বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

তরমুজচাষিদের লাভের ঘরে করোনা-জোয়ারের থাবা )

বোরহানউদ্দিন (ভোলা
  ১৫ এপ্রিল ২০২১, ১৯:৫১
তরমুজচাষিদের লাভের ঘরে করোনা-জোয়ারের থাবা )

ভোলার বোরহানউদ্দিনে তরমুজের বাম্পার ফলন হলেও করোনার কারণে লকডাউনের ফলে অধিকাংশ চাষির চালান উঠে এলেও বাজার পরিস্থিতির কারণে লাভের অঙ্গে থাবা পড়েছে। এছাড়া গত পূর্ণিমার প্রভাবে অতি জোয়ারে প্লাবিত হয়ে তরমুজ খেত পচে যাওয়ায় কিছু চাষি লোকসান গুনছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, উপজেলায় একশ ৩০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও তা প্রায় তিন গুণ ছাড়িয়ে তিন শত ৪০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। তবে কৃষকরা বলছেন, এর পরিমাণ অনেক বেশি। উপজেলার তেঁতুলিয়া নদী সংলগ্ন গঙ্গাপুর ইউনিয়নে মোট উৎপাদনের ৮০ শতাংশের বেশি তরমুজ উৎপাদন হয়।

গত দশ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বাম্পার ফলন হলেও করোনাভাইরাসের প্রভাবে বাজার চাহিদা কম থাকায় বিক্রি করতে না পারায় চাষিদের মূলধন উঠে আসেনি। তরমুজ খেতে পেকে নষ্ট হয়েছে। মূলধনের অর্ধেক টাকাও উঠে আসেনি। এ বছর চাষিরা একই পরিস্থিতির শিকার।

সরেজমিনে গঙ্গাপুরের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ পাতার চরে গিয়ে দেখা যায় কয়েক শত একর জমিতে তরমুজ খেত। ওই চরের তরমুজ খেতে চাষি তাজল শাহাবুদ্দিন জানান, ৪৬ একর জমিতে বিট ফ্যামিলি, রেড ড্রাগন ও পাকিজা জাতের তরমুজ চাষ করেছেন। ৪৮ লাখ টাকা বিনিয়োগে ৪০ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। লকডাউন না থাকলে আরও ৬০ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি হতো। এখন যানবাহন পরিস্থিতি ও বাজার চাহিদা কম থাকায় সেটা হচ্ছে না। গত বছর সাড়ে ১৩ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, জোয়ারের পানি যাতে খেতে ঢুকতে না পারে, সেজন্য চারদিকে বাঁধ দেওয়ায় ফসলের ক্ষতি হয়নি।

শিকদার চরের বাচ্চু সর্দার জানান, ৭ একর জমিতে এবার ড্রাগন জাতের তরমুজ চাষ করেছেন। খরচ হয়েছে প্রায় ৭ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে বিক্রি ৮ লাখ টাকা হতে পারে। লকডাউন না থাকলে বিক্রি আরও বেশি হতো। গত বছর একই পরিমাণ জমিতে তরমুজের বাম্পার ফলন হলেও করোনার কারণে তিন লাখ টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে।

চাষিরা জানান, প্রথমে তরমুজ নৌপথে ট্রলার দিয়ে বরিশাল অংশে নেওয়া হয়। তারপর কুমিল্লা, সিলেট, কুমারকান্দি, কাঠপট্টি, নারায়ণগঞ্জ এলাকায় পাইকারদের পৌঁছে দেওয়া হয়।

চরলতিফের চাষি লিটন মেম্বার বলেন, ১২ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। ১৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। মাত্র ২০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রির পর পূর্ণিমার অতি জোয়ারে ক্ষেত তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। একই অবস্থা পাতার চরের চাষি সিরাজ শিকদার, শহিদ শিকদার, রুবেল শিকদারসহ কিছু চাষির। ওই চাষিরা জানান, সরকার যদি তাদের পাশে না দাঁড়ায় তাহলে পথে বসতে হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারুক জানান, বাম্পার ফলন হওয়ার পরও বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে চাষিরা একটু সমস্যায়। কৃষি অফিস পরবর্তী সহায়তায় সব সময় তাদের পাশে থাকবে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে