সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

৬ মাস আগে টাকা দিয়েও পায়নি সিট, প্রশ্ন করায় চটলেন হল প্রভোস্ট

যবিপ্রবি প্রতিনিধি
  ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ১৩:০০

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ছাত্রদের একমাত্র আবাসিক হলে আসন বরাদ্দের টাকা নিয়ে প্রায় ৬ মাসেও সিট না দেওয়ায় প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে শহীদ মসীয়ূর রহমান (শমর) হল প্রশাসনের বিরুদ্ধে ।

প্রায় ৬ মাস আগে দেড়শত এর অধিক শিক্ষার্থী কক্ষ বরাদ্দের জন্য দুই হাজার চারশত নব্বই টাকা করে হলের একাউন্টে জমা দিলে কক্ষ বরাদ্দের তালিকা প্রকাশ করে হল প্রশাসন। কিন্তু এর পরে ৬ মাস পেরোলেও অনেক শিক্ষার্থী হলেই উঠতে পারেননি।

শিক্ষার্থীদের দাবি শ.ম.র হল অফিসের কর্মচারী সহ হল প্রভোস্টের সাথে যোগাযোগের পরেও তাদের সিটের ব্যবস্থা করা হয়নি। সিট দিতে না পারলে হল প্রশাসন কেনো টাকা নিয়েছেন এমন প্রশ্ন তুলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সিটবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা বলছেন, ব্যর্থ হল প্রশাসকের কারণেই তারা তাদের সিট বুঝে পাচ্ছেন না।

এ বিষয়ে সিট বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের জানান, বড় ভাইদের কক্ষে আমাদের অনেকেরই আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আমরা বরাদ্দকৃত কক্ষ দেখতে গেলে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি বড় ভাইয়েরা। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে হল প্রশাসনের কাছে বারবার মৌখিকভাবে জানিয়েও কোন প্রতিকার পায়নি বরং কয়েকজন শিক্ষার্থীকে হুমকি দিয়েছেন স্বয়ং প্রভোস্ট। প্রভোস্টের হুমকির কথা অন্যান্য সিটবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা জানতে পারলে আর অভিযোগ দেওয়ার মত সাহস পায়নি তারা।

এ বিষয়ে একজন সাংবাদিক ফেসবুকে লেখালেখি করলে তাকে হুমকি ধামকি সহ দেখে নেওয়ার কথা বলেন প্রভোস্ট ড. মোঃ আশরাফুজ্জামান জাহিদ।

বরাদ্দকৃত আসনে উঠতে না পেরে হল প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে এক শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের হলে উঠার জন্য নিদিষ্ট পরিমান টাকা আগে জমা দিতে হয়েছে। বলা হয়েছিল আমাদের পরের মাসে বরাদ্দকৃত সিট দেওয়া হবে। আমি সে অনুযায়ী ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে হলে সিটের জন্য আবেদন করি এবং মেস ছেড়ে দেই। তারপরের মাসে নোটিশের মাধ্যমে জনতে পারি, আমার নামে সিট বরাদ্দ হয়েছে। জানার পরে আমি আমার নামে বরাদ্দকৃত রুমে যাই কিন্তু গিয়ে দেখি সেখানে আগে থেকে পাঁচ জন আছে। আমাকে সেই কক্ষে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি। দরজা থেকে বের করে দিয়ে আমার মুখের উপর দরজা আটকে দেওয়া হয়। এ অবস্থা দেখে হলে উঠার সাহস পাইনি। আজ প্রায় ছয়-সাত মাস হতে যাচ্ছে এখনো উঠতে পারিনি। হল প্রশাসন কে আজ পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নিতে দেখিনি বহিরাগতের কক্ষ ছাড়ার বিষয়ে। সিট দিতে না পারলে আমাদের থেকে টাকা নিলেন কেনো? ৬ মাসেও আমাদের সিটের ব্যবস্থা না করে, টাকা নেওয়া হল প্রশাসনের প্রতারণা নাকি সিট বাণিজ্য?

আরেক শিক্ষার্থী জানায়, আমরা ৩ বন্ধু বরাদ্দকৃত রুমে ঢুকতে গেলে দেখা যায় সেই রুমে চার জন আগেই বরাদ্দকৃত আছে। এ বিষয়ে হল হল প্রভোস্ট স্যারকে মৌখিকভাবে জানানো হলে, স্যার বলেন দ্রুতই আমাদের রুম দিবেন। এ আশ্বাসে আমরা মেস ছেড়ে হলে চলে আসি। নির্দিষ্ট সিট না পেয়ে সিনিয়র ভাই বা বন্ধুর সাথে সিট শেয়ার করে হলে থাকি। এখন সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে এই কষ্টটা আরো তীব্র হয়েছে। টাকা জমা দিয়েও আমাদেরকে হলে এক ধরনের মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে। এ দায় হল প্রশাসন এড়াতে পারে না। আড়াই হাজার টাকা জমা নিয়েও সিট না দেওয়া হল প্রশাসনের এমন কাজ প্রশ্নবিদ্ধ থেকে যায়।

শমর হলের সমস্যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে সাগর হোসেন নামে শিক্ষার্থী মন্তব্যের ঘরে (কমেন্ট বক্স) জানায়, অ্যালোটমেন্টের টাকা দিয়েও অ্যালোটেড (বরাদ্দকৃত) রুমে উঠতে না পেরে গিয়েছিলাম প্রভোস্ট স্যারের কাছে, কিন্তু স্যার আমার সমস্যার কথা শুনে যে উত্তর দিয়েছিলেন তাতে হলে থাকার ইচ্ছা শেষ হয়ে গেছে, তাই সিট বাতিল করে দিয়ে এসেছি।

রুম বরাদ্দ সহ হলের সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে হলের প্রভোস্ট ও সহকারী প্রভোস্টরা সাংবাদিকদের উপর মেজাজ হারিয়ে কোন তথ্য দিবেন না বলে জানান এবং একপর্যায়ে অশোভন ও অপেশাদার আচরণ করেন।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে