পরিবারের সাথে ঈদুল আজহা উদযাপন করতে রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ঘরমুখো মানুষের উপচে পড়া ভিড়। সড়ক-রেলপথের মতো শেকড়ের টানে নদীপথেও যাত্রা করছেন রাজধানীবাসী।
সরেজমিন বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের বিভিন্ন পয়েন্টে যাত্রীদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। কেউ আগেভাগে কাটা টিকিট হাতে নিয়ে লঞ্চে উঠছেন, কেউ কেবিনের টিকিট না পেয়ে হতাশ ভঙ্গিতে ডেকে যাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
লঞ্চ সংশ্লিষ্টরা জানান, ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিশেষ সার্ভিসের জন্য তারা আগাম প্রস্তুতি রেখেছে। এর অংশ হিসেবে বুধবার রাতে ঢাকার সদরঘাট থেকে শুরু হয়েছে ঈদযাত্রার এই বিশেষ সার্ভিস। চলবে ১৪ জুন পর্যন্ত। এই সার্ভিসে যুক্ত হবে অন্তত ১৬টি লঞ্চ। যাত্রীসংখ্যার ওপর নির্ভর করে প্রতিদিন এই রুটে সাত থেকে আটটি লঞ্চ চলাচল করতে পারে।
তবে ঝড়ঝঞ্ঝার এই মৌসুমে নৌযাত্রা নিয়ে কিছুটা শঙ্কাও রয়েছে। তারা আরও জানান, কেবিনের টিকিটের জন্য আগাম চাহিদা বেশি থাকলেও এইবার আগের মতো উপচেপড়া ভীড় হয়নি। অনেক কেবিন টিকিট এখনো বিক্রি হয়নি। তবে যাত্রীদের চাপ বেশি দেখা যাচ্ছে ডেকে। যাত্রী আবুল হোসেন বলেন, রোজার ঈদে বাড়ি যাই নাই, তাই ছেলেমেয়ে নিয়ে এই ঈদে না গিয়া পারছি না। আমরা অল্প টাকা ইনকাম করি, দিন আনি দিন খাই।
সবাইকে নিয়ে গাড়িতে যাওয়ার সামর্থ্য নাই, তাই লঞ্চে যাই যাতে অন্তত কিছু টাকা বাঁচে। আগে লঞ্চে যাইতাম ৩০০ টাকা করে, এখন শুনি ৪০০ টাকা করে জনপ্রতি। যাত্রী তো কম না, ভাড়াটা একটু কম হলেই পারতো। বরিশালগামী আরেক যাত্রী পারভেজ বলেন, পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে লঞ্চে আগের মতো ভিড় হয় না, তবে আজকে মোটামুটি ভালোই যাত্রী আছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে লঞ্চে যাত্রা আরামদায়ক, তাই আমার মতো অনেকেই লঞ্চকেই বেছে নিচ্ছেন।
লঞ্চে তেমন কোনো সমস্যা না থাকলেও গুলিস্তান থেকে অনেককেই হেঁটে সদরঘাট আসতে হয়েছে। যানজটের কিছুটা ভোগান্তি ছাড়া ঈদযাত্রা স্বস্তিরই বলা চলে।
বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপপরিচালক শেখ মোহাম্মদ সেলিম রেজা বলেন, এবার ঈদ উপলক্ষে সরকারি দীর্ঘ ছুটি হওয়ায় আগের চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী গ্রামে ফিরবেন বলে মনে হচ্ছে। তাই এবার প্রত্যাশা অনুযায়ী যাত্রী পাওয়া যাবে লঞ্চগুলোতে।
তবে এবারের ঈদে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীসেবায় বিশেষ কোনো উদ্যোগ নেয়নি রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থাগুলো। একইভাবে বিআইডব্লিউটিসির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন নৌযানগুলোও যাত্রীসেবা থেকে বাদ পড়েছে।