ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগে এক নবীন শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের অভিযোগে বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে ২জনকে স্থায়ী ও ৩ জনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এদিকে র্যাগিংকাণ্ডে পাঁচ ছাত্রকে বহিষ্কারাদেশের প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার বিকেল ৪ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক অবরোধ করে রাখেন তাদের সহপাঠীরা। এসময় প্রায় দুই ঘন্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বহনকারী বাসগুলো আটকা পরে।
এদিকে আন্দোলনকারীরা ৩ দফা দাবিতে কর্তৃপক্ষকে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন। দাবিগুলো হলো, ১. বিচার কাজে নিয়োজিত তদন্ত কমিটি পরিবর্তন করে নতুন তদন্ত কমিটি আনতে হবে, ২. প্রক্টর স্যার অফিসিয়াললি বক্তব্য দিবেন যে তিনি পূর্বে যা বলেছেন তা আন-অফিসিয়াল কথা ছিল। আর যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা প্রাথমিক সিদ্ধান্ত ছিল চূড়ান্ত নয় এবং ৩. যে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হিসেবে এ শাস্তির( স্থায়ী বহিষ্কার) আওতায় যেন না আনা হয়।
পরে প্রক্টরিয়াল বডির আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনকারীরা বলেন, আত্মপক্ষ সমর্থন ছাড়াই তাদেরকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। আমরা মনে করি এটা সম্পুর্ণ নিয়ম নীতির বাহিরে। ভূয়া তদন্তের মাধ্যমে তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বহিষ্কারের মাধ্যমে তাদের জীবনকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এখন যদি সে আত্মহত্যা করে এর দায়ভার কে নিবে?
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, তারা ভুল বুঝেছে। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হবে। আজকের সভায় তদন্ত প্রতিবেদনগুলো পর্যালোচনা ও সুপারিশ করা হয়েছে। এর আলোকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য চিঠি দেওয়া হবে। এছাড়া তাদেরকে স্ব শরীরে ডাকাও হবে। তারপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এর আগে মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় উপাচার্যের কার্যালয়ে মেডিক্যাল ভাঙচুর ও র্যাগিংয়ের ঘটনায় ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ছয় শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এতে তিনজনকে স্থায়ী বহিষ্কার ও বাকি তিনজনকে ১ বছরের জন্য সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন।
এদিকে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের প্রমাণ পাওয়ায় ও তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ২ শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়। তারা হলেন - হিশাম নাজির শুভ ও মিজানুর রহমান ইমন। এছাড়া এক বছর বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, শাহরিয়ার পুলক, শেখ সালাউদ্দীন সাকিব ও সাদমান সাকিব আকিব। তারা সকলেই ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এছাড়া মেডিক্যাল ভাংচুরের ঘটনায় আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্যের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হওয়ায় তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তার সাথে থাকা অন্য দুই শিক্ষার্থী সালমান আজিজ, আতিক আরমান কাব্যের সঙ্গে থাকলেও সরাসরি সংশ্লিষ্ট না থাকায় তাদের সতর্ক করা হয়েছে।
যাযাদি/ এম