মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দেবীগঞ্জে পশুর হাটে জরিমানা 

দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
  ০১ জুন ২০২৫, ১৭:২৫
দেবীগঞ্জে পশুর হাটে জরিমানা 
ছবি: যায়যায়দিন

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে পশুর হাটে অতিরিক্ত খাজনা আদায় করায় সেনাবাহিনীর অভিযানে ইজারাদারকে এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

শনিবার (১ জুন) দুপুর দুইটায় উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের ভাউলাগঞ্জ হাটে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন ইনজামাম এর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে সেনাবাহিনীর একটি দল।

1

অভিযানে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত খাজনা নেয়ার সত্যতা মেলায় হাট ইজারাদার ও ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড দেন দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মাহমুদুল হাসান।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নিয়ম অনুযায়ী হাটের দৃশ্যমান স্থানে খাজনার চার্ট প্রদর্শন ও রশিদের মাধ্যমে খাজনা আদায় বাধ্যতামূলক। তবে ভাউলাগঞ্জ হাটে দেখা মেলে ভিন্ন চিত্রের। হাটের কোথাও খাজনা চার্ট প্রদর্শন করা হয়নি। গরু-ছাগল বিক্রির সময় রশিদ প্রদান করা হলেও খাজনার হার উল্লেখ করা নেই।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ১৪৩২ বাংলা সনে ভাউলাগঞ্জ হাটটির পরিশোধিত মোট ইজারা মূল্য ছিল ১ কোটি ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদ এ বছর হাটটি ইজারা নেন। প্রতি সপ্তাহের রবিবার ও বুধবার নির্ধারিত হাটের দিন। উপজেলার মধ্যে সব থেকে বড় হাট ভাউলাগঞ্জ হাট। উপজেলাসহ উপজেলার বাইরে থেকেও আসা পর্যাপ্ত গরু-ছাগল ক্রয়-বিক্রয় হয় এই হাটে।

জেলা প্রশাসনের কাছে প্রস্তাবিত খাজনা হার অনুযায়ী প্রতি গরুতে শুধুমাত্র ক্রেতার কাছ থেকে ৪৫০ টাকা নেওয়ার নিয়ম থাকলেও এখানে ক্রেতার কাছ থেকে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে ও বিক্রেতার কাছ থেকে চাঁদা বাবদ ১০০ থেকে ২০০ টাকা নেয়া হচ্ছে। এছাড়া ছাগল প্রতি শুধুমাত্র ক্রেতার কাছ থেকে ১৩০ টাকা নেওয়ার নিয়ম থাকলেও উল্টো বিক্রেতার কাছ থেকে ১৫০ টাকা নেয়া হচ্ছে এবং ক্রেতার কাছ থেকে ১০০ টাকা ঈদ বোনাসের কথা বলে আদায় করা হচ্ছে। এতে বিপুল পরিমাণ টাকা ইজারাদারের পকেটে গেলেও সমপরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ক্রেতা-বিক্রেতারা।

হাটে গরু কিনতে আসা পাশ্ববর্তী বোদা উপজেলার বড়শশী এলাকার রুপা নামে এক ক্রেতা বলেন, কুরবানীর জন্য ৫৮ হাজার টাকা দিয়ে একটা গরু কিনেছি। আমার কাছে লেখাই বাবদ ৫০০ টাকা নিচ্ছে আর বিক্রেতার কাছ থেকে ১০০ টাকা চাঁদা নিছে।

পার্শ্ববতী নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার কাজীর হাট এলাকার আব্দুল জব্বার নামে আরেক ক্রেতা বলেন, আমি ৭০ হাজার টাকা দিয়ে গরু কিনেছি। আমার কাছে লেখাই বাবদ ৬০০ টাকা নিছে আর যিনি বিক্রি করেছেন তার কাছে ২০০ কাকা চাঁদা নিছে।

এবিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুল হাসান, ক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত খাজনা আদায় করার সত্যতা মিলেছে এবং ইজারাদার অপরাধ স্বীকার করায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৫৩ ধারা অনুযায়ী ইজারাদারকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয় এবং তৎক্ষণাৎ তা আদায় করা হয়।

এদিকে অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে ভাউলাগঞ্জ হাটে সরকার নির্ধারিত রেটের থেকে অতিরিক্ত খাজনা আদায় করা হয়। এর আগে বার বার অভিযোগ এলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন শক্ত কোন ব্যবস্থা না নেয়া হয়নি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে