বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৮ আষাঢ় ১৪৩২
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

ড. ইউনূসের স্বেচ্ছাচারিতায় অতিষ্ঠ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

যাযাদি রিপোর্ট
  ২২ জুলাই ২০১৯, ০০:০০
ড. ইউনূসের স্বেচ্ছাচারিতায় অতিষ্ঠ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে গ্রামীণ কমিউনিকেশনস শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সভাপতি বদরুল আলম -যাযাদি

নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অত্যাচার ও স্বেচ্ছাচারিতায় অতিষ্ঠ তার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচনের ঘোষণা দিলেও ইউনূসের নিজের প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছেন। অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় গ্রামীণ কমিউনিকেশন থেকে আটজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিচু্যত করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে গ্রামীণ কমিউনিকেশনস শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ১২ থেকে ১৫ মাসের বেতন দেয়া হয় না বলে তাদের অভিযোগ।

সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণ কমিউনিকেনের কর্মচারী সংগঠনের সভাপতি বদরুল আলম লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান 'গ্রামীণ কমিউনিকেশনস' এর কর্মকর্তা-কর্মচারী আমরা। গ্রামীণ ব্যাংকের আইটি সেক্টরে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছি। প্রতিষ্ঠানটি অলাভজনক বলা হলেও মূলত এটি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানের অর্থ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। অথচ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নূ্যনতম বেতন দেয়া হচ্ছে।

বদরুল আলম বলেন, 'দীর্ঘদিন যাবত আমাদের বেতন বৃদ্ধি করা হচ্ছে না, মাসিক ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা বেতন দেয়া হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী ৫ বছর পরপর পে-স্কেল ঘোষণা করার বিধান থাকলেও ৬ বছর হলেও তা করা হয়নি। যারা ১২ থেকে ১৫ বছর চাকরি করছেন তাদের বেতন ও পদোন্নতি না দিয়ে অচল করে রাখা হয়েছে। কিছু প্রণোদনা দিয়ে তাদের বিতাড়িত করতে বাধ্য করা হচ্ছে। অথচ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সারাবিশ্বের দারিদ্র্যকে যাদুঘরে নিতে বিশ্বর তরুণদের নিয়ে সামাজিক ব্যবসা করে যাচ্ছেন। অন্যদিকে তার নিজের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিত তরুণরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে দারিদ্র্যের নিম্নসীমায় চলে যাচ্ছে।'

আরও বলা হয়, নোবেল বিজয়ী এই ব্যক্তির প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিয়ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানাভাবে অধিকার বঞ্চিত করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদ জানালে তাকে চাকরিচু্যত করা হয়। এ কারণে শ্রমিকরা ইউনিয়ন গঠন করার সিদ্ধান্ত নেন। ইউনিয়ন গঠন করায় ছয়জন কর্মকর্তা ও দুইজন কর্মচারীকে চাকরিচু্যত করা হয়। এ বিষয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আদালতে ৫টি মামলা দায়ের করেছেন। বর্তমানে তা বিচারাধীন।

তারা দাবি করেন, চাকরিচু্যতদের স্বপদে বহাল করে তাদের বেতন-ভাতা বুঝিয়ে দিতে হবে, একই সঙ্গে কর্মচারীদের ওপর থেকে অত্যাচারের স্টিম রোলার চালানো বন্ধ করতে হবে।

গ্রামীণ কমিউনিকেশনসের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল সালাম বলেন, ড. ইউনূস একজন নোবেল বিজয়ী হলেও আসলে তার ভেতরের চিত্রটি অনেক খারাপ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।

এ প্রতিষ্ঠানে এক হাজার ৬৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিম্ন বেতন দেয়া হয়। এরপরও আমাদের ওপর নির্যাতন ও নানাভাবে অধিকার বঞ্চিত করা হচ্ছে। ইচ্ছেমতো চাকরিচু্যতও করা হয়।

তিনি বলেন, শ্রমিকরা যাতে প্রতিবাদ করতে না পারে সে জন্য ড. ইউনূস কৌশলে প্রতি ছয় মাস পরপর আমাদের সঙ্গে চুক্তিভিক্তিক চাকরি নবায়ন করে থাকেন। এ কারণে চাকরি হারানোর ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করত না। বর্তমানে বাধ্য হয়ে আমরা শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন করেছি। এর মাধ্যমে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায় করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ন্যায্য অধিকার আদায়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল হক আমির, ইন্ডাস্ট্রিয়াল কাউন্সিল অব বাংলাদেশ মহাসচিব সালাউদ্দিন স্বপন, এ কে এম মোস্তাফা কামাল, শ্রমিক ফেডারেশনের দপ্তর সম্পাদক কামরুল হাসান প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে