মান করেন। কিছুদিন পরই রাস্তাটি নষ্ট হতে থাকে। পিচ উঠে যাবার পর খোয়া ও বালু উঠে গর্তের সৃষ্টি হয়। আবার রাস্তার দুই পাশে কয়েকটি পুকুর পাড় ভেঙে বিলিন হয়ে যায়। চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। তাছাড়া ইটভাটায় মাটি বহনকারী গাড়ি ও পাথর বহনকারী গাড়ি চলাচলের কারনে রাস্তাটি সম্পুর্ণ অকেজো হয়ে পড়েছে।
কৃষক ইব্রাহিম জানান, কৃষিপণ্য শহরের হাটবাজারে নিয়ে বিক্রি করতে হয়। সড়ক ভাঙাচোরা হওয়ায় গাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় আতঙ্কে থাকতে হয় কখন গাড়ি ভেঙে যায়। ইজিবাইকের চালক পিন্টু ইসলাম জানান, সড়কে চলতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়েছে কয়েকবার। কখন দুর্ঘটনা ঘটে, আতঙ্কে থাকতে হয়। রাস্তাটি দ্রæত মেরামত প্রয়োজন।’
ভ্যানচালক ফয়সাল বলেন, পাকা সড়ক বলতে কিছু নাই। ভাঙাচোরার কারণে ভাড়ায় যেতে ইচ্ছা হয় না। এমনকি বেশি ভাড়া দিলেও যেতে মন চায় না। ভাঙা জায়গায় পড়ে ভ্যানের ক্ষতি হয়। এতে বাড়তি টাকা খরচ হয়। অনেক রাস্তার মেরামতকাজ হয়, কিন্তু এই রাস্তার কাজ কখনো হয় না।
ষোলটাকা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান-২ সুজা উদ্দীন বলেন, ভাঙাচোরা এই সড়কটি নিয়ে এলাকার মানুষের কাছে নানা কথা শুনতে হয়। বিভিন্ন সময় প্রশাসনের কাছে সড়ক সংস্কারের জন্য আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। এবার শুনছি, সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল আহমেদ বলেন, সড়কটি বেহাল দেখে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। এবার রাস্তাটি সংস্কার করা যায় কিনা তা চেষ্টা করা হচ্ছে।
যাযাদি/ এসএম