রেফ্রিজারেটর যে কোনো পরিবারের খাদ্যাভ্যাসের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। শুধু তাই নয়, পরিবারের সদস্যদের সুস্বাস্থ্যও অনেক সময় নির্ভর করে রেফ্রিজারেটরের ওপর। গ্রীষ্মে খাবার বেশিক্ষণ বাইরে রাখা যায় না। কারণ উচ্চ তাপমাত্রার কারণে খাবার তুলনামূলকভাবে দ্রম্নত নষ্ট হয়ে যায়।

তীব্র গরমে তাই রান্না করা খাবার কিংবা কাঁচা সবজি ও ফলমূল আরও ভালোভাবে সংরক্ষণের জন্য রেফ্রিজারেটর ব্যবহারের টুকিটাকি কিছু কৌশল জেনে রাখতে পারেন আপনিও।

পরিচ্ছন্নতার সেরা উপায় ডিপ ক্লিন

পুরনো বাসি খাদ্যকণা রেফ্রিজারেটরের ভেতরের পরিবেশকে অস্বাস্থ্যকর করে তোলে। এ জন্য প্রয়োজন ডিপ ক্লিনিং! রেফ্রিজারেটর ডিপ ক্লিন করার জন্য প্রথমেই রেফ্রিজারেটরটির বিদু্যৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে নিন। হাতে এক জোড়া রাবারের গস্নাভস পরে নিন এবং রেফ্রিজারেটরের ভেতরে রাখা সবকিছু বের করে নিন। পরে বাসি ও গন্ধযুক্ত খাবারগুলো একটি ব্যাগে নিয়ে ফেলে দিন। এবার একটি নরম কাপড়ে কুসুম গরম সাবান পানি ভিজিয়ে রেফ্রিজারেটরের প্রতিটি কোনায় কোনায় সময় নিয়ে আস্তে আস্তে পরিষ্কার করুন। তেল চিটচিটে দাগ ও জমে থাকা ময়লার সঁ্যাতসেঁতে গন্ধ থেকে মুক্তি পেতে লেবুর ছোট ছোট টুকরো ফ্রিজের প্রতিটি কম্পার্টমেন্টে রাখতে পারেন।

হিটস্ট্রোক : কী, কেন ও করণীয়

ক্রস-কন্টামিনেশন এড়িয়ে চলুন

ক্রস-কন্টামিনেশন বলতে মূলত একাধিক খাবারের ক্ষুদ্র খাদ্যকণা ও জীবাণু মিশে যাওয়া বোঝায়। সাবধান তা না হলে রেফ্রিজারেটরের বদ্ধ পরিবেশে ফুটপয়জন ঘটা খুবই স্বাভাবিক। যেমন অনেকেই কাঁচা মাংস খোলা অবস্থায় রেফ্রিজারেটরে রেখে দেন, যার ফলে মাংসের ক্ষুদ্রকণা রেফ্রিজারেটরের ভেতরে থাকা অন্য খাবারে মিশে যায়। রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষিত খাবারের এমন দূষণ ক্ষেত্র বিশেষে গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। ক্রস-কন্টামিনেশন এড়াতে কাঁচা মাংস, মাছ এবং কাঁচা সবজি ও ফলমুল প্রতিটি আলাদা আলাদাভাবে নিরাপদে বক্সে বা ব্যাগে মুড়ে রাখুন। পানীয় এবং পচনশীল খাবার কুলারে আলাদাভাবে প্যাক করুন। দুগ্ধজাত খাবার রাখার সময় ভালোভাবে সিল করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করুন; কারণ এই খাবারগুলোয় জীবাণু খুব দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়তে পারে।

রেফ্রিজারেটর ব্যবহারে সঞ্চয়ী ও স্মার্ট হোন

রেফ্রিজারেটরের ভেতরে পর্যাপ্ত বায়ু সঞ্চালন এবং প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা বজায় রাখার জন্য খাবার আইটেমগুলোর মধ্যে পর্যাপ্ত দূরত্ব রাখা প্রয়োজন- যা আমরা অনেকেই ভুলে যাই। এ ক্ষেত্রে 'ফার্স্ট ইন, ফার্স্ট আউট' নিয়মটি অনুসরণ করতে পারেন, অর্থাৎ যে খাবারটি আগে রেফ্রিজারেটরে রাখা হয়েছে, সেটিকেই আগে খাওয়ার জন্য বের করুন। প্রয়োজন অনুসারে যে কোনো খাবার রান্নার ২ ঘণ্টার মধ্যেই রেফ্রিজারেটরে রাখার অভ্যাস গড়ে তুলুন। সব সময় লিক-প্রম্নফ, পরিষ্কার পাত্রে খাবার সংরক্ষণ করুন। এ ছাড়া বাজার থেকে কিনে আনা সবুজ শাকসবজিতে যদি ধুলা লেগে থাকে, তবে তা রেফ্রিজারেটরে রাখার আগে ভালোভাবে পরিষ্কার করে পেপার, টাওয়েল কিংবা ব্যাগে মুড়িয়ে নিন, এতে রেফ্রিজারেটরের ভেতরের পরিবেশ সতেজ থাকবে।

এ ছাড়া বাজারের বেশ কিছু ব্র্যান্ড চমকপ্রদ কিছু প্রযুক্তি নিয়ে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে স্যামসাংয়ের টুইন কুলিং পস্নাস প্রযুক্তি- যা ফ্রিজারের কম্পার্টমেন্টগুলোকে আলাদাভাবে ঠান্ডা করে, সর্বোচ্চ মাত্রার আর্দ্রতা নিশ্চিত করে এবং দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়া রোধ করে। দেশের বিভিন্ন শীর্ষ ব্র্যান্ড এখন অত্যাধুনিক ফিচার যুক্ত রেফ্রিজারেটর মডেল বাজারে নিয়ে এসেছে। স্যামসাংয়ের উদ্ভাবনী টুইন কুলিং পস্নাস প্রযুক্তি ফ্রিজ এবং ফ্রিজার কম্পার্টমেন্টগুলোকে আলাদাভাবে ঠান্ডা করে, সর্বোচ্চ মাত্রার আর্দ্রতা নিশ্চিত করে এবং দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়া রোধ করে। এর কনভার্টেবল ফ্রিজারের মাধ্যমে একটি পৃথক কম্পার্টমেন্টে কাঁচা মাংস অন্যান্য খাদ্য আইটেম থেকে আলাদাভাবে সংরক্ষণ করা যায়।