সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে রাজশাহী থেকে কোরবানির গরু আনায় বিতর্কের মুখে পড়েছেন নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হা-মীম তাবাসসুম প্রভা। ব্যক্তিগত কোরবানির গরু আনার জন্য দুটি সরকারি গাড়ি ব্যবহার করায় সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।
জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাজশাহীতে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে একটি সভায় অংশ নিতে নিজ দপ্তরের জন্য বরাদ্দকৃত লাল রঙের পাজেরো গাড়িতে রাজশাহী যান ইউএনও হা-মীম তাবাসসুম প্রভা। তার সঙ্গে ছিলেন তার ছোট ভাই ও নিরাপত্তাকর্মী। রাজশাহীতে পৌঁছানোর পর ইউএনও সভাস্থলে নামলেও তার পাজেরো গাড়িটি ফিরে আসে বাগাতিপাড়ায়।
এরই মধ্যে রাজশাহীতে পৌঁছে যায় উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি ডাবল কেবিন পিকআপ। সভা শেষে রাজশাহীর সিটি হাট থেকে একটি কোরবানির গরু ক্রয় করে সেটি সরকারি ডাবল কেবিন পিকআপে তোলা হয় এবং পরে তা বাগাতিপাড়ায় নিয়ে আসা হয়।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বাগাতিপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর পদ শূন্য থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন ইউএনও। সেই সুযোগে পিকআপটি তিনি নিজেই ব্যবহার করেন।
এ বিষয়ে গাড়ির চালক সুমন আলী বলেন, মিটিং শেষে ইউএনও স্যার হাটে যান গরু কিনতে। তারপর গরুটা পেছনের কেবিনে তুলে আমরা বাগাতিপাড়ায় চলে আসি। স্যার এবং তার ভাই সঙ্গে ছিলেন। তবে সকালে পাজেরো গাড়ি নিয়ে রাজশাহীতে যাওয়া প্রসঙ্গে কিছুটা বিভ্রান্তিকর তথ্য দেন তিনি।
তবে, নাটোরের লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি চালক মাহাবুব হোসেন লাল রঙের পাজেরো গাড়িতে ইউএনও’র রাজশাহী যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমাদের লালপুরের ইউএনও স্যারও রাজশাহী মিটিং এ যোগ দেন। বাগাতিপাড়ার ইউএনও স্যার তার লাল পাজেরো গাড়িতেই রাজশাহী গিয়েছিল। সেসময় স্যারের সাথে সারের একজন গেস্ট ছিল।
বাগাতিপাড়া উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নাফ বলেন, জনগণের টাকায় কেনা সরকারি সম্পদের অপব্যবহার কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। দায়িত্বশীল পদে থাকা ব্যক্তিদের কাছ থেকে আরও সচেতন ও সৎ আচরণ প্রত্যাশিত।
এ বিষয়ে ইউএনও হা-মীম তাবাসসুম প্রভা বলেন, আমার উপজেলায় কোনো পশুর হাট নেই। ঈদ এখানে করতে হচ্ছে, তাই কোরবানির জন্য রাজশাহী থেকে একটি গরু কিনে এনেছি। তবে, দুটি গাড়ি নিয়ে রাজশাহী যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি এই কর্মকর্তা।
নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আবুল হায়াত বলেন, সরকারি গাড়িতে গরু পরিবহন সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। ঈদের পর এবিষয়টি আমরা দেখব।