নিজ নেতৃত্বগুণে বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেছিলেন বিশ্ববরেণ্য নেতা শেখ মুজিবুর রহমান বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু বাঙালি জাতির জনকেই পরিণত হননি, বাঙালির বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেছিলেন বিশ্বের নির্যাতিত মানুষের মুক্তিসংগ্রামের নেতা। তাঁর নেতৃত্বে সংগঠিত বাঙালির স্বাধীন সংগ্রাম হয়ে উঠেছিলো বিশ্বের নির্যাতিত মানুষের মুক্তিসংগ্রামের প্রেরণার উৎস। বিশ্ব নেতারাও বঙ্গবন্ধুকে সেভাবেই দেখেছেন এবং মূল্যায়ন করেছেন। তাদের মূল্যায়নের মধ্য দিয়েই বিশ্ব পরিসরে বঙ্গবন্ধুর উচ্চতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রাষ্ট্রীয় গণ্ডি পেরিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই হয়ে উঠেছিলেন জনপ্রিয় বিশ্বনেতা।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রশাসন আয়োজিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৫তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশুদিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন সমাজবিজ্ঞানী ড. মশিউর রহমান। ১৭ মার্চ বিকাল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনার কক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন বশির আহমেদের সভাপতিত্বে এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা- কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য আরও বলেন, ‘১৯৭৫ সালে এদেশের কিছু বিপথগামী মানুষ দেশকে পিছিয়ে দিতেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে শুধু বাংলার অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে নয় বরং তারা সমগ্র বিশ্বের তৃতীয় অর্থনৈতিক বিপ্লবকে বাধাগ্রস্ত করেছে। এই বিপথগামী মানুষেরা চীন, পাকিস্তান এবং আমেরিকার দোসর হিসেবে কাজ করছে। তবে আজ স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর বঙ্গবন্ধুকন্যা তাঁর আদর্শকে ধারণ করেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করেই তিনি বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করবেন। ’
ড. মশিউর রহমান আরও বলেন, ‘নৃশংসভাবে হত্যার পরও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের কবর একসঙ্গে হতে দেয়নি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঘাতকেরা। একটি বাঙালি মুসলিম পরিবারের খুবই স্বাভাবিক চাওয়া- দম্পতি একসঙ্গে মৃত্যুবরণ করুক বা আলাদা করুক অন্তত কবর দু’টো যেন একসঙ্গে হয়। কতটা পরিকল্পিত ও নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড, বঙ্গবন্ধুকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। আর রেনুকে দাফন করা হয় বনানীতে। এর মধ্য দিয়ে বিভেদ তৈরির চেষ্টা হয়েছে। মূলত মুজিব- রেনুর শক্তিমত্তাকে বিলীন করার চেষ্টা করা হয়েছিল। সেটি কী পেরেছে? নাকি উল্টো পথে হত্যাকারীদের প্রতিঘাতের জায়গায় দাঁড়িয়ে তাদের প্রতি তীব্র ঘৃণা জানিয়ে আজ বনানীর কবরস্থান আর টুঙ্গীপাড়ার কবরস্থান বাঙালির জন্য তীর্থ, পবিত্রতম আলিঙ্গনের জায়গা, ফুল দেবার জায়গায় পরিণত হয়েছে।’
আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক, উপ-উপাচার্য শিক্ষা অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার প্রমুখ।
যাযাদি/এসএস