বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২
ভিজিএফ চাল

বণ্টনের আগেই ভূয়াখড়সা তালিকার মাধ্যমে আত্মসাতের চেষ্টা!

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি
  ২৮ মে ২০২৫, ১৯:১৭
বণ্টনের আগেই ভূয়াখড়সা তালিকার মাধ্যমে আত্মসাতের চেষ্টা!
ছবি: যায়যায়দিন

পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার ৪নং অষ্টমনিষা ইউনিয়ন পরিষদের হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ করা ভিজিএফ চাল বণ্টনের আগেই আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বার কর্তৃক উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে ভূয়াখড়সা তালিকার মাধ্যমে ৮শ' কেজি চাল আত্মসাতের এ অভিযোগ পাওয়া যায়।

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় দুঃস্থ-গরীব ও অসহায়দের জন্য বরাদ্দ দেওয়া চাল বিতরণের আগেই উপজেলার ৪নং অষ্টমনিষা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বার কর্তৃক চাল আত্মসাত পরিকল্পনা আম-জনতা ফাঁস করে দেয়।

সরেজমিন খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ৪নং অষ্টমনিষা ইউনিয়ন পরিষদের ১ হাজার ২৭০ জন হতদরিদ্র মানুষের জন্য পবিত্র ঈদল আজহা উপলক্ষে ১০ কেজি করে ভিজিএফ চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত বিতরণের পূর্বেই সংশ্লিষ্ট ইউপি'র ৯ জন সদস্যের স্বাক্ষরিত একটি বণ্টন তালিকা তৈরি করা হয়।

অগ্রিম এ বণ্টন তালিকায় দেখা গেছে, মোট ৮০টি কার্ড (৮শ' কেজি) গরীব-দুঃস্থদের তালিকার বাইরে উপজেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস ও ব্যক্তির নাম তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের তৈরি করা অগ্রিম তালিকা দেখা গেছে, ভাঙ্গুড়া থানা-২০টি, ইউপি সচিব-১৫টি, পি আই ও অফিস-১০টি, ট্যাগ অফিস(ট্যাগ কর্মকর্তা)-৫টি, গ্রাম পুলিশ-১০টি, জনৈক মানিক টাইপিং-১০টি, শাহিন-৫টি সহ ৮০টি কার্ডের জন্য মোট ৮শ' কেজি চাল অগ্রিম তালিকায় দেখানো হয়েছে।

এ দিকে উপজেলা প্রশাসনের বেধে দেওয়া নির্ধারিত দিনের পূর্বেই চাল বন্টনের ভূয়াখড়সা তালিকা ফাঁস হওয়ায় ‘টক অফ দি অষ্টমনিষায়’ পরিণত হয়ে ইউনিয়ন তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিজ্ঞ মহল বলছেন, প্রকৃত দরিদ্রদের নামবাদ দিয়ে একটি চক্র নিজেদের স্বার্থে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পর্যায়ের নাম তালিকায় ব্যবহার করে সরকারি চাল আত্মসাতের চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।

এ বিষয়ে অষ্টমনিষা ইউপি চেয়ারম্যান সুলতানা জাহান বকুল কার্যালয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার মতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. ফেরদৌস আলম বলেন, বণ্টন তালিকায় অফিসের নাম ব্যবহার করা হয়েছে সেটি নজরে এসেছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভাঙ্গুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ভিজিএফ চালের বণ্টনের খড়সা তালিকায় ভাঙ্গুড়া থানার নাম ব্যবহার করার বিষয়টি স্পর্শকাতর। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হবে।

ভিজিএফ বণ্টনের খসড়া তালিকায় সাংবাদিক লেখার বিষয়ে ভাঙ্গুড়া রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও প্রবীণ গণমাধ্যম কর্মি বিকাশ চন্দ্র চন্দ বলেন, বিষয়টা সাংবাদিক সমাজের জন্য প্রশ্নবিদ্ধ। তিনি প্রশাসনের মাধ্যমে তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

উপজেলা প্রশাসক ও নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. নাজমুন নাহার বলেন, বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি। তদন্তে করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে