রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার হোজা অনন্তকান্দী গ্রামের চাঞ্চল্যকর হাসিবুর হত্যা মামলার এজাহারনামীয় এক আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে এলিট ফোর্স র্যাব।
র্যাবের যৌথ অভিযানে রাজধানীর মিরপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাকে দুর্গাপুর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
রোববার (২৫ মে) থানায় হস্তান্তরের পর সোমবার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত আসামী হলেন, রেজাউল হক (৪৮) মামলার দুই নম্বর আসামী। তিনি হোজা অনন্তকান্দী গ্রামের মৃত বেরাজ মন্ডলের ছেলে।
পুলিশ জানায়, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে মামলার বাদী আবুল কাশেমের সঙ্গে একই গ্রামের বিবাদী আবু সালে বাবুদের সাথে দীর্ঘদিনের বিবাদ ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৪ মে সকালে জমি মাপাকে কেন্দ্র করে বিবাদীদের সাথে বাদীর কথা কাটাকাটি হয়।
একই দিন সন্ধ্যায় কথা কাটাকাটির জের ধরে বাদীর বসতবাড়ির সামনে পূর্বপরিকল্পিতভাবে বিবাদীগণ হাসুয়া, লোহার রড, বাঁশের লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র সহ সজ্জিত হয়ে বাদীর ছেলে হাসিবুরসহ আরো অনেকের উপর হামলা করে। বিবাদীগণ এলোপাথারি ভাবে বাদীর ছেলে, চাচাতো ভাই, ভাতিজা সহ অনেকের উপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। ভিকটিমের ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে বিবাদীগণ ঘটনাস্থল হতে চলে যায়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন আহতদের রক্তাক্ত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ভিকটিম হাসিবুরের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করেন। ওইদিন রাত সোয়া ১০টার দিকে ঘটিকায় কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিম হাসিবুরকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পরপরই এলাকায় থমথমে অবস্থার সৃষ্টি হয়। ঘটনাটি দেশব্যাপী প্রিন্ট, ইলেক্টনিক ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা আবুল কাশেম (৬৬) বাদী হয়ে দুর্গাপুর থানায় ১৮ জনকে এজাহারনামীয় ও ১৫/২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। উল্লেখিত মামলার প্রেক্ষিতে আসামীদেরকে গ্রেফতারের অভিযানে নামে র্যাব।
র্যাব-৫ জানায়, র্যাব-৫ সদর কোম্পানী রাজশাহী ও র্যাব-৪, মিরপুর ১ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল ২৬ মে রাত পৌনে ১টার দিকে রাজধানীর মিরপুর থানাধীন জোনাকী রোড সংলগ্ন আহমদনগর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মামলার ২ নং এজাহার নামীয় আসামীকে রেজাউল হককে গ্রেপ্তার করে।
র্যাব আরও জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামী ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।
দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দুরুল হোদা বলেন, ঘটনার পর থেকেই আসামীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছিলো। র্যাব সহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় আসামীদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। অন্য আসামীদেরকেও শীঘ্রই গ্রেপ্তার করা হবে।