গাজীপুরের শ্রীপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মারামারির ঘটনায় হযরত আলী নামে এক বৃদ্ধের হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় দুই পক্ষের চারজন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৩ মে) সকালের দিকে উপজেলার বরমী ইউনিয়নের তাঁতীসূতা (দক্ষিণ পাড়া) গ্রামের শেখবাড়ী সংলগ্ন ওই মারামারির ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলো তাঁতীসূতা (দক্ষিন পাড়া) গ্রামের মৃত হাবিজ উদ্দিনের ছেলে হযরত আলী (৬৫)। এ ঘটনায় তাঁর বাম হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তিনি বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
অন্যপক্ষের আহতরা হলেন, একই গ্রামের মৃত রাম দুলাল বিশ্বাসের ছেলে পুলিশ কনস্টেবল অমৃত চন্দ্র বিশ্বাস (৫২), তার বড় ভাই অমূল্য চন্দ্র বিশ্বাস (৬২) এবং তার মেয়ে কলেজ শিক্ষার্থী সঙ্গীতা বিশ্বাস (১৭)। তারা গাজীপুরের শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ কনস্টেবল অমৃত চন্দ্র বিশ্বাস টাঙ্গাইলের নাগরপুর থানায় কর্মরত।
স্থানীয় সুত্র ও আহত হযরত আলীর ভাতিজা শাকিল আহমেদ বলেন, 'বন বিভাগের জমিতে ভোগদখল হিসেবে জেঠা হযরত আলী দীর্ঘদিন ধরেই চাষাবাদ করে খাচ্ছেন। এ নিয়ে বন বিভাগের আদালতে মামলা চলমান। কিন্তু প্রতিপক্ষ অমূল্য চন্দ্র বিশ্বাস গং ওই জমি তাদের বলে দাবী করতেছে। মঙ্গলবার সকালের অমূল্য চন্দ্র বিশ্বাস এবং তার ভাই পুলিশ কনস্টেবল অমৃত চন্দ্র বিশ্বাস বিরোধপূর্ণ জমিতে কাজ শুরু করে। এসময় কৃষক হযরত আলী তাদেরকে বাধা দিলে তর্কবিতর্ক হয়। একপর্যায়ে পুলিশ কনস্টেবল অমৃত চন্দ্র বিশ্বাসের হাতে থাকা দা দিয়ে হযরত আলীকে কোপ দেয়। এতে তাঁর হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ময়মনসিংহ ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
অমূল্য চন্দ্র বিশ্বাসের বড় ভাই প্রফুল্ল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আমার ছোট ভাই ওই জমিতে চাষ করতে গেলে কৃষক হযরত আলী ও তার স্বজনেরা তাকে মারধর শুরু করে। তার চিৎকার শুনে ছোট ভাই পুলিশ কনস্টেবল অমৃত চন্দ্র বিশ্বাসের ভাতিজি সঙ্গীতা বিশ্বাস ঘটনাস্থলে যায়। এক পর্যায়ে কৃষক হযরত আলীর সাথে মারামারি বাধে। এসময় আমাদের ৩জন আহত হয়। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে পাঠানো হয়।
শ্রীপুর রেঞ্জের সদর বিট কর্মকর্তা আলাল উদ্দীন জানান, 'বরমী ইউনিয়নের তাঁতিসূতার ওই জায়গা বন বিভাগের হওয়ায় আগেই ওই জমি নিয়ে আদালতে মামলা হয়েছে। এটা নিয়ে উনারা মারামারি করার কি আছে। গত বছর কিছু আকাশি চারা রোপণ করা হয়েছিল। এ বছরেও চারা রোপন করবো।'
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ সুদেব চক্রবর্তী বলেন, বাম হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন অবস্থায় হযরত আলী নামে একজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি জয়নাল আবেদীন মন্ডল বলেন,' আমি সাক্ষীর কাজে ঢাকায় আছি। মোবাইলে খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। সার্কেল এএসপিও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এখনও পর্যন্ত কোনো পক্ষই এ বিষয়ে অভিযোগ দেয়নি। ভুক্তভোগী পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। '
যাযাদি/ এসএম