অনুমোদনবিহীন ভাবে ৩৫/৪০ বছরের পুরোনো মেহগনি ও তেঁতুল গাছ বিক্রির জন্য আগামী ২৭ মে গাছ দুইটার উন্মুক্ত নিলামের বিজ্ঞপ্তি জারী করেছেন পাবনা সদরের টেবুনিয়া ওয়াছিম পাঠশালা হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে স্থানীয় বাসিন্দা, অভিভাবক, শিক্ষার্থীসহ গন্যমান্য ব্যক্তি মহলে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত টেবুনিয়া ওয়াছিম পাঠশালা। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনায় বেশ কিছু গাছ রয়েছে। তন্মধ্যে অনেক পুরোনো একটি মেহগনি গাছ ও একটি তেঁতুল গাছ কয়েকদিন আগে উন্মুক্ত বিক্রয়ের জন্য প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নিলাম বিজ্ঞপ্তি জারী করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠান প্রধান একক সিদ্ধান্তে কাউকে না জানিয়ে এই নিলামের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে। যা নিয়মনীতি ও অনুমোদন বিহীন বলে দাবী ভূক্তভোগীদের।
স্কুলটির প্রাক্তন ছাত্র, মালিগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মুন্তাজ আলী বলেন, একটা চিরকুটে জেনেছি গাছ কেটে বিক্রি করা হবে। তবে সরকারি যথাযথ নিয়ম না মেনে এ ধরণের কাজ করলে তার তীব্র নিন্দা জানাই। এ ধরণের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা মেনে নেয়া যায় না।
গাছ বিক্রি সংক্রান্ত নিলাম কমিটির আহবায়ক, স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম বলেন, একটি হাফ সাদা কাগজে নিলাম সংক্রান্ত লেখাসহ আমার নাম প্রিন্টিং করাবস্থায় জেনেছি আমি নিলাম কমিটির আহবায়ক। আগে পিছে এ সংক্রান্ত আমার কিছুই জানা নেই। প্রধান শিক্ষক আমার প্রতিষ্ঠান প্রধান জন্যই আমাকে দায়িত্ব নিতে হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমান প্রশিক্ষণে রয়েছে এমন দাবী জানিয়ে বলেন, জনস্বার্থে নিজ ক্ষমতা বলেই গাছ বিক্রির নিলাম দিয়েছি। বাকি কিছু জানার থাকলে অফিসে এসে জানতে পারবেন বলে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
পাবনা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাফিজুর রহমান বলেন, বিদ্যালয় আঙ্গিনার আগাছা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করার ক্ষমতা প্রতিষ্ঠানের আছে। কিন্ত সরকারি কোন ধরণের সম্পদ বা সম্পত্তি বিক্রি করার ক্ষমতা নেই। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান।
পাবনা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহারুল ইসলাম বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গাছ বিক্রয় করার জন্য নির্দিষ্ট কমিটি আছে। ওই কমিটির মাধ্যমে তদন্ত ও যাচাইবাছাই শেষে সিন্ধান্তের ভিত্তিত্বে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হয়। তবে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এ ধরণের কোন তথ্য বা আবেদন আমার দপ্তরে আসেনি।
একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, এ ক্ষেত্রে উপজেলায় আবেদন দেয়ার পর বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তর, সামাজিক বন বিভাগ তদন্ত, সম্ভাব্যতা যাচাই ও প্রতিবেদন দাখিলের পর মিটিং করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ ধরণের নিয়মকানুন না মেনে কোন কাজ করলে সেটা অবৈধ, অনিয়মতান্ত্রিক ও অনুমোদনবিহীন বলেই বিবেচিত হয়। যা সরকারি নিয়মনীতি লঙ্ঘনের শামিল।