বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

 চাঁপাইনবাবগঞ্জে হোমিও কলেজের তদন্তে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
  ২০ মে ২০২৫, ১৯:৪৪
 চাঁপাইনবাবগঞ্জে হোমিও কলেজের তদন্তে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক
ছবি : যায়যায়দিন

চাঁপাইনবাবগঞ্জ মোহাম্মদ হোসেন হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ব্যাপক নিয়োগ বানিজ্য, জালিয়াতি, জমির ভুয়া দলিল তৈরি ও তা ব্যবহার করে কলেজের অনুমোদনের অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে তা তদন্ত শুরু করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ। এনিয়ে তদন্তকাজে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিদর্শনে যান স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের পরিচালক (অল্টারনেটিভ মেডিসিন) ডা. মো. গওসুল আজিম চৌধুরী।

সোমবার (১৯ মে) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের শান্তিমোড়স্থ মোহাম্মদ হোসেন হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে যায় তদন্ত দল। এসময় কলেজ ক্যাম্পাস ও অফিস ঘুরে দেখেন তারা। তবে এই তদন্ত নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই গেছে কলেজের শিক্ষক, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যসহ সংশ্লিষ্টদের। সরেজমিনে উপস্থিত হতে দেয়া হয়নি জেলায় কর্মরত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

1

৫ সদস্যের তদন্ত দলে আরও ছিলেন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব ফারুক আহাম্মদ খান, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা শিক্ষা কাউন্সিলের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ডা. মো. শহিদুল ইসলাম, নওগাঁ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. মো. আব্দুল্লাহ আল সাফায়েত শামীম, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা শিক্ষা কাউন্সিলের উপসচিব ও রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) স্বপন কুমার মন্ডল।

তদন্তে কলেজ পরিদর্শনের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ মোহাম্মদ হোসেন হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সভাপতি ও জামায়াত নেতা মো. নজরুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি ও নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আ.লীগ নেত্রী সুলতানা রাজিয়াসহ কলেজের অন্যান্য শিক্ষক ও কর্মচারীরা।

কলেজের নথিপত্র ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ০২ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদ হোসেন হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের গঠিত ০৬ সদস্যের পরিদর্শন কমিটি। পরিদর্শনের প্রেক্ষিতে গত ১৭ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করে পরিদর্শন কমিটি। প্রতিবেদনে যে জমির দানপত্র দলিল দেয়া হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভুয়া।

অভিযোগ রয়েছে, দলিলের বিপরীতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেজিষ্ট্রী অফিস গেলে সার্টিফাইড কপি দিতে পারছেন না এবং সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই জমির দলিল ১৯৭৬ সালে রেজিষ্ট্রেশন হয়। কিন্তু ১৯৮১ সাল পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হিসেবে ঘোষিত হয়নি। অনুসন্ধানে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করে, ভুয়া দলিলে কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ মোহাম্মদ হোসেন হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে নানরকম বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ডের পত্রের প্রেক্ষিতে দলিলটির সত্যতা পাওয়া যায়নি এবং সে অনুযায়ী এর উত্তর দেয়া হয়েছে বলো জানায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিস। এছাড়াও অভিযোগ উঠেছে, শিক্ষকসহ বিভিন্ন পদে প্রায় ২ কোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্য করেছেন সাবেক সভাপতি ও আ.লীগ নেত্রী সুলতানা রাজিয়া। নিয়োগ দেয়া হবে বলে অনেকের কাছে টাকা নেয়ার অভিযোগ নিয়োগ প্রত্যাশীদের।

তদন্তে এসে কলেজ পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের পরিচালক (অল্টারনেটিভ মেডিসিন) ডা. মো. গওসুল আজিম চৌধুরী কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। মুঠোফোনে তিনি জানান, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সেখানে পরিদর্শনে যায়। এসময় বাইরে রয়েছি, পরে কথা বলব বলে ফোন রেখে দেন তিনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ মোহাম্মদ হোসেন হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সভাপতি ও জামায়াত নেতা নজরুল ইসলাম জানান, কলেজের অনুমোদনের জন্য আবেদনের প্রেক্ষিতে একটি দল সরেজমিনে আসেন এবং কলেজের বিভিন্ন কার্যক্রম ঘুরে দেখেন। তাদের প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে অনুমোদনসহ অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ করবে মন্ত্রণালয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে