সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

পবিপ্রবি শিক্ষক তালাবদ্ধ, শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন ও ক্লাস পরীক্ষা বর্জন

পবিপ্রবি প্রতিনিধি
  ১৬ আগস্ট ২০২৩, ১৯:৩৭

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(পবিপ্রবি) কীটতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড.এস এম হেমায়েত জাহানকে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কক্ষে তালাবদ্ধ করে আটকে রাখার ঘটনায় প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। উক্ত ঘটনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতিকে দায়ী করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক অধ্যাপক ড.হেমায়েত জাহান।

অন্যদিকে, আজ (১৬ আগষ্ট) এ ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন এবং অর্ধ-দিবস ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

আজ (বুধবার) বিশ্ববিদ্যালয় কৃষি অনুষদের সামনে দুপুর সাড়ে ১২টায় শিক্ষক সমিতির ব্যানারে এ প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন শিক্ষক নেতারা। একইসাথে এ ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত শাস্তির আওতায় না আনলে কঠোর কর্মসূচীতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। পরবর্তীতে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে রেজিস্ট্রার বরাবর একটি স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছে।

মানববন্ধনে পবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান মিয়া (মুন্না)তার বক্তব্যে বলেন, "ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কে এ ধরণের ঘটনা কোন ভাবেই কাম্য নয়। এর প্রতিবাদে আমরা আজ অর্ধ-দিবস ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ঘটনার সুষ্ঠ বিচার ও তদন্তে প্রশাসনের কাছে আজ স্মারকলিপি দিয়ে কয়েকদিন সময় দিব।"

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক জেহাদ পারভেজ তার বক্তব্যে বলেন,"বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দূর্বলতার ফসল এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। এ ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে সেজন্য ধারাবাহিকভাবে কিছু কর্মসূচী ঘোষণা করেছি। আমাদের দাবি মেনে না নিলে কঠোর কর্মসূচি হাতে নিব।"

এ ঘটনায় অধ্যাপক ড. হেমায়েত জাহানের ভাষ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর তার কাছে এসে ৬ষ্ঠ সেমিস্টারের ছাত্রী সিনথি কানিজ ফারহান নামক এক ছাত্রীকে অযৌক্তিকভাবে পাস করিয়ে দিতে জোর করেন। তাতে রাজি না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষককে হুমকি দেন ছাত্রলীগের ঐ নেতা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. হেমায়েত জাহান বলেন, "ছাত্রলীগ সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন আইন নাই সাগর যা বলবে ঐটাই আইন। এই বেআইনি দাবি না মানায় রুমে তালা দেওয়ার মূল কারন হিসেবে আমি ধারণা করছি"

তিনি আরও বলেন, "কয়েকদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউট্যাবের কমিটির হয়েছে যার সাধারণ সম্পাদক আমি। এ জন্য রুমে তালা দিলেও দিতে পারে"

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর বলেন, ""অধ্যাপক ড. হেমায়েত জাহান আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে ছাত্রলীগকে বিতর্কিত ও ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে ষড়যন্ত্র করছেন। তিনি আরো বলেন, ঐ শিক্ষকের সাথে তার রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিন্ন হওয়ায় ঐ শিক্ষক তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ দিয়েছেন।"

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, গত ১৪ আগস্ট(সোমবার) দুপুর ২:৪০ মিনিটে কতিপয় শিক্ষার্থী ইউট্যাবের সাধারণ সম্পাদক ও কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম হেমায়েত জাহানকে অফিস কক্ষে কর্তব্যরত অবস্থায় বাহির থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন। মুঠোফোনে খবর পেয়ে উক্ত বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিক্ষকের উপস্থিতিতে কর্মচারীগন তালা ভেঙ্গে উক্ত শিক্ষককে মুক্ত করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন, "শিক্ষকের কক্ষে তালা দেওয়ার ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বব্যস্থা গ্রহণ করা হবে"

যাযাদি/এসএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে