ইদানিং কোনো গান, সিনেমা কিংবা নাটক জনপ্রিয়তা অর্জন করলেই এক পক্ষ দাবি তুলেন এটি নকল কিংবা বিকৃত করা হয়েছে। কিন্তু গান কিংবা সিনেমাটি যদি জনপ্রিয়তা না পেত তাহলে কারো কোনো কথায় থাকতো না। গভীরে না গিয়ে বিতর্কের জন্য অভিযোগ তোলা হয়। এবার ঠিক ‘মা লো মা’ গান নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা হলো।
জানা যায়, প্রকাশের পর শ্রোতারা লুফে নিয়েছে কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় সিজনের দ্বিতীয় গান ‘মা লো মা’। ছাদ পেটানোর স্মৃতি এবং লোকগান ও র্যাপের মিশেলে এ পরিবেশনের ছন্দে নেটিজেনরা যখন দুলছেন তখন হঠাৎ ছন্দ পতন ঘটাল বেরসিক এক অভিযোগ। তবে সেটি গুরুতর।
জানা যায়, গানটির গীতিকারের নাম নিয়ে মিথ্যাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। কোক স্টুডিও বাংলা গানটির গীতিকারের ঘরে খালেক দেওয়ানের নাম উল্লেখ করলেও দাবি করা হচ্ছে তথ্যটি মিথ্যা। গানটি নেত্রকোনার বাউল রশিদ উদ্দিনের লেখা।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ নেত্রকোণার সংস্কৃতিকর্মীরা। তারা সোমবার সামাজিক-সাংস্কৃতিক-সাহিত্য সংগঠনসমূহ ও সম্মিলিত নাগরিক সমাজের ব্যানারে কোক স্টুডিও বাংলার বিরুদ্ধে অনৈতিকভাবে গানটি বাউল আব্দুল খালেক দেওয়ানের লেখা বলে প্রচারের অভিযোগ এনে মানবন্ধন করেছেন।
প্রীতমের দেখানো পথে হেঁটে যোগাযোগ করা হয় কোক স্টুডিও বাংলার সঙ্গে। বিষয়টি নিয়ে কোক স্টুডিও বাংলা তাদের প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলে, ‘‘কোক স্টুডিও বাংলা একজন শিল্পীর সৃজনশীলতা ও মেধা সম্পদের মৌলিকত্বের গুরুত্ব অনুধাবন এবং মূল্যায়ন করে। আমাদের প্রতিটি গান সতর্কতার সাথে যাচাই করা হয় এবং ন্যায়সঙ্গত শিল্পীকে প্রাপ্য কৃতিত্ব দেওয়া হয়।
‘মা লো মা’ গানটি মো. খালেক দেওয়ানের লেখা। তাঁর বংশধর আরিফ দেওয়ান ও সাগর দেওয়ান এই গানে পারফর্ম করেছেন। ‘মা গো মা’ নামে এই গানের আরও একটি সংস্করণ আছে, যা বাউল রশিদ উদ্দিনের লেখা। গান দুটির মধ্যে বিভ্রান্তি এড়াতে ‘মা লো মা’ গানটি প্রকাশের সময়ই ইউটিউবে গানটির বর্ণনায় রশিদ উদ্দিনের নামও উল্লেখ করা হয়েছে।’
ইউটিউবে গানটির বর্ণনায় চোখ রাখলে দেখা যায় বিষয়টি পরিষ্কার করেছে কোক স্টুডিও বাংলা। সেখানে বাউল রশিদ উদ্দিনের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। লেখা হয়েছে, মা লো মা লিখেছেন মোঃ খালেক দেওয়ান (গানটির আরেকটি সংস্করণ লিখেছেন বাউল রশিদ উদ্দিন, নাম মা গো মা)।
গত ৩ মে কোক স্টুডিও বাংলার ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ পেয়েছে ‘মা লো মা’ গানটি। এতে কণ্ঠ দিয়েছেরন প্রীতম হাসান, সাগর দেওয়ান, আরিফ দেওয়ান ও র্যাপার আলী হাসান। গানটির সংগীতায়োজনে ছিলেন প্রীতম হাসান। প্রকাশের চার দিনে ৫৬ লাখের অধিক মানুষ শুনেছে গানটি।
যাযাদি/ এস