বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পতনে ভালো কোম্পানি, তলানিতে লেনদেন

অর্থ-বাণিজ্য রিপোর্ট
  ২২ মে ২০২৫, ১৭:১১
পতনে ভালো কোম্পানি, তলানিতে লেনদেন
ছবি: সংগৃহীত

পতনে ভালো কোম্পানি, তলানিতে লেনদেন

অর্থ-বাণিজ্য রিপোর্ট

1

দাম বাড়ার ক্ষেত্রে এক কার্যদিবস দাপট দেখানোর পর দেশের শেয়ারবাজারে ফের অধিকাংশ ভালো কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডানের দরপতন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশিরভাগ ভালো কোম্পানির পাশাপাশি প্রায় সবকটি মিউচুয়াল ফান্ডের দাম কমেছে। ফলে বড় হয়েছে দরপতনের তালিকা। এতে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে লেনদেন তলানিতে নেমেছে। ডিএসইতে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সব থেকে কম লেনদেন হয়েছে।

শেয়ারবাজারে লেনদেনের শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টা সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকে। তবে এরপরেই একের পর এক মিউচুয়াল ফান্ড ও ভালো কোম্পানির শেয়ার দাম কমতে থাকে। যার প্রভাব পড়ে অন্যান্য খাতের ওপরও। ফলে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে সব খাত মিলে ডিএসইতে ১১৪টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২০০টির। আর ৭৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৫২টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১২৮টির দাম কমেছে এবং ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ২৪টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৪৯টির দাম কমেছে এবং ৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৩৮টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৩টির এবং ৩৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ২১টির দাম কমেছে এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

দাম কমার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকায় দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৬ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৭৮৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৭৭৭ পয়েন্টে নেমে গেছে।

সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৫৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩২৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৭২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে গত বছরের ৪ আগস্টের পর শেয়ারবাজারে সব থেকে কম লেনদেন হলো।

ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের হয়। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগের দিন ৪ আগস্ট ডিএসইতে ২০৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর টানা চার কার্যদিবস শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হয়। সেই সঙ্গে বাড়ে লেনদেনের গতি। তবে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর শেয়ারবাজারে আবার নেতিবাচক প্রবণতা দেখা যায়। কয়েক মাস ধরে চলা দরপতনের সঙ্গে এখন শেয়ারবাজারে লেনদেন খরাও প্রকোট হয়ে উঠছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে শেয়ারবাজারে সব থেকে কম লেনদেন হওয়ার দিনে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেনে হয়েছে বিচ হ্যাচারির শেয়ার। কোম্পানিটির ১৪ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৫৬ লাখ টাকার। ১০ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, শাহিনপুকুর সিরামিক, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, ব্র্যাক ব্যাংক এবং ফু-ওয়াং ফুড।

অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৭টির এবং ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে