বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

নথি জালিয়াতি: কক্সবাজারের সাবেক জেলা জজ-ডিসিসহ ৫ জনের বিচার শুরু

চট্টগ্রাম ব্যুরো
  ০১ জুলাই ২০২৫, ২০:০৩
নথি জালিয়াতি: কক্সবাজারের সাবেক জেলা জজ-ডিসিসহ ৫ জনের বিচার শুরু
ছবি : যায়যায়দিন

কক্সবাজারের মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত একটি মামলার নথি জালিয়াতির অভিযোগে করা মামলায় সাবেক কক্সবাজার জেলা প্রশাসক (ডিসি) রুহুল আমিনসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) চট্টগ্রামের বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

মামলার বাকি চার আসামি হলেন- সাবেক কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার, ওই আদালতের স্টেনোগ্রাফার জাফর আহমদ, আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কৌঁসুলি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাবলু জানান, দুদক ও আসামিপক্ষে প্রায় ৪০ মিনিট শুনানির পর আদালত সব আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। ৩ আগস্ট থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে। প্রথমে মামলার বাদীর সাক্ষ্য নেওয়া হবে। আসামিদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত ৩ আগস্ট পর্যন্ত তাদের অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছেন।

মামলার নথিপত্র পর্যালোচনায় জানা গেছে, কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি এলাকায় কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দা এ কে এম কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিনকে প্রধান আসামি করে মোট ২৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তদন্তের নির্দেশ দেন। তবে তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজ মো. সাদিকুল ইসলাম তালুকদার তদন্তের জন্য মামলার নথিপত্র দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানোর সময় এক নম্বর আসামি রুহুল আমিনের নাম বাদ দিয়ে দেন।

ঘটনাটি জানতে পেরে বাদী কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী আদালতে নতুন করে আরেকটি জালিয়াতির মামলা দায়ের করেন। মামলায় জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন, জেলা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদারসহ সাতজনকে আসামি করা হয়।

মামলাটির তদন্ত শেষে দুদকের কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন ২০২৪ সালের ১ জুলাই পাঁচজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্তে নথি জালিয়াতির ঘটনায় সহযোগিতার প্রমাণ পাওয়ায় সাবেক জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিন ও জেলা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার, বাদীপক্ষের আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো. জাফর আহমদকে আসামি করা হয়।

তদন্তে দুদকের কক্সবাজার আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আবদুর রহিম এবং কক্সবাজারের সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এস এম শাহ হাবিবুর রহমানকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি কক্সবাজারের বিশেষ জজ আদালতে দুদকের দেওয়া প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হয়। ২৩ জানুয়ারি আদালত ওই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে অভিযুক্ত পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরবর্তীতে তারা আদালতে হাজির হয়ে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে