নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় প্রেমের সম্পর্কের জেরে বিষ (কীটনাশক) পানে ১০শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে ।
মঙ্গলবার (১জুলাই) ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতাল থেকে ঢাকা নেয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেন ভুক্তভোগী পরিবার ।
এর আগে গত রবিবার (২৯জুন) বিষ (কীটনাশক) পানে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ময়মনসিংহ মেডিকেলে রেফার্ড করেন এবং ওখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ঢাকায় স্থানান্তর করা হয় তাকে । কিন্তু গাজীপুরের মাওনায় পৌঁছাতে না পৌঁছাতেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমান কিশোরী ।
সরেজমিনে উপজেলার রোয়াইলবাড়ি আমতলা ইউনিয়নের রোয়াইলবাড়ি গ্রামে (ভুক্তভোগীর বাড়ি) গিয়ে জানা যায় , নিহতের নাম সুমাইয়া আক্তার । তাঁর বাবার নাম সাহাব উদ্দিন । তিনি একজন দিনমজুর । মায়ের নাম জোছনা আক্তার ।
বিষ (কীটনাশক) পানের আগে সুমাইয়া আক্তারের লেখা দুটি চিঠি ও পরিবার সূত্রে আরো জানা যায়, একই ইউনিয়নের নিলাম্বরখিলা গ্রামের আজিজুল হক ওরফে আরজু মেম্বারের ছেলে এইচএসসি পরীক্ষার্থী পূর্ণ এর সাথে রোয়াইলবাড়ি ফাজিল মাদ্রাসায় পড়াকালে প্রেমের সম্পর্ক হয় তাদের । কিন্তু গত ১৫/২০দিন যাবত (প্রেমিক) পূর্ণ ১০ম শ্রেণীতে পড়ুয়া সুমাইয়া আক্তারকে এড়িয়ে চলতে শুরু করে এবং চিঠিতে এও উল্লেখ করা হয় পূর্ণ অন্য একটি মেয়ের সাথে জড়িয়ে পড়েছে । সেই প্রেক্ষাপটে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় ।
সুমাইয়ার মা জোৎস্না আক্তার কেঁদে কেঁদে বলেন, আমার কোন ছেলে সন্তান নেই । মেয়েরাই আমার সব । তাদের দুজনের সম্পর্কের কথা আমাকে বলেছিলো সুমাইমা । আমার মেয়ের মৃত্যুর জন্যে ঐ ছেলেই দায়ী । আমি এর সঠিক বিচার চাই ।
পূর্ণ এর বড় ভাই আনিসুল হকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কেন্দুয়ার বাইরে বিষয়টি অনেকের ফোন কলের মাধ্যমে জানতে পেরেছি । এর আগে কিছু জানতাম না ।
এলাকাবাসী অনেকে ধারণা করছেন, সুমাইয়া তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন । অন্যদিকে সুমাইয়ার এই অকাল মৃত্যুর প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে এলাকায় একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয় ।
পুলিশ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সক্রিয় ভূমিকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে এখনো পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে নি ।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানা অফিসার ইনচার্জ মিজানুর মুঠোফোনে জানান, লাশ ময়নাতদন্তের পাঠানো হয়েছে । লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে ।