সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩, ১৮ আশ্বিন ১৪৩০
walton

ইবি ছাত্রলীগ সহ-সভাপতির বিরুদ্ধে ড্রাইভারকে মারধরের অভিযোগ 

ইবি প্রতিনিধি
  ০১ জুন ২০২৩, ০৯:৫৯

কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কে চলাচলকারী গড়াই পরিবহনের বাস ড্রাইভারকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি বনি আমিন ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।

বুধবার (৩১ মে) দুপুর পৌনে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী বাস চালক তোফাজ্জল হোসেন সবুজ।

এদিকে এর প্রতিবাদে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ বাস শ্রমিকরা। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তীব্র যানজটসহ দূর্ভোগে পড়েন যাত্রী ও পথচারীরা।

পরে শৈলকূপা ও ইবি থানার পুলিশের মাধ্যমে বাস মালিক সমিতির নেতাদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সমঝোতায় প্রায় দেড় ঘন্টা পর অবরোধ তুলে নেয়া হয়।

ভুক্তভোগীর অভিযোগপত্র সূত্রে, কুষ্টিয়া থেকে ক্যাম্পাসে আসার জন্য গড়াই বাসে ওঠেন বনি। বটতৈল থেকে তিনটি মেয়ে খুলনায় যাওয়ার জন্য বাসে উঠলে তাদের বসাতে ওই ছেলেটিকে ছিট ছেড়ে দিতে অনুরোধ করলে তিনি বলেন, ধরে ধরে পথ থেকে লোক নিয়ে আসবেন আর আমরা সিট ছেড়ে দেব কেন? তখন এ নিয়ে উভয়ের মাঝে হালকা কথা কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে পরে বাস ক্যাম্পাস গেইটের সামনে পৌঁছালে বনি, জামিল ও তার চার পাঁচজন বন্ধু মিলে বাটাম দিয়ে ড্রাইভারের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। এছাড়া গাড়ির সুপারভাইজার ও হেলপারদেরও বেধড়ক মারধর করে। এসময় তার পকেটে থাকা পনেরো হাজার টাকা তারা নিয়ে নেয় বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

ভুক্তভোগী তোফাজ্জল বলেন, “আমি তাকে সুন্দর করে বলেছিলাম যে মেয়েটাকে সিটে বসতে দেওয়ার জন্য। এসময় তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। পরে এটা নিয়ে ফোনে আরও চারজনকে ডেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইনগেইটের সামনে সবাই মিলে আমাকে গরু মারার মতো মারলো। ফুটবলের মতো আমার মুখের দুইপাশে অনবরত লাথি মারছে তারা। শুরুতে দুই তিন বার রড দিয়ে যেভাবে মেরেছিলো, আমি যদি হাত দিয়ে না আটকাতাম তাহলে মাথায় লেগে আমি সেখানেই মারা যেতাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীদের দ্বারা এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই মানা যায় না। আমি তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।”

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি বনি আমিন বলেন, “বাসে আমার সিটে ড্রাইভার অন্য একজনকে বসাতে চায়। এটা নিয়ে তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। সে আমার সাথে বেয়াদবি করছিলো। পরে ক্যাম্পাসের সামনে আসলে ১মিনিট কথা বলার জন্য আমি ওনাকে নিচে নামতে বলি। কিন্তু তিনি নিচে নামতে রাজি না হয়ে উল্টো 'কেন নামবো, কি জন্য' বলে চিল্লাচিল্লি শুরু করলে আশপাশে লোকজন জড়ো হয়ে যায়। তখন সেখান কারা কারা ছিলো তারা ওনাকে মারধর করে। এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। আর ওনার সাথে তো আমার কোনো শত্রুতাও নেই।”

এদিকে এ ঘটনায় ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীনকে আহবায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া কমিটিতে সদস্য হিসেবে সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম এবং সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা আবদুস সালাম। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার বিষয়ে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, “ভুক্তভোগী যারা রয়েছেন আমরা তাদের নিয়ে আলোচনায় বসেছিলাম। তাদের অভিযোগ শুনেছি। তারা মারধরকারী ৪/৫ জন ছিলো বলেছে। এর মধ্যে দুইজনের নাম বলেছে। আমরা প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করতে এবং তাদের অপরাধের মাত্রা নির্ধারণ করতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।”

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
shwapno

উপরে