শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

জাবিতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের নতুন সংগঠন

জাবি প্রতিনিধি
  ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১৭:৫১
জাবিতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের নতুন সংগঠন
জাবিতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের নতুন সংগঠন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলমের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি ও বিতর্কিত শিক্ষকদের পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ এনে নতুন সংগঠন তৈরি করেছেন আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের একাংশ। নয় সদস্যবিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠনের মাধ্যমে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিক্ষক পরিষদ’ নামে এ সংগঠনটি আত্মপ্রকাশ করেছে। কমিটিতে ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অধ্যাপক ড. মোতাহার হোসেনকে আহ্বায়ক ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. খোঃ লুৎফুল এলাহীকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সংগঠনটি থেকে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নতুন সংগঠনের ব্যাপারে নিশ্চিত করা হয়। এর আগে, ২০১৮ সালে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’ নামে একটি সংগঠন গঠন করেন।

আহবায়ক কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ, আইবিএ’র অধ্যাপক ড. আইরিন আক্তার, সহযোগী অধ্যাপক আলমগীর হোসেন, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মালিহা নার্গিস আহমেদ, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শামীমা নাসরীন জলি, ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাসুদা পারভীন এবং জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিনা ইসলাম।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণের পর কতিপয় সুবিধাবাদী শিক্ষকের ইন্ধনে আওয়ামীপন্থী জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের আস্থায় না নিয়ে ক্ষমতার প্রভাব খাটায় এবং গত বছরের ১১ অক্টোবর স্বজনপ্রীতি ও বিতর্কিতদের দিয়ে সংগঠনটির নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন করেন। এতে তিনি নিজের ব্যক্তি ও সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর স্বার্থ হাসিলে সংগঠনটিকে ব্যবহার করতে চরম স্বেচ্ছাচারী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। দায়িত্ব গ্রহণের শুরুতেই উপাচার্য বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের আহবায়ক কমিটি গঠনে স্বজনপ্রীতি দেখান ও বিতর্কিতদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করেন। এতে প্রকৃত আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা মর্মাহত হয়েছেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে বিতর্কের বিষয়টি উল্লেখ করে বলা হয়, গত এক বছরে বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে উপাচার্য ভীষণভাবে বিতর্কিত হয়েছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ও বাইরে দল ও সরকারের ভাবমূর্তি ভীষণভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এমনকি সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর স্বার্থ হাসিলে তিনি সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদে পদোন্নতির নির্বাচনী বোর্ডে যোগ্য ও জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের বাদ দিয়ে একাডেমিক ইথিকস ও পেশাদারিত্বের অভাব দেখিয়েছেন।

সাম্প্রতিক সময়ে উপাচার্য নিয়োগে অনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠে। এ সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগে অনৈতিক প্রভাবের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। উপাচার্য নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে এ ধরণের বক্তব্য পুরো বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার, উপাচার্য পদ ও সরকারের জন্য ভীষণ অসম্মানজনক ও বিব্রতকর। আমরা বিশ্বাস করতে চাইনা যে, এ অভিযোগ সত্য। তবে উপাচার্য নিয়োগে অনৈতিক প্রভাবের যে অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখার জন্য আমরা রাষ্ট্রের যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।’

নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘যাদেরকে কখনো জাতীয় রাজনৈতিক কর্মকান্ডে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি, তারাই তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য উপাচার্যকে ক্রীড়নকে পরিণত করেছে। সর্বোপরি, বিশেষ সুবিধাবাদী গোষ্ঠী ও উপাচার্যের এসকল বিতর্কিত কর্মকান্ড জাতীয় অঙ্গনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ও বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে ও করছে। পরিবর্তনের আশায় আমরা এক বছর অপেক্ষা করেছি। কিন্তু সকলের আশা হতাশায় পরিণত হয়েছে।’

তাছাড়াও আসন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে নবগঠিত সংগঠন অংশগ্রহণ করবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

নবগঠিত সংগঠনের আহবায়ক অধ্যাপক মোতাহার হোসেন বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুর মহান আদর্শকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকের কাছে নির্মোহভাবে উপস্থাপন করতে চাই। এই নতুন সংগঠন নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে কার্যক্রম পরিচালনা করবে। আসন্ন সিনেট নির্বাচনে সকলের সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করছি।’

এর আগে, গত বছরের ১১ অক্টোবর উপাচার্য তাঁর আপন ছোট ভাই পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এ মামুনকে আহবায়ক এবং সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক বশির আহমেদকে সদস্য সচিব করে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’র পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে