শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সাবেক ছাত্রনেতা শাহনেওয়াজের ঈদ শুভেচ্ছা রূপ নেয় পথসভায়

হাতিয়া প্রতিনিধি
  ১১ জুন ২০২৫, ১৯:৩৩
সাবেক ছাত্রনেতা শাহনেওয়াজের ঈদ শুভেচ্ছা রূপ নেয় পথসভায়
ছবি: যায়যায়দিন

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজের ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় রূপ নিয়েছে এক স্বতঃস্ফূর্ত পথসভায়। কোনো রকম প্রচার বা শোডাউন ছাড়াই শুধুমাত্র ব্যক্তি পর্যায়ের আন্তরিক যোগাযোগ এবং দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তিতে মানিক বাজার এলাকায় সৃষ্টি হয় জনতার ঢল।

গত বৃহস্পতিবার ঢাকাস্থ রাজনৈতিক কর্মব্যস্ততা শেষে লঞ্চযোগে নিজের ইউনিয়ন সোনাদিয়ায় ফেরেন শাহনেওয়াজ। ঈদুল আজহার ছুটিতে বাড়ি ফিরলেও তিনি সময় কাটিয়েছেন দলীয় নেতাকর্মী ও এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে। শনিবার তিনি পা রাখেন মানিক বাজারে, উদ্দেশ্য ছিলো কয়েকজন স্থানীয় নেতার সঙ্গে দেখা করা ও ঈদ শুভেচ্ছা আদান-প্রদান। কিন্তু হঠাৎ করেই সেই নিরব শুভেচ্ছা বিনিময় রূপ নেয় জনসভায়।

1

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে ২০-৩০ জনের এক ছোট্ট জমায়েত হলেও, শাহনেওয়াজের উপস্থিতির খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের গ্রাম থেকে লোকজন আসতে শুরু করেন। মাত্র ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই বাজারের মূল চত্বর পরিণত হয় জনসমুদ্রে। শত শত মানুষ তাকে দেখতে এবং তার সঙ্গে কুশল বিনিময় করতে জড়ো হন।

স্থানীয় বাসিন্দা মিলাদ উদ্দিন জানান, "প্রথমে ভাবছিলাম কয়েকজন লোকই থাকবে, কিন্তু মুহূর্তে আশপাশ থেকে লোক এসে জায়গাটা জনসমুদ্রে পরিণত করে। পরে উপস্থিত লোকজনের অনুরোধে তিনি একটি অস্থায়ী মঞ্চে উঠে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।"

শাহনেওয়াজ বলেন, "বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের সময় বারবার হামলার শিকার হয়েছি, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে আমাকে ২৭টি মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে, প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা হয়েছে—তবুও আমি দলের নেতাকর্মী ও এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করিনি।"

তিনি আরও বলেন, "আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে মোদীবিরোধী আন্দোলনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে। অথচ আমি সেসব ঘটনার সময় এলাকায়ই ছিলাম না। এটা ছিলো রাজনৈতিক হয়রানি। তবুও আমি ভীত হইনি। এই জনসম্পৃক্ততা প্রমাণ করে— মানুষ আমার পাশে ছিলো, আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।"

বক্তব্যে শাহনেওয়াজ তার দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, "আপনারাই আমার আসল শক্তি। যারা দুঃসময়ে পাশে ছিলেন, আমি তাদের খোঁজ নিতে এসেছি। আমি রাজনীতি করি মানুষের জন্য, প্রচার কিংবা পদ-পদবির জন্য নয়।"

তিনি জানান, আগামীতেও তিনি নিয়মিত এলাকায় এসে কর্মীদের খোঁজখবর নেবেন এবং জাতীয়তাবাদী রাজনীতিকে সুসংগঠিত করার কাজ করে যাবেন।

অনেকেই মনে করছেন, সাম্প্রতিক সময়ে যেখানে রাজনীতি বলয়, সংঘাত ও শক্তি প্রদর্শনের মধ্যে আবর্তিত, সেখানে শাহনেওয়াজের এই নিরব অথচ প্রভাবশালী উপস্থিতি এক ভিন্ন বার্তা বহন করে। তিনি জনসম্পৃক্ততা ও ভালোবাসার রাজনীতিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন।

স্থানীয় এক প্রবীণ রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, "শাহনেওয়াজের এই উদ্যোগ নতুন এক ধারা তৈরি করছে— পোস্টার, ফেস্টুন আর বড় মঞ্চের প্রচারে নয়, জনগণের ঘরে ঘরে গিয়ে ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে হবে।"

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে