শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সাকবি লটিনে কক্ষপথে বাংলাদশে

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৮ জুন ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ১৮ জুন ২০১৯, ০০:২৯

দিনের শুরু ছিল ক্যালিপসো সুরের মূর্ছনায়। ক্যারিবিয়ান দর্শকদের নাচ-গানে উত্তাল চারপাশ। দিনের শেষে কেবল বাংলাদেশের নামেই স্স্নোগান! চ্যালেঞ্জ ছিল নতুন উচ্চতায় পা রাখার। সামনে বাধা ৫ ক্যারিবিয়ান পেসার। সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস সব উড়িয়ে দিলেন যেন তুড়ি বাজিয়ে। ক্যারিবিয়ান বোলিং গুঁড়িয়ে বাংলাদেশ জিতল রান তাড়ার রেকর্ড গড়ে।

সাকিবের ব্যাট থেকে এলো অসাধারণ এক অপরাজিত সেঞ্চুরি। নতুন পজিশনে নেমেও লিটন দাস বিশ্বকাপ অভিষেক রাঙালেন মুগ্ধতা জাগানিয়া ব্যাটিংয়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭ উইকেটে উড়িয়ে দিয়ে বিশ্বকাপে আবার জয়ে ফিরল বাংলাদেশ।

টনটনে সোমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ তুলেছিল ৩২১ রান। এত বড় স্কোর তাড়ায় আগে কখনোই জেতেনি বাংলাদেশ। এবার সাকিব ও লিটনের রেকর্ড গড়া জুটিতে গড়া হলো নতুন ইতিহাস। বড় রান তাড়ায়ও বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ জিতল ৫১ বল বাকি রেখেই।

ওয়ানডেতে রান তাড়ায় বাংলাদেশের আগের রেকর্ড ছিল গত বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের ৩১৮ টপকে জয়।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে ছিল অনেকগুলো ধাপ। একসময় মনে হয়েছে তিনশ ছুঁতে কষ্ট হবে। কখনো মনে হয়েছে, সাড়ে তিনশও সম্ভব। শেষ পর্যন্ত তারা পৌঁছায় দুই সম্ভাবনার মাঝামাঝি।

বাংলাদেশের বোলিংয়েও ছিল একইরকম ওঠানামা। মাশরাফি বিন মর্তুজা শুরু করেছিলেন দুর্দান্ত। পরে ধরে রাখতে পারেননি সেই ধারা। সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমানের শুরুটা ভালো না হলেও পরে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন দুজনই। ইনিংসজুড়েই সাইফের বোলিং ছিল ভালো-মন্দ মিশিয়ে। প্রথম ৫ ওভারে ৪১ রান দেয়া মুস্তাফিজই শেষ পর্যন্ত ৫৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দলের সফলতম বোলার।

উইকেটে শুরুর আর্দ্রতা কাজে লাগাতে টস জিতে বোলিং নিয়েছিলেন মাশরাফি। অধিনায়ক নিজে দেখিয়ে দেন কীভাবে বল করা উচিত। ক্রিস গেইলকে বল করে মেডেন ওভারে শুরু। তার প্রথম তিন ওভারে স্কোরিং শট ছিল কেবল দুটি। প্রথম ৫ ওভারে রান দেন ৯।

আরেকপাশে সাইফউদ্দিনও শুরু করেন ভালো। দলকে প্রথম উইকেটও এনে দেন তিনিই। ১৩ বল খেলেও রানের দেখা পাননি গেইল।

লুইস ও হোপ সেই সময়টা কাটিয়ে দেন ঠান্ডা মাথায়। প্রথম ১০ ওভারে খেলেননি কোনো লফটেড শট।

সময়ের সঙ্গে রানের গতি বাড়াতে থাকেন লুইস। হোপ মন দেন উইকেট ধরে রাখায়। দুজনের জুটি পেরিয়ে যায় শতরান, এবারের বিশ্বকাপে যা ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম।

১১৬ রানের জুটি ভাঙেন সাকিব। ফিফটির পর বিপজ্জনক হয়ে উঠছিলেন লুইস। সাকিবকে ছক্কায় ওড়ানোর পর আরেকটির চেষ্টায় লং অফে ধরা পড়েন ৬৭ বলে ৭০ করে।

বোলিংয়ের শুরুটা ভালো করতে না পারলেও সাকিবই দলকে এনে দেন আরেকটি উইকেট। জমে ওঠা নিকোলাস পুরানকে থামান ২৫ রানে।

ইনিংসের মোড় ঘুরিয়ে দেয়া জুটি এরপরই। হেটমায়ার গিয়েই শুরু করেন শট খেলা। গোটা ইনিংসে দারুণ ফিল্ডিং করা সাইফ ১২ রানে হাতছাড়া করেন হেটমায়ারকে রান আউটের সুযোগ। সেটির বড় খেসারত দিতে হয় দলকে। হেটমায়ার শুরু করেন টর্নেডো।

সেই বিধ্বংসী চার ওভারের শুরু মুস্তাফিজের ওভারে ১৯ রান দিয়ে। পরে সাইফের ওভারে এসেছে ১৭, মিরাজের ওভারে ১০, মোসাদ্দেকের ওভার থেকে ১৪। হেটমায়ার ফিফটি ছুঁয়ে ফেলেন ২৫ বলে।

ফিরে আসা মুস্তাফিজই শেষ পর্যন্ত হেটমায়ারকে ফিরিয়ে ভাঙেন ৪৩ বলে ৮৩। আকাশে ওঠা বলটি দারুণ ক্যাচে পরিণত করেন তামিম। ওই ওভারেই দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে মুস্তাফিজ শূন্যতে থামান আন্দ্রে রাসেলকে।

বাংলাদেশের বিপক্ষে আগের ৯ ম্যাচে তিনটি করে সেঞ্চুরি ও ফিফটি করা হোপ এবার ১২১ বলে ৯৬ করে থামেন সাইফের ফুলটসে।

ক্যারিবিয়ানদের ঝড় থামেনি সেখানেও। জেসন হোল্ডার নেমে খেলেন ১৫ বলে ৩৩ রানের ক্যামিও। বাংলাদেশের লক্ষ্যটা তাতেই ছাড়িয়ে যায় ৩২০।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৫০ ওভারে ৩২১/৮ (গেইল ০, লুইস ৭০, হোপ ৯৬, পুরান ২৫, হেটমায়ার ৫০, রাসেল ০, হোল্ডার ৩৩, ব্রাভো ১৯, টমাস ৬*; মাশরাফি ৮-১-৩৭-০, সাইফ ১০-১-৭২-৩, মুস্তাফিজ ৯-০-৫৯-৩, মিরাজ ৯-০-৫৭-০, মোসাদ্দেক ৬-০-৩৬-০, সাকিব ৮-০-৫৪-২)।

বাংলাদেশ: ৪১.৩ ওভারে ৩২২/৩ (তামিম ৪৮, সৌম্য ২৯, সাকিব ১২৪*, মুশফিক ১, লিটন ৯৪*; কটরেল ১০-০-৬৫-০, হোল্ডার ৯-০-৬২-০, রাসেল ৬-০-৪২-১, গ্যাব্রিয়েল ৮.৩-০-৭৮-০, টমাস ৬-০-৫২-১, গেইল ২-০-২২-০)

ফল: বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: সাকিব আল হাসান

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<54185 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1