বাগেরহাটের মোংলার চটেরহাটে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে কোরবানির পশুরহাট। ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন দিন বাকি। এর মধ্যে এ হাটে পর্যাপ্ত পরিমাণ কোরবানির পশু থাকলেও কেনাবেচা তেম একটা হচ্ছে না।
তবে অনেক খামারিরা বলছেন, এবার হাটে কোরবানির পশুর দাম কম। যার কারণে বিপাকে পড়ছেন। দাম ভালো না পাওয়ায় অনেকে পশু ফেরত নিয়ে যাচ্ছেন বা যেতে হবে। চাহিদা অনুযায়ী দাম না পাওয়ায় হতাশ খামারিরা।
বৃহস্পতিবার (০৫'মে) দুপুরে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাগেরহাট জেলা'সহ মোংলা উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে খামারিরা কোরবানির পশু নিয়ে এসেছেন। ছোট, মাঝারি ও বড় সব আকৃতির পশু রয়েছে এই হাটে।
এ বিষয়ে এক পশু খামারি বলেন, এই কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে আমার খামারে এবার ৮'টি গরুর বিক্রির জন্য প্রস্তত করা হয়েছে। এর মধ্যে বাড়ি থেকে ৩'টি মাঝারি আকৃতির গরু বিক্রি করেছি। বড় সাইজের গরু রয়েছে ৩'টি। আর ছোট আকৃতির গরু রয়েছে ২'টি। ভালো দাম না পাওয়ার ফলে গরুগুলো বিক্রি করতে পারছি না। তবে এ হাটে অনেক সপ্ন নিয়ে আমার গরুগুলো নিয়ে আসছিলাম। কিন্তু ভালো দাম না ওঠায় আমি বিক্রি করিনি।
এ হাটে পশু বিক্রয় করতে আশা এক পশু ব্যবসায়ী বলেন, এই কোরবানির ঈদে ৪'টি গরু বিক্রির জন্য এনেছিলাম। মাঝারি সাইজের ২'টি গরু বাড়ি থেকে ১'লাখ ৪০'হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। বড় ২'টি গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছি। ভালো দাম পাচ্ছি না। ৪'লাখ ৪০'হাজার টাকা হলে গরু ২'টি বিক্রি করব। তাহলে লাভ মুখ দেখতে পারব। কিন্তু দাম উঠছে মাত্র ৩'লাখ ৫০'হাজার টাকা। এই ২'টি গরু নিয়ে আসছিলাম। ভালো দামের আশায় তবে হাটে গরু নিয়ে আসলে খাজনা ও পরিবহন ব্যয় মিলিয়ে অনেক টাকা খরচ হয়।
এ বিষয়ে মোংলা কলেজ মোড় থেকে আশা এক ক্রেতা বলেন, কোরবনির ঈদে ভালো মানের পশু বিভিন্ন হাটে দেখেছি। কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় এখনো কিনতে পারছি না। ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার মধ্যে গরু কিনবো। এই হাটে অনেক ভালো ভালো পশু এসেছে । তাই এখান থেকেই কেনার ইচ্ছা আছে আমার। তবে পশুর চেয়ে টাকার অংশ টা একটু বেশি চাওয়ায় এখনও আমার পছন্দের পশুটি ক্রয় করতে পারি নাই।
এ বিষয়ে মোংলা উপজেলা চটেরহাটের পশুরহাট কর্তৃপক্ষ জানান, এবার আমাদের এ হাটে পর্যাপ্ত পরিমানে পশু উঠেছে । দাম বিভিন্ন রকম হলেও ক্রেতাদের পছন্দ হলেও পশুর দাম একটু বেশি। কারণ এটি আমাদের মোংলা উপজেলার সবচেয়ে বড় পশুর হাট। এবার ঈদকে সামনে রেখে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মোংলা উপজেলা চটেরহাটের পশুরহাট কর্তৃপক্ষ আরও জানান, আমাদের এই পশুর হাট প্রতি বৃহস্পতিবার ও সোমাবার বসে। এবং গত সোমবার আমাদের এই পশুর হাটে ৫' হাজারের বেশি পশু এসেছিলেন কিন্তু ক্রেতা শূন্য থাকায় পশু বিক্রেতারা তাদের পশু নিয়ে যায় । বা আমাদের এই পশুর হাটে পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি এখানে ভলান্টিয়ার টিম রয়েছে। জাল টাকা পরীক্ষা করার জন্য এখানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, বা হাটে গবাদি পশুর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকল্পে ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম বসানো হয়েছে।
মোংলা উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, এবার কোরবানির জন্য মোংলায় পশুর চাহিদা প্রায় ৬'হাজার ৫০০'টি হলেও, বর্তমানে প্রস্তুত রয়েছে প্রায় ১৫'হাজার ৪১০'টি কোরবানির পশু। এর মধ্যে রয়েছে ১০'হাজার ৫০০'টি ছাগল, ৩'হাজার ৭০০'টি ষাঁড়, ৫০০'টি গাভী, ৭০০'টি ভেড়া এবং ১০'টি মহিষ।