গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র এস. এম. রবীন হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ, দায়িত্ব অবহেলা এবং দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) গাজীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ সেলিম মিয়াকে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ মার্চ কমিশনের প্রধান কার্যালয় থেকে কালীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র এস. এম. রবীন হোসেনের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয় গাজীপুর জেলা কার্যালয়কে। এরপর আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধান শুরু হয়। গত ২০ এপ্রিল অনুসন্ধান কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক মোঃ সেলিম মিয়া কালীগঞ্জ পৌরসভার কাছে সাবেক মেয়রের দায়িত্ব পালনের সময়কালীন বিভিন্ন নথিপত্র চেয়ে একটি চিঠি পাঠান।
চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের জন্য এস. এম. রবীন হোসেন মেয়রের দায়িত্ব পালনের সময়কালীন ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু, হাট—বাজার ইজারা, ভূমি উন্নয়ন কর, হোল্ডিং ট্যাক্স, নাগরিক ও জন্ম সনদ প্রদানসহ অন্যান্য খাত থেকে আয় সংক্রান্ত সকল হিসাব, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ক্যাশ বইসহ রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি এবং পৌরসভার বাজেট, ক্রয় সংক্রান্ত নথি, গৃহীত প্রকল্পের তালিকা ও টেন্ডার ডকুমেন্টসহ ব্যয় সংক্রান্ত সব রেকর্ডপত্র ৭ কার্যদিবসের মধ্যে জমা দেওয়ার অনুরোধ করা হলো।
চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে কালীগঞ্জ পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা শ্যামল কুমার দত্ত বলেন, “দুদকের চাহিদা অনুযায়ী নথিপত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তা কমিশনের কাছে পাঠানো হবে।”
দুদকের গাজীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা মোঃ সেলিম মিয়া বলেন, “কালীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু নথিপত্র চেয়ে পৌরসভায় চিঠি পাঠানো হয়েছে। প্রাপ্ত নথিপত্র পর্যালোচনা করে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।”
উল্লেখ্য: এস. এম. রবীন হোসেন কালীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি। ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে অংশ নিয়ে ১৩,৭৮৪ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ১৩ জুন নির্বাচন কমিশন তাকে মেয়র নিয়োগ দিয়ে গেজেট প্রকাশ করে এবং ১৬ জুন তিনি শপথ গ্রহণের মাধ্যমে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন।
এরপর প্রায় ৩ বছর ২ মাস ১ দিন দায়িত্ব পালনের পর ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট তাকে মেয়র পদ থেকে অপসারণ করা হয়।