শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কেরাণী তৈরির শিক্ষা দিয়ে একটি স্বাধীন দেশ গড়ে তোলা যায় না : চবিতে শিক্ষামন্ত্রী

চবি প্রতিনিধি
  ০৪ জুন ২০২৩, ১৯:২০

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন,বঙ্গবন্ধু তার পাকিস্তানের পুরো ২৩ বছরে বাঙালির জন্য একটা স্বাধীন রাষ্ট্রের চিন্তা করেছেন।এই লক্ষ্যেকে সামনে রেখে এগিয়ে গেছেন।শিক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করার জন্য সব সময় তিনি জোর দাবি জানিয়ে আসছেন। তিনি বলেছেন কেরাণী তৈরির শিক্ষা দিয়ে একটি স্বাধীন দেশ গড়ে তোলা যায় না।বিশ্ববিদ্যালয় হবে মুক্তবুদ্ধি চর্চার জায়গা।কোন লেজুড়বৃত্তি থাকবে না।বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর শিক্ষার যে উন্নতি হওয়ার কথা ছিলো তা কিছুই হয় নাই।প্রাথমিক থেকে একদম উচ্চতর পর্যন্ত কোথাও না। শেখ হাসিনার হাত ধরে আমরা জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছি। প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন এগিয়েছে।

রবিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন,আমাদের প্রতিটা ক্ষেত্রে স্মার্ট নাগরিক হতে হবে আর তার জন্য চাই স্মার্ট শিক্ষা। আমাদের শিক্ষায় নতুন শিক্ষাক্রম প্রনয় করেছি।বঙ্গবন্ধু যেমন শিক্ষা ব্যবস্থা চেয়েছেন তেমনটা করার চেষ্টা করছি।শিক্ষকদের বলবো প্রতিটি শিক্ষার্থীকে প্রযুক্তির শিক্ষা দিন।বর্তমান প্রযুক্তির যুগ সেটা খেয়াল রাখতে হবে। গবেষণায় মনোযোগী হয়ে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে মানবসম্পদে পরিনত করতে হবে।

একই অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন। তিনি বলেন,আমাদের শিক্ষকরা এখন চাকরি করেন, শিক্ষকতা করেন না।শিক্ষকরা এখন রাজনৈতিক নেতাদের কাছে গিয়ে বসে থাকেন।আমরা শিক্ষকতা করেছি রাজনীতি করি নাই।

বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে যতগুলা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আছে তার কোনোটাতেই বাংলা বিভাগ ও ইতিহাস বিভাগ নেই।এটাকে দেশদ্রোহিতা বলে আমি মনে করি।আমাদের ভুলে গেলে চলবে না বঙ্গবন্ধু দুইটা বিষয় শিখিয়েছে একটা হলো শিক্ষা আর ভাষা।আমরা মুখে মুখে বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রেম দেখি কিন্তু এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে নিয়ে কোন গবেষণা হয় না।

অধ্যাপক ড. সুকান্ত ভট্টাচার্য ও ড. নাজনীন নাহার ইসলামের সঞ্চালনায় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন চবি প্রক্টর ড. নুরুল আজীম শিকদার।এর আগে এর আগে জাতীয় সংগীত পরিবেশনা ও ধর্মিয় গ্রন্থ পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহবুবুল হক ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী প্রমুখ।

সেমিনার শেষে শিক্ষামন্ত্রী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস অনুষদে গিয়ে একাডেমিক ক্ষেত্রে দেশের প্রথম অত্যাধুনিক সমুদ্র গবেষণা কেন্দ্র উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশের সমুদ্র সম্পদের টেকসই ব্যবহারে প্রয়োজনীয় দক্ষ মানবসম্পদ তৈরীর পাশাপাশি নানামুখী সমুদ্র গবেষণার মাধ্যমে দেশের প্রাচীনতম এই ইনস্টিটিউট বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের পরিবেশ রক্ষা ও সুনীল অর্থনীতি প্রসারে অনন্য অবদান রেখে চলেছে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস কানাডা সরকারের সহযোগিতায় সমুদ্র বিজ্ঞান বিষয়ক দেশের একমাত্র বিদ্যাপীঠ হিসেবে ‘মেরিন বায়োলজী বিভাগ’ নামে ১৯৭১ সালে যাত্রা শুরু করে।যা সর্বশেষ ২০১৭ সাল থেকে ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস নামে স্বতন্ত্র শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

যাযাদি/এসএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে