শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

চাঁদাবাজির অভিযোগে পুলিশ কনষ্টেবলকে গণধোলাই

শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
  ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৯:৫৬
চাঁদাবাজির অভিযোগে পুলিশ কনষ্টেবলকে গণধোলাই
ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার শাজাহানপুরে চাঁদাবাজির অভিযোগে রুহুল আমিন নামে এক পুলিশ কনস্টেবলকে গণধোলাই দিয়েছে জনসাধারণ।

সংবাদ পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে আসে।

৩ জুলাই শাজাহানপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

রুহুল আমিন বর্তমানে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে পুলিশী হেফাজতে চিকিৎসাধীন আছেন। রুহুল আমিন শাজাহানপুর থানায় বিগত কয়েক অফিসার ইনচার্জ (ওসির) বডিগার্ড হিসেবে ছিলেন।

কিছুদিন আগে বদলী হয়ে বগুড়া সারিয়াকান্দী থানার চন্দনবাইসা পুলিশ ফাড়িতে কর্মরত ।সে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার কয়রা শরতলীর বাসিন্দা।

এ ঘটনায় নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা অ্যাডভোকেট শাপলা খাতুন শাজাহানপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এজাহার অনুযায়ী জানাযায়, রুহুল আমিন কিছুদিন আগে ডিবি পরিচয়ে শাপলার বাবা মো. আব্দুল বাকি শাহের (৬০) বাড়িতে যান তাকে আটক করার জন্য। বাবাকে না পেয়ে সে ৫০০ টাকা নিয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার সকালে রুহুল আমিন আবার তাদের শাজাহানপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর শাহ্ পাড়া গ্রামে এসে শাপলার ছোট ভাই মো. সাজ্জাদ হোসেন সবুজের (৩২) খোঁজ করেন। সবুজ আসার পর রুহুল আমিন তাকে বলে যে, তারা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছে তাদের বাড়ির কোণায় কিছু আছে এবং সবুজ যেন তার সাথে গিয়ে সেটা উদ্ধার করে।

রুহুলের কথামতো সবুজ তার বাড়ির দক্ষিণ পাশের কলা বাগানের কোণায় যায় এবং সেখানে একটি ছোট টিনের কৌটা পায়। রুহুল আমিন সবুজকে কৌটাটি তুলতে বলে। সবুজ কৌটা খুলে ভেতর ২০ রাউন্ড বুলেট (কার্তুজ) পান।

এই বুলেটগুলোকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থানা থেকে মিসিং বুলেটের আখ্যা দিয়ে সবুজকে ফাঁসানোর চেষ্টা এবং ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন রুহুল আমিন।

একই সাথে সবুজকে ভয় দেখিয়ে জানান, তার সাথে আরও ৮-৯ জন সিভিল পোশাকের পুলিশ সদস্য আছে এবং টাকা দিলে তাদের ম্যানেজ করা যাবে।

ঘটনাটি সবুজ তার বোন শাপলাকে জানালে তিনি এবং তার স্বামী মোঃ শাহাদত আলম (৪৩) দ্রুত ঘটনাস্থলে আসেন। কিন্তু তারা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে রুহুল আমিন অভিযোগকারীর মেয়েকে অপহরণের হুমকি দেয়।

একপর্যায়ে ঘটনাটি স্থানীয়রা জানতে পেরে রুহুল আমিনকে আটক করে। ওই সময় তাকে মারধর করা হয়। এ ছাড়া অভিযোগকারী ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে বিষয়টি জানালে তারা এসে রুহুল আমিনকে নিজ হেফাজতে নেয়।

এ বিষয়ে বর্তমান শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, চাঁদাবাজির অভিযোগে রুহুল আমিন নামে একজন কনস্টেবলকে আটক করেছিল স্থানীয়রা। তাকে প্রচুর মারধর করা হয়েছে।

খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। বর্তমানে রুহুল আমিনকে পুলিশ হেফাজতে রেখে বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আর চাঁদাবাজির বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে