সারাদেশ

ঈদের কয়েকদিন আগেই কোরবানির পশুর চামড়ার দাম বাড়িয়ে মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকার। তবে সরকারের সেই নিদ্ধারীত মূল্য কাজে আসেনি মফস্বলের চামড়ার বাজারে। ফলে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে বিগত কয়েক বছরের ন্যায় এবারও কোরবানির কাঁচা চামড়ার বাজারে ধস নেমেছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, গরুর কাঁচা চামড়া বিক্রি হয়েছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায়; ছোট গরুর চামড়া অনেকে কিনতে চায়নি, যারা কিনেছে সেখানে দাম দিয়েছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। ফলে এ বছরও চামড়ার ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়েছেন মাদ্রাসা ও এতিমখানার দরিদ্র শিক্ষার্থীরা।

জানাগেছে এ বছর ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। অন্যদিকে ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।

কিন্তু চামড়ার মৌসুমী ব্যবসায়ীদের নিকট কাঁচা চামড়ার চাহিদা কম থাকায় সরকারের নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করতে পারেনি পশু কোরবানি দেওয়া ব্যক্তিরা। তারা বলছেন, গরুর চামড়ার জন্য মৌসুমি ব্যবসায়ীরা অনেক কম দাম দিচ্ছেন।

এদিকে দাম নিয়ে শুরু হয়েছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। চামড়ার স্থানীয় মহাজনরা বলছে, চামড়ার মোকামের আড়তদারেরা সরকারের নিদ্ধারিত মূল্যে চামড়া কিনছেনা, এ কারনে তারা লোকশান এড়াতে কমদামে চামড়া কিনতে বাধ্য হচ্ছে।

চামড়ার স্থানীয় আড়তগুলোতে প্রতিপিস গরুর চামড়া মানভেদে দাম হাঁকাচ্ছেন ৬০০-৭০০ টাকা। এছাড়া ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ছাগলের চামড়া।

চামড়ার স্থানীয় মহাজনরা বলছেন, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা না বুঝে বেশি দামে চামড়া কিনে নিয়ে আসেন। চামড়ার মোকামে বাজার ভালো নয়। এ জন্য ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় চামড়া কিনছেন তারা। চামড়ার স্থানীয় মহাজনরা বলছেন একটি চামড়া ৭০০ টাকায় কিনে লবণ ও শ্রমিক বাবদ খরচ হয় ৩০০ টাকা, হাতবদলে বাড়ে আরও ১০০ টাকা। ফলে দাম দাঁড়ায় ১ হাজার ১৫০ টাকা।

এই চামড়া ট্যানারির কাছে কী দামে বিক্রি হবে সেটি এখন বড় প্রশ্ন।

চামড়ার মৌসুমী ব্যবসায়ী কুরবান আলী, বলেন বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋন-দেনা করে কুরবানীর পশুর চামড়া তারা কিনেন, কিন্তু মহাজনেরা সময় মতো চামড়ার টাকা না দেয়ায় লাভের বদলে লোকশানে পড়ছেন তারা, একই কথা বলেন চামড়ার মৌসুমী ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ হাশমিসহ চামড়ার মৌসুমী ও ফঁড়িয়া ব্যবসাীরা। ফলে এবারো কুরবানীর চামড়ার বাজারে ধস নেমেছে।