মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

মুকসুদপুরে VWB উপকারভোগী কার্যক্রমের গণশুনানী অনুষ্ঠিত

মুকসুদপুর প্রতিনিধি
  ০১ জুলাই ২০২৫, ১৫:২০
মুকসুদপুরে VWB উপকারভোগী কার্যক্রমের গণশুনানী অনুষ্ঠিত
মুকসুদপুরে VWB উপকারভোগী কার্যক্রমের গণশুনানী অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: যাযাদি

গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর বাস্তবায়িত ‘ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (VWB)’ কার্যক্রমের আওতায় ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের উপকারভোগী নির্বাচনের উদ্দেশ্যে গণশুনানী অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) বেলা ১১টায় মুকসুদপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।

গণশুনানীতে সভাপতিত্ব করেন মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তাসনিম আক্তার। সঞ্চালনায় ছিলেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা লায়লা রহমান। আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা তথ্য কর্মকর্তা শতাব্দী বিশ্বাস, মুকসুদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মো: ছিরু মিয়া, সাধারণ সম্পাদক কাজী মো: ওহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজুর রহমান, সাংবাদিক মো: কাইয়ুম শরীফ সহ স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের প্রতিনিধিবৃন্দ।

গণশুনানীতে মুকসুদপুর উপজেলার চারটি ইউনিয়ন — বহুগ্রাম, উজানী, খান্দারপাড় ও জলিরপাড় — এই অঞ্চলের সম্ভাব্য VWB উপকারভোগী মহিলাদের তালিকা উন্মুক্তভাবে উপস্থাপন করা হয়। পরে উপস্থিত জনগণের মতামত, প্রশাসনের পর্যবেক্ষণ ও সামাজিক বিচারের ভিত্তিতে তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে যাচাই-বাছাই করা হয়। গণশুনানী পদ্ধতির মাধ্যমে এই প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যই ছিল প্রশাসনের।

উল্লেখ্য, মুকসুদপুর উপজেলার মোট ১৬টি ইউনিয়ন থেকে ২,২৮৫ জন নারীকে উপকারভোগী হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে যাদেরকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, তারা আগামী দুই বছর ধরে প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাবেন। সরকারের এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো হতদরিদ্র ও দুস্থ নারীদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, তাদের জীবনে স্থিতিশীলতা আনা এবং সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় নিয়ে আসা।

গণশুনানীতে বক্তারা বলেন, সরকারি এই সহায়তা বাস্তবিক অর্থেই নারীর ক্ষমতায়ন এবং দারিদ্র্য বিমোচনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। বক্তারা আরও বলেন, সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের পাশে দাঁড়ানোর এই কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত হওয়া দরকার, যাতে বেশি সংখ্যক মানুষ উপকৃত হতে পারে।

সভায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রকৃত উপকারভোগীদের তালিকা তৈরিতে যেন কোনো অনিয়ম না ঘটে, সেজন্য কঠোরভাবে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। যদি কেউ অসত্য তথ্য দিয়ে সুবিধা নিতে চায়, তাহলে তাদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে এবং পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গণশুনানী অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্থানীয় সাংবাদিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং জনগণ এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের গণমুখী কার্যক্রম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আওতায় পরিচালিত এই কার্যক্রমটি নারীদের জন্য একটি বড় সহায়তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিশেষ করে যারা উপার্জনক্ষম নন বা যাদের পরিবারে উপার্জনকারী কেউ নেই — তাদের জন্য এই চাল সহায়তা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি আত্মমর্যাদা বজায় রাখার একটি সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে।

এই ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে সরকারের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিগুলো বাস্তবিক অর্থেই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে