নাটোরের লালপুরে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) সেচ প্রকল্পের সুফলে বদলে দিয়েছে কৃষকের ভাগ্য ।
শুষ্ক মৌসুমে অল্প খরচে সেচ সুবিধা পাওয়ায় কৃষকেরা এক ফসলি জমিকে তিন ফসলি জমিতে রূপান্তর করছেন।
কৃষকরা বলছেন, নিরবচ্ছিন্ন সেচ সুবিধা পাওয়ায় এবছর বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। পানির প্রাপ্যতা ও সময়মতো সেচ সরবরাহের ফলে ধানের শীষ ভালো হয়েছে এবং রোগবালাই তুলনামূলকভাবে কম ছিল।
উপজেলার দিলালপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, আগে পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় ধানের উৎপাদন অনেক কম ছিল। বিগত বছরে যেখানে ৫/৬ মণ ধান হয়েছিল, এবার সেখানে ২৫/২৬ মণ ধান হবে।
আরেক কৃষক আব্দুল বারী জানান, আগে যখন ব্যক্তিগত ডিপ টিউবওয়েল বা অন্য উৎসে সেচ দিতে হতো, তখন খরচ অনেক বেশি পড়তো। এবার বিএডিসির প্রকল্পে অল্প খরচে ভালোভাবে ধান চাষ করতে পেরেছি। অকেজো ১৪ টি গভীর নলকূপ চালুসহ সেচ সুবিধা আরো বাড়ানো হলে কৃষকরা আরো উপকৃত হবে।
উপজেলা কৃষি অফিস ও বিএডিসি অফিস জানায়, লালপুর উপজেলায় বিএডিসি ও বরেদ্র বহুমুখী উন্নয়ন কতৃপক্ষের ২৭ টি ও ব্যক্তি মালিকানায় ১৯৫ টি বিদ্যুত চালিত পাম্পের মাধ্যমে জমিতে সেচ দেওয়া হচ্ছে। এতে এবছর বোরো ধানের লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৫৫ হেক্টর জমিতে বোর ধান চাষের লক্ষমাত্রা থাকলেও ১ হাজার ৬৫ হেক্টর জমিতে বোর ধানের চাষ হয়েছে।
এ থেকে ৬ হাজার ৩৩০ মেক্ট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।
বড়াইগ্রাম জোনের সহকারী প্রকৌশলী জিয়াউল হক বলেন, বিএডিসির সেচ সুবিধা কৃষকদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। সরকারিভাবে নিয়মিত মনিটরিং এবং পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে, যাতে কৃষকরা আরও ভালো ফলন পান।
সরকার কৃষি ও কৃষকদের উন্নয়নে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করছে। আগামী মৌসুমে আরও নতুন এলাকা এই প্রকল্পের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় বলেন, সেচ সুবিধার পাশাপাশি কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়েছেন।
ফলে সঠিক সময়ে সার ও কীটনাশক প্রয়োগসহ আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতির ব্যবহার কৃষকদের ফলন বাড়াতে সহায়তা করেছে।