সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষার্থীদের ভাবনায় অগ্নিদুর্ঘটনা রোধ

জ্বলছে আগুন, বাড়ছে ধোঁয়া, ঝরছে অশ্রম্ন। বর্তমানে, অগ্নি সমস্যা দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আজ তো বস্তি পুড়ছে, কাল কাপড়ের মার্কেট, পরশু বড় মিল ইন্ডাস্ট্রি। ঘুম থেকে উঠলেই শুনতে পাওয়া যায় অগ্নিকান্ডের আর্তনাদ। সম্প্রতি সময়ের বঙ্গবাজার, চকবাজার, রাজধানীর নবাবপুরের গোডাউন, নিউ মার্কেটের অগ্নিকান্ডের আর্তনাদে চারদিক ভারী হয়ে আছে। কথায় আছে, প্রতিরোধের চেয়ে প্রতিকার উত্তম, ক্ষতি হওয়ার পর সব শ্রেণির মানুষ এগিয়ে এলেও আগে থেকেই সবাই সচেতন থাকলে এমন ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা কম ছিল। দেশের অগ্নিকান্ড থেকে পরিত্রাণ পাব কীভাবে এ নিয়েই বলছেন দেশ সেরা মেধাবীরা। তুলে ধরছেন কুমিলস্না বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-নাদিয়া আফরোজ
নতুনধারা
  ২০ মে ২০২৩, ০০:০০

অগ্নিকান্ড মানে মানুষের জীবন আর সম্পদের অপূরণীয় ক্ষতি

ফজলে রোহানি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সাম্প্রতিক সময়ে অগ্নিকান্ড বাংলাদেশের জন্য একটি নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। পত্রিকাগুলোতে প্রায় প্রতিদিনই দেখা যায় বাংলাদেশের কোথাও না কোথাও আগুন লাগে। একেকটা অগ্নিকান্ড মানে মানুষের জীবন আর সম্পদের অপূরণীয় ক্ষতি। অগ্নিকান্ড শুধু পোড়ায় না অনেকগুলো অব্যবস্থাপনার দিকও দেখিয়ে দেয়। এখনো সময় আছে সুচিন্তিত পদক্ষেপ নেয়ার। আমাদের ভাবতে হবে, এই অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় আসলে কী? আর অবশ্যই সরকারি কঠোর আইন প্রয়োগের পাশাপাশি নাগরিক হিসেবে আমাদের সচেতন হতে হবে। তাছাড়া এই ধরনের দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সেজন্য সরকারকে আরও সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা একটু সচেতন হলেই এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়িয়ে চলতে পারি।

সচেতনতার বিষয়গুলো নজরে আনা

আসিয়া আক্তার লিমা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

বর্তমান সময়ে, অগ্নিদুর্ঘটনার সংবাদে ছেঁয়ে যাচ্ছে নিত্যদিনের সংবাদমাধ্যম। কয়েকদিন আগেও যে রঙিন কাপড়গুলো মোড়ানো ছিল পলিব্যাগের বঙ্গবাজারে, নিউ মার্কেটে, নগদ অর্থগুলো দোকানে ছিল তা আজ কালো ছাঁইয়ে পরিপূর্ণ। তবে, একজন সক্রিয় নাগরিক হিসেবে দেশের অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে কিছু করণীয় বিষয় তুলে ধরছি-

১. রান্নার পর চুলা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে।

২. কলকারখানা, অফিস, ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিষ্ঠান/স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধ করতে হবে।

৩. গ্যাসের চুলা জ্বালানোর আগে দরজা, জ্বানালা খুলে ফেলতে হবে।

৪. সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ পস্ন্যাটফর্মে সচেতনতামূলক বার্তা, বিভিন্ন পোস্টার, বুকলেট, মানববন্ধনের মাধ্যমে সচেতনতার বিষয়গুলো নজরে আনলে দেশের অগ্নিদুর্ঘটনা অনেকটাই লাঘব হবে বলে আশা করি।

অন্যতম একটি আলোচিত ঘটনা হলো অগ্নিকান্ড

মো. আবদুর রহিম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

জ্বলছে আগুন, পুড়ছে স্বপ্ন, ঝরছে অশ্রম্ন। বর্তমান বাংলাদেশের অন্যতম একটি আলোচিত ঘটনা হলো অগ্নিকান্ড। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং পুলিশ তথ্য সূত্রে জানা যায়, সারা দেশে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৬৩টি অগ্নিকান্ড ঘটছে। এসব অগ্নিকান্ডের ফলে একদিনে প্রাণ হারাচ্ছে অগণিত মানুষ। অন্যদিকে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাঁই হয়ে মুহূর্তের মধ্যেই নিঃস্ব হচ্ছে অসংখ্য মানুষ। এমনকি আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়েও নিহত হয়েছে অনেক ফায়ার সার্ভিসের কর্মী। তাই অগ্নিকান্ডের এই বিধ্বংসী রূপ ঠেকাতে প্রশাসনের উচিত অগ্নিকান্ড সূত্রপাতের কারণগুলো চিহ্নিত করে বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে মানুষকে এ সম্পর্কে সচেতন করে তোলা। এ ছাড়া ফায়ার সার্ভিসের উন্নয়নে মনোনিবেশ করা এবং ফায়ার সার্ভিসের আধুনিকায়ন করা। যাতে আগুন তার বিধ্বংসী রূপ ধারণ করার আগেই তা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।

অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের ব্যবস্থা করা

নাফিস আহমেদ ভূঁইয়া

ইংরেজি বিভাগ

দেশের অগ্নিকান্ড থেকে পরিত্রাণ পেতে রাষ্ট্র কিংবা সামাজিক পর্যায়ে নির্ভরতা কমিয়ে দিয়ে ব্যক্তি সচেতনতা বৃদ্ধি করা। দেখুন, অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে আবেগী পোস্ট স্ট্যাটাসের কমতি কখনো হয় না? অথচ এগুলো কমিয়ে দিয়ে যদি নিজের বাসার গ্যাসের লাইন এবং বৈদু্যতিক সার্কিটগুলো চেক করত তাহলে বুদ্ধিমানের কাজ হতো।

এই দুটো বিষয়ের পাশাপাশি প্রতিটি বাসার মালিকের উচিত অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের ব্যবস্থা করা। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে নিজেদের সচেতনতা অবলম্বনের পাশাপাশি প্রতিবেশীদের দরজায় গিয়ে হলেও এসব বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বনের কথা বলতে হবে। সতর্কতাকে সংক্রামক করতে হবে, কারণ নগর পুড়লে দেবালয় এড়ায় না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে