শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

জাবিতে প্রভোস্ট অফিসে শিক্ষার্থীদের তালা 

জাবি প্রতিনিধি
  ০২ অক্টোবর ২০২৩, ১৭:৪০
জাবিতে প্রভোস্ট অফিসে শিক্ষার্থীদের তালা 
জাবিতে প্রভোস্ট অফিসে শিক্ষার্থীদের তালা 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ সালাম-বরকত হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সুকল্যাণ কুমার কুন্ডুর দায়িত্বহীনতাকে উল্লেখ করে পদত্যাগ দাবিতে মানববন্ধন করেছেন হলটির আবাসিক শিক্ষার্থীরা। রোববার রাত ১১টায় হল ফটকের সামনে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা প্রভোস্ট অফিসে তালা লাগিয়ে দেন। তবে এর পেছনে ছাত্রলীগের বিভিন্ন অনায্য দাবি-দাওয়া রয়েছে বলে জানা গেছে।

শিক্ষার্থীদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে হলের অভ্যন্তরে শিক্ষার্থীদের সুপেয় পানির ব্যবস্থায় ফিল্টার স্থাপন, লাইব্রেরির আধুনিকায়ন, ডাইনিং-ক্যান্টিনের খাবারের মানোন্নয়ন, গেস্টরুম, ওয়াশরুম ও হলে প্রবেশের রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসলেও প্রভোস্ট তা বাস্তবায়ন করছেন না।

এছাড়া প্রভোস্ট নিয়মিত হলে আসেন না বলে অভিযোগ তাদের। মানববন্ধন পরবর্তী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে এসব দাবি না মানা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অফিসে তালা লাগিয়ে দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

আইন ও বিচার বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ সৌভিক বলেন, আমাদের হলের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো না। সামান্য বৃষ্টি হলেই হলের সামনে পানি জমে থাকে। প্রভোস্ট এতদিন ধরে দায়িত্ব পালন করেও হলের উন্নয়নে কোন কাজ করেনি। আমরা এই প্রভোস্টের পদত্যাগ চাই।

এদিকে শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা পোষণ করে মানববন্ধনে অংশ নেন জাবি শাখা ছাত্রলীগের শহীদ সালাম-বরকত হল ইউনিট। শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাসুফ আহমেদ বলেন, ‘বৃষ্টি হলে হল গেইটের রাস্তা দিয়ে হাঁটা যায় না। তাহলে হলের সামনে এই দৃষ্টিনন্দন গেইট দিয়ে কি লাভ হল? সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে হল ছাত্রলীগ প্রভোস্ট স্যারের কাছে বারবার এসব দাবি নিয়ে গিয়েছি। হলের অভ্যন্তরীণ নানা সমস্যা সম্পর্কে বারবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছি। কিন্তু কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি।

প্রভোস্ট অধ্যাপক সুকল্যাণ কুমার কুন্ডু বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়াকে ফেলে দেওয়া যায় না। উপাচার্যের সাথে কথা বলেছি। দুই-তিন দিনের মধ্যে হল গেটের সামনে কাজ শুরু হবে। তবে তারা যে মানববন্ধন করবে ও অফিসে তালা দিতে যাচ্ছে তা আমাকে জানায়নি। আমি হলে যাইনা, খোঁজ নিই না এগুলো মিথ্যা। ইচ্ছা থাকা সত্বেও বরাদ্দ না দেওয়ায় কোন কাজ করতে পারিনি।’

তবে বেশ কয়েকটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে ভিন্ন কথা। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, বিভিন্ন সময়ে অন্যায্য দাবি-দাওয়া না মানায় প্রভোস্টের উপর ক্ষুব্ধ হল ছাত্রলীগ। সম্প্রতি হল সংলগ্ন কয়েকটি নতুন দোকান বরাদ্দে হল ছাত্রলীগ তাদের দাবি-দাওয়া পেশ করলেও প্রভোস্ট তা মেনে নেননি।

তাছাড়া গত সপ্তাহে হলের দুটি পদে একজন ক্লিনার ও একজন সুইপার নিয়োগের সার্কুলার প্রকাশিত হয়। আবার পিয়ন ও মালি পদে দুইজনকে নিয়োগের চাহিদা হল থেকে পাঠানো হয়েছিল। এসব পদে নিয়োগে আর্থিক সুবিধা দাবি করেন হল ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী ও কর্মচারীদের একাংশ। তবে হল প্রভোস্ট এমন অনায্য দাবি মেনে না নেয়ায় তাকে চাপে রাখতে কৌশলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামে মানববন্ধন করিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হল ছাত্রলীগ নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক আরাফাত ইসলাম বিজয় বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি পক্ষ আমাদের বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। আর্থিক সুবিধা বা চাকরি সংক্রান্ত কোন আলাপ হয়নি।’

তবে এ ব্যাপারে প্রভোস্ট অধ্যাপক সুকল্যাণ কুমার কুন্ডু স্পষ্টভাবে কোন কিছু বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘এগুলো তো বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়। এমনটা ঘটে। দেখা যাক, কি হয়।’

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে