দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শীর্ষ চরমপন্থি নেতা ও কুষ্টিয়া পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর কবির লিপটন সহ তার তিন সহযোগীকে আটক করেছে সেনাবাহিনী।
আজ শুক্রবার(০৬ জুন) সকাল আটটায় সদর উপজেলার উজানগ্রাম ইউনিয়নের দূর্বচারা গ্রামে তার নিজ বাড়ি থেকে তাদের আটক করা হয়। এসময় তল্লাশী করে ৬টি বিদেশি পিস্তল, একটি লং ব্যারেল গান, ম্যাগজিন, গুলি ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বেলা ১২টায় কুষ্টিয়া সেনা ক্যাম্পের মেজর মোস্তফা জামান এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জাহাঙ্গীর কবির লিপটন ওই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমানের ছেলে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
শুক্রবার ভোর রাত চারটা থেকে সেনাবাহিনীর কুষ্টিয়া ক্যাম্পের একটি দল লিপটনের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন। দীর্ঘ অভিযানের পর সকাল আটটার দিকে লিপটন ও তার তিন সহযোগি রাকিব(৩৮),সনেট হাসান(৪৫) ও লিটন(২৬)কে ক্যাম্পে নেয় সেনাবাহিনী। এসময় তল্লাশী চালিয়ে ৬টি পিস্তল,১টি লং ব্যারেল গান,বিপুল পরিমাণ গুলি, ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে,আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স পরিচয় দেওয়া চরমপন্থী সংগঠন গণমুক্তিফৌজের একসময়ের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা ছিলেন লিপটন। ২০১২ সালের ডিএসবির তালিকায় শীর্ষ চরমপন্থী হিসেবে তাঁর নাম রয়েছে। নব্বইয়ের দশকে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। ছাত্র থাকাকালীন চরমপন্থি দল গণমুক্তিফৌজে নাম লেখান। সে সময় আন্ডারওয়ার্ল্ডে শুটার হিসেবে পরিচিতি পান লিপটন। একপর্যায়ে নিজেই বাহিনী গড়ে তোলে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জোরদার অভিযান শুরু করলে লিপটন ভারতে পালিয়ে যায়।
সেখানে অবস্থান করেই সে দেশে নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল। এরপর ২০১৩ সালে লিপটন দেশে ফিরে আসে। অভিযোগ রয়েছে,লিপটন স্থানীয় র্যাবের কিছু সদস্যকে হাত করে নিজেকে এ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কথিত সোর্স পরিচয় দিয়ে থাকেন। প্রায় আড়াই যুগ ধরে অপরাধ জগতের প্রভাবশালী লিপটন। শুরুতে বিভিন্ন অপারেশনে কিলার হিসেবে কাজ করতেন তিনি।
সর্বশেষ আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন তার চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে ভুক্তভোগীরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফের হাত ধরে প্রকাশ্যে আসেন তিনি।
তারপর থেকে এলাকায় নিয়মিত যাতায়াত করতেন। এদিকে লিপটনকে আটকের পর তার নিজ এলাকায় আনন্দ মিছিল করেছে গ্রামবাসী।