মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

মেহেরপুরে কোল্ড ইনজুরির কবলে বোরো বীজতলা

মেহেরপুর প্রতিনিধি
  ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪:৫৯

মেহেরপুরে শৈত্যপ্রবাহে ঠান্ডা ও ঘনো কুঁয়াশায় শীতকালীন বিভিন্ন ফসল ভাল হলেও বোরো বীজতলা ক্ষতির মুখে পড়েছে। কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে নাবি বীজতলার চারা পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে বোরো ধান আবাদ করতে চারা সংকটের আশংকা করছে চাষী। তবে কৃষি বিভাগ বলছে কোল্ড ইনজুরির কারণে ধান রোপণ বা উৎপাদনের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না।

মেহেরপুর জেলায় চলতি মৌসুমে ১৯ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে। সেই লক্ষে ১ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে তৈরী করা হয়েছে বোরো বীজতলা। তবে যারা আগাম বীজতলা তৈরী করেছে তাদের বীজতলা নষ্ট হয়নি। এই শীতে অনান্য ফসল গম, সরিষা, ভূট্টা সবজি চাষ খুব ভাল হয়েছে।

কৃষকরা জানান, প্রতি কাঠা জমি বীজতলার জন্য লিজ নিতে খরচ হয়েছে এক হাজার টাকা, ৮শ টাকার বীজ, সার, সেচ, লেবার খরচ মিলে আরো হাজার টাকা খরচ করে ধানের চারা দিয়ে চারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। হিসেব মতে প্রতি কাঠা বীজতলার চারা দিয়ে চার বিঘা জমিতে ধান রোপন করা সম্ভব। বীজ তলার যে অবস্থা তাতে কারো এক বিঘা কারো কারো দুই আড়াই বিঘা ধান রোপন করা সম্ভব হবে। এদিকে গেল বছর প্রতি কাঠা জমির বীজতলার চারার দাম ছিল তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা। এবছর সেই চারা চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা কাঠা হাঁকা হচ্ছে। ফলে এতে বোরো উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে যাবে কৃষকের।

তবে কৃষি বিভাগ বলছে তাড়াতাড়ি উষ্ণ আবহাওয়া শুরু হলে চারার খুব একটা ক্ষতি হবেনা। সার বিষ দিয়ে চারাগুলো সবল হলেই রোপন করা যাবে এমন দাবী করলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। জেলার সদর, মুজিবনগর ও গাংনী উপজেলার বিভিন্ন মাঠের বীজতলা ঘুরে দেখা গেছে নাবি বীজতলার চারা নষ্ট হয়ে গেছে। যেগুলো এখনো বেঁচে আছে সেগুলো বাঁচাতে কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে ছত্রাকনাশক ¯েপ্র সহ বিভিন্নভাবে পরিচর্যা করছে কৃষকরা। এতে কতটুকু সফল হবে তারও কোন নিশ্চয়তা পাচ্ছেনা তারা।

সদর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের চাষী বদর উদ্দিন জানান, এবার সে ৪ বিঘা জমিতে ধান লাগানোর জন্য বীজতলা দিয়েছিল। আগাম দেওয়া চারা ভাল হয়েছে। তবে ঠান্ড ও কুয়াশার কারণে নাবী বীজতলার ৫০ ভাগ চারা পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এই চারাতে তার কাংখিত জমিতে ধান লাগানো হবেনা। গাংনী উপজেলার বেতবাড়িয়া গ্রামের চাষী সুবোদ মন্ডল জানান, এবার ঘনো কুঁয়াশায় ধানের চারা নষ্ট হয়ে গেছে। চারিদিকে সবার একই অবস্থা। ধানের চারা যে কিনে লাগাবো তাও হবে না।

সদর উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, প্রকৃতির উপর কারো হাত নেই। ঘন কুয়াশার কারনে চারা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কৃষকদের চারায় সালফার ও পটাশিয়াম ব্যাবহার করতে বলা হচ্ছে। প্রয়োজনে ছাত্রাকনাশক ব্যাবহারেরও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে ঠান্ডায় সমলয় পদ্ধতির বীজতলায় কোন ক্ষতি হয়নি। আগামীতে সমলয় পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন বাড়লে এ সংকট আর থাকবে না। এখন শৈত প্রবাহ কেটে যেতে শুরু করেছে। তাপমাত্রাটাও বৃদ্ধি পাবে। রোদ উঠলে সঠিক পরিচর্যায় চারা রিকভার করবে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে