শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

প্রথম হয়ে যাব বুঝতে পারিনি : জাইমুন

যাযাদি ডেস্ক
  ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৪:৪৪
জাইমুন ইসলাম

২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে গত ২৯ অক্টোবর। এতে প্রথম হয়েছেন ময়মনসিংহের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পেরোনো জাইমুন ইসলাম। ১০০ নম্বরের মধ্যে ৯৬.৫০ পেয়েছেন তিনি। তবে প্রথম হবেন, এটা বুঝতে পারেননি তিনি।

পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল গত ২০ জুলাই। সেই পরীক্ষা হলো ২৫ অক্টোবর। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ফল হাতে পেলেন। তাই এমন সাফল্য দেখে তিনি যেমন খুশি, সঙ্গে পরিবারও।

জাইমুন ইসলাম বলেন, ভালো প্রস্তুতি ছিল। ভালো করব, এটা জানতাম। পরীক্ষা দেওয়ার পর বুঝতে পারি, ফলটাও ভালো হবে। তাই বলে প্রথম হয়ে যাব বুঝতে পারিনি। প্রথম হয়ে যতটা না আনন্দিত হয়েছি, তার চেয়ে বেশি ভালো লেগেছে পরিবারের সদস্যদের খুশি দেখে।

প্রথম হওয়ার পেছনে যাদের অবদান, তা নিয়ে তিনি বলেন, প্রথম হওয়ার ক্ষেত্রে একক কৃতিত্ব দিতে হলে আমার দাদাকে দিতে হবে। তিনি ময়মনসিংহের ফুলপুরের একজন ব্যবসায়ী। ২০১৮ সালে বাবা মারা যাওয়ার পর আমার ও আমার পরিবারের খরচ থেকে শুরু করে সব দেখভাল তিনিই করেন। স্কুল-কলেজে ভালো ছাত্র ছিলাম। সবার প্রত্যাশাও তাই বেশি ছিল। উচ্চমাধ্যমিকে দেখা গেল কাঙ্ক্ষিত ‘গোল্ডেন এ প্লাস’ আসেনি। সবার মন খারাপ দেখে একটু হতাশই হয়েছিলাম। যার সরাসরি প্রভাব বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার ওপরও পড়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাইনি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পেছনের দিকে ছিলাম। জিএসটি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় মেধাক্রম এল ২৭০০। দাদা তখনো ভালো-মন্দ কিছু বলেননি।

এদিকে আমি অপরাধবোধে ভুগছিলাম যে তিনি আমাদের জন্য এত কিছু করছেন অথচ আমি একটা ন্যূনতম ভালো ফল করে তাকে দেখাতে পারছি না। নিজেকে ছোট মনে হচ্ছিল খুব। আমাকে ভালো কিছু করতেই হবে, সেটাই ছিল আমার ঘুরে দাঁড়ানোর প্রেরণা।

কোনো নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল কি না, এ বিষয়ে জাইমুন বলেন, মূল লক্ষ্য ছিল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। ইংরেজিতে ‘এ মাইনাস’ আসায়, সেই পথে এগোইনি। ভেবেছিলাম পরীক্ষাই দিতে পারব না। পরে প্রকৌশল গুচ্ছতে পরীক্ষা দিতে পারলেও ভালো কিছু হয়নি।

প্রস্তুতির বিষয়ে তিনি বলেন, কৃষি গুচ্ছের পরীক্ষার আগে নিয়মিত পড়াশোনা করছিলাম। যখন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন হলো, তখন পড়াশোনায় একটা ছেদ পড়েছিল। এরপর আবার শুরু করলাম। ব্যাপকভাবে না হলেও নিয়মিত পড়তাম। একটা ক্যালেন্ডার তৈরি করেছিলাম। যেখানে তারিখের নিচে, পরীক্ষার কত দিন বাকি লেখা ছিল। ক্যালেন্ডার দেখে ৩৪ দিন আগে থেকে কঠোর পরিশ্রম করা শুরু করি।

এটাই তার মূল প্রস্তুতি ছিল জানিয়ে বলেন, মেসে থাকতাম। ওই সময়টা এমন ছিল—মেসে বিরিয়ানি রান্না হলেও খেতাম না। কারণ, অতিরিক্ত তেলজাতীয় খাবার খেয়ে যদি অসুস্থ হয়ে যাই, একটা দিন নষ্ট। সে ক্ষেত্রে প্রস্তুতিতে বিঘ্ন ঘটতে পারে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে