বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে চবি শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন 

চবি প্রতিনিধি
  ২০ মার্চ ২০২৩, ১১:৪৭
ছবি-যাযাদি

টেকনাফে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।

রোববার (১৯ মার্চ) চবি বঙ্গবন্ধু চত্বরে সকাল সাড়ে এগারোটায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে প্রায় শতাধিক শিক্ষক এতে অংশগ্রহণ করেন। যারা হামলা করেছেন তারা চিহ্নিত,কোন অদৃশ্য শক্তির কারনে তারা আইনের আওতায় আসছে না দাবি মানববন্ধনের বক্তাদের।

গত মঙ্গলবার শিক্ষা সফরকালে চবি অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর 'এম ভি বে-ক্রুজ ইন্টারন্যাশনাল' জাহাজের স্টাফ কতৃক ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাঁচ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও এই ঘটনার কোন ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয় নাই। বিশ্ববিদ্যালয়লর পক্ষ থেকে কোন ধরনের মামলার কোনো দায়িত্ব গ্রহণ না করায় শিক্ষকরা এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন৷

ভুক্তভোগী শিক্ষক আফতাব উদ্দিন বলেন, হামলার সময় বিজিবি উপস্থিত থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।তাদের সাথে কি বিজিবি'র কোনো যোগসাজশ রয়েছে?দেখা যাচ্ছে আমরা বাংলাদেশের কোনো জায়গায় নিরাপদ না।আমার প্রশ্ন এই ঘটনার দোষীরা এখনো কেন নির্বিচারে ঘুরে বেড়াচ্ছে? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং এ্যলামনাইদের প্রতি আমার প্রশ্ন কেন বিচার হচ্ছে না!

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য বেনু কুমার দে বলেন,এই ঘটনার সাথে আমি একাত্মপোষণ করছি।দোষীদের বিচারের আওতাভুক্ত করার জোর দাবি জানাচ্ছি ।এই ধরনের ঘটনা যাতে আর পুনরাবৃত্তি না হয় সে বিষয়ে প্রশাসনকে আরো বেশি সচেতন হতে হবে।

অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবুল হোসেন বলেন, আমরা জাহাজের সিট বুক করেছি উপযুক্ত অর্থ প্রদান করে।তারা অধিক মুনাফার জন্য অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছিলেন।আমরা আমাদের সিটে বসার বৈধ দাবি করলেও তারা আমাদের উপর চড়াও হয়।ঝামেলা তৈরি হওয়ার পরও আমরা চাচ্ছিলাম যে মাথা ঠান্ডা রেখে সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান করার জন্য।কিন্তু তারা আমাদের কোনো কথাতে কর্ণপাত করেনি। এক পর্যায়ে আমাদের ওপর পর পর দুইবার অতর্কিত হামলা করা হয়।এই ঘটনার শুধু সুষ্ঠু বিচার নয় দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে এই বিচার নিশ্চিত হবে তা হতে পারে না। এই মামলায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করতে অনুরোধ করবো।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড.মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন,আমরা ভেবেছিলাম দ্রুত বিচার দেখতে পাবো কিন্তুু প্রশাসন আমাদের হতাশ করেছে।এটা শুধু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর হামলা না নয়, পুরো বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর হামলা।এই মানববন্ধন থেকে আমরা বলতে চাই এই মামলার বাদী প্রশাসনকে নিয়ে দ্রুত বিচারের আওতাভুক্ত করতে হবে।দ্রুত বিচার না হলে কঠিন আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হবো। কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড.মো. সেকান্দর চৌধুরী মানববন্ধনে একাত্ম পোষন করে বলেন,আমরা শুধু প্রশাসনে আলোচনা চাই না,আমরা চাই দ্রুত বিচার।আজীবনের জন্য এম ভি বে-ক্রুজ ইন্টারন্যাশনাল' জাহাজের লাইসেন্স বাতিল করতে হবে।রাষ্ট্র যদি একটি নিরাপদ শিক্ষা সফরের নিশ্চয়তা দিতে না পারে তাহলে বড়ই দুঃখজনক।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল হকের সঞ্চলনায় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতির যুগ্ন সাধারন সম্পাদক আদনান মান্নান,সদস্য রাকীবা নবী,ফরিদুল আলম,এনায়েতুল্লাহ পাটোয়ারি, মাসুদ আল আযাদ,আইন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক আবু নোমানসহ অর্থনীতি বিভাগ এবং অন্যান্য বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে