বৈষম্যমূলক ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) বাতিল ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮ পুনর্বহালসহ বিভিন্ন দাবীতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) প্রধান কার্যালয় ঘেরাও এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ঢাকা সিটি ল্যান্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন(ডিসিএলওএ)। অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রাজউকের স্বেচ্ছাচারিতা ও প্ল্যান পাসে অনিয়ম অন্যতম।
মঙ্গলবার (২০ মে) সকাল সোয়া ৯টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকার মতিঝিল, দিলকুয়া এলাকায় রাজউকের প্রধান কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ওই কর্মসূচির আয়োজন করে ডিসিএলওএ।
কর্মসূচিতে ভূমি মালিক, প্রকৌশলীসহ আবাসন খাত সংশ্লিষ্ট কয়েক হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা অংশ নেন। রাজউকের ‘স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতি’র প্রতিবাদে এবং ড্যাপ ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালা সংশোধনের দাবিতে ওই সময় নানা স্লোগান দেওয়া হয়।
তথ্যমতে, ২০২২ সালের ২৪ অগাস্ট নতুন ড্যাপ (২০২২-২০৩৫) কার্যকরের গেজেট প্রকাশ করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
ওই গেজেট প্রকাশের পর থেকেই কিছু বিষয় সংশোধন করার জন্য আবাসন কোম্পানিসহ বিভিন্ন সংগঠণ সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিল।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের ১৬ জানুয়ারি ড্যাপ সংশোধন করে আরেকটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। ওই সংশোধিত ড্যাপে ভূমির ব্যবহার, সরকারি-বেসরকারি আবাসন, অপরিকল্পিত এলাকা, ব্লক-ভিত্তিক আবাসন, একত্রীভূত প্লটে ফ্লোর এরিয়া রেশি ও (ফার) সুবিধা বাড়ানো হয়।
ওই ড্যাপ সংশোধনের ফলে ভবনের প্রশস্ততা ও উচ্চতা বাড়ানোরও সুযোগও বাড়ে। এতে ভবন নির্মাণে সামনের সড়কের প্রশস্ততার ক্ষেত্রেও ছাড় দেওয়া হয়। তবে এতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি ডিসিএলওএ।
রাজউক ঘেড়াও ও অবস্থান কর্মসূচী চলাকালে প্রতিবাদ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা সিটি ল্যান্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. দেওয়ান এম এ সাজ্জাদ।
তার দাবী , নতুন ড্যাপের কারণে দুই লক্ষাধিক জমির মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্থ ওই জমির মালিকদের সংগঠণ ডিসিএলওএ এর পক্ষ থেকে এর আগেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বার বার যোগাযোগ ও অনুরোধ করেও কোন ফল পাওয়া যায়নি। তিনি অনতিবিলম্বে তাদের দাবী মেনে নিতে রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আহবান জানান।
আন্দোলনে অংশ নেয়া অপর একজনের দাবী, সর্বশেষ ঘোষিত ড্যাপে ভবনের উচ্চতা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রয়োজনীয় উচ্চ ভবনের পারমিশন না পাওয়ায় ক্ষতির মুখে পরছেন তারা।
আন্দোলনকারীদের দাবী,বর্তমানে চলমান ড্যাপ বাতিল করে অনতিবিলম্বে ২০০৮ সালের ড্যাপ পুনর্বহাল করা হোক। এটা করা হলে বিশেষ করে শহরের অপরিকল্পিত এলাকার বৈষম্ দূর হবে।
এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে রাজউকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শতে জানান, আন্দোলনের আয়োজকদের মূল দাবি আসলে ড্যাব বাতিল। কেননা, এর পেছনে আবাসন ব্যবসায়ীদের হাত রয়েছে।
তিনি আরো জানান, আন্দোলনকারীদের দাবী বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে রাজউকে মিটিং করা হয়েছে। যৌক্তিক দাবী পূরণে করণিয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দ্রুত ভালো কিছু সিদ্ধান্ত৷ হতে পারে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।