রোববার, ২৫ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জেলেদের দেয়া বাছুরের জন্য উৎকোচ আদায় করলেন আরেক জেলে!

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
  ২৪ মে ২০২৫, ২০:৪৬
জেলেদের দেয়া বাছুরের জন্য উৎকোচ আদায় করলেন আরেক জেলে!
ছবি : যায়যায়দিন

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সুফল ভোগীদের মধ্যে বাছুর বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠার প্রেক্ষিতে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিনকে বদলি করা হয়েছে।

এদিকে মৎস্য অফিস কর্তৃক প্রদত্ত বিতরণকৃত বাছুর যারা পেয়েছেন, তাদের নিকট থেকে ১৫ হাজার টাকা করে মৎস্য অফিসের পক্ষে উৎকোচ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে নির্মল মালো নামের জেলে সম্প্রদায়ের এক সদস্যের বিরুদ্ধে। অফিসে দেওয়ার কথা বলে তিনি জেলেদের নিকট থেকে ওই টাকা আদায় করেন বলে জানা গেছে। তবে মৎস্য কর্মকর্তা বাছুর বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

1

জানা যায়, মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে দেশীয় প্রজাতির মাছ এবং শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে উপজেলার ৭৫ জন সুফল ভোগীদের মধ্যে একটি করে বাছুর বিতরণ করা হয়। গত ১৪ মে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে এ বাছুর বিতরণ করা হয়। কিন্তু অধিকাংশ মৎস্যজীবীদেরই বাছুর পেতে ১৫ হাজার টাকা করে দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে।

বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরে বাছুর বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে গত ২২ মে বোয়ালমারী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিনকে মাগুরায় বদলি করা হয়। এদিকে মৎস্য অফিস কর্তৃক প্রদত্ত বিতরণকৃত বাছুর যারা পেয়েছেন, তাদের নিকট থেকে উৎকোচ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে নির্মল মালো নামের জেলে সম্প্রদায়ের এক সদস্যের বিরুদ্ধে। নির্মল মালো উপজেলা মৎস্য অফিসে দেওয়ার কথা বলে প্রত্যেকের নিকট থেকে বাছুর বাবদ ১৫ হাজার টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ।

তথ্যানুসন্ধানে দেখা যায়, বরাদ্দকৃত তালিকায় নাম থাকার পরেও গরু পাননি উপজেলার ময়না ইউনিয়নের কুটিবর্ণি গ্রামের কৃষ্ণ কুমার রাজবংশী। জাল টিপসই দিয়ে তার জন্য বরাদ্দকৃত গরু অন্য কেউ নিয়ে গেছে। কৃষ্ণ কুমার রাজবংশী জানান, পার্শ্ববর্তী বান্দুগ্রামের নির্মল মালো অফিসে দেওয়ার কথা বলে আমার নিকট বাছুর বাবদ ১৫ হাজার টাকা চেয়েছিল। আমি টাকা না দেওয়ায় অফিস আমার কাগজপত্র নিলেও শেষ পর্যন্ত আমাকে বাছুর না দিয়ে আমার চাচাতো ভাইকে দিয়েছে। চাচাতো ভাইয়ের নিকট থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়েছে নির্মল মালো।

ময়না ইউনিয়নের কুটিবর্ণি গ্রামের অয়ন রাজবংশী জানান, তিনি বাছুর পেয়েছেন। তবে নির্মল মালো অফিস বাবদ তার নিকট থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়েছেন।

একই গ্রামের সুজন রাজংশী জানান, কার্ডধারী হওয়া সত্বেও তিনি বাছুর পাননি। নির্মল টাকা নিয়ে বিপুল নামের একজনকে তার বাছুর দিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।

এ ব্যাপারে নির্মল মালোর বক্তব্যের জন্য মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে তার বান্দুগ্রামের বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। এলাকাবাসী জানান ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই নির্মল লাপাত্তা।

জানতে চাইলে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সরকার বলেন, গরু বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ সম্পর্কে পত্রিকা ও বিভিন্নভাবে জানতে পেরে বোয়ালমারী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনকে মাগুরায় বদলি করা হয়েছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে