রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
গ্রন্থ পর্যালোচনা

প্রবেশন ও প্যারোল আইন

'প্রবেশন ও প্যারোল আইন- তত্ত্ব ও প্রয়োগ পদ্ধতি' বইটির তৃতীয় সংস্করণ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এই সংস্করণে তাত্ত্বিক বিষয় অপেক্ষা প্রায়োগিক বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। একটি সম্পূর্ণ প্রবেশন রায়ের নমুনা, সাম্প্রতিক রায় ও সার্কুলার এবং নিত্যনতুন সমস্যার জিজ্ঞাসিত শতাধিক প্রশ্নোত্তর সংযোজন করা হয়েছে। বইটি নিয়ে লিখেছেন রাজশাহীর প্রবেশন অফিসার মো. মনিরুজ্জামান।
নতুনধারা
  ১০ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

একজন নতুন প্রবেশন অফিসার হিসেবে প্রবেশন কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে মনের মধ্যে অনেক জিজ্ঞাসা ছিল। বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলাম পলাশ স্যারের লেখা 'প্রবেশন ও প্যারোল আইন' গ্রন্থটির ৩য় সংস্করণে সেই সমস্ত জিজ্ঞাসার সুন্দর উত্তর মিলল। এই সংস্করণের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্নোত্তর পর্বের সংযোজন। একজন প্রবেশনার সরকারি চাকরি পেলে পুলিশ ভেরিফিকেশনে সমস্যা হবে কিনা, প্রবেশনার পাসপোর্ট গ্রহণের ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হবেন কিনা, প্রবেশন আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে কিনা, প্রবেশনার ধার্যদিনে আদালতে হাজির হবেন কিনা, প্রবেশনারের হাজিরা প্রবেশন অফিসার দিতে পারবেন কিনা, কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রবেশন আদেশ বাতিল হবে প্রভৃতি প্রশ্নসহ আরও অনেক প্রয়োজনীয় প্রশ্নের উত্তর অত্যন্ত সহজ ভাষায় সন্নিবেশিত হয়েছে বইটিতে।

প্রবেশন আইন অনুযায়ী মৃতু্যদন্ড ও যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডনীয় অপরাধ ব্যতীত অন্যান্য প্রমাণিত অপরাধের ক্ষেত্রে অপরাধীকে কারাগারে না পাঠিয়ে অপরাধীর চারিত্রিক সংশোধন ও সমাজে পুনর্বাসনের নিমিত্ত প্রবেশন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দিতে পারেন আদালত। এক্ষেত্রে মুক্তিপ্রাপ্ত আসামিকে প্রবেশনার বলা হয়।

কেউই অপরাধী হয়ে জন্মায় না। সমাজই মানুষকে অপরাধী বানায়। আবার যাদের অভ্যাসগত অপরাধী বলা হয়, অপরাধকে তাদের অভ্যাসে পরিণত করতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সমাজই সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এমন অপরাধীকে সাজা দিয়ে জেলে না পাঠিয়ে সমাজ ও পরিবারের সঙ্গে রেখে সু-অভ্যাস গঠনের মাধ্যমে সমাজে অপরাধের মাত্রা কমিয়ে আনা যায়। প্রবেশনে মুক্ত অপরাধীর চারিত্রিক সংশোধন ও আত্ম উন্নয়ন দেখে সমাজে সম্ভাব্য অপরাধ ও অপরাধীর সংখ্যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কমে যাওয়াই স্বাভাবিক। সামাজিক উৎকর্ষের এই দিকটি বাস্তবায়নের অন্যতম হাতিয়ার প্রবেশন আইন।

দীর্ঘ বিচারিক জীবনের অভিজ্ঞতা ও মানবীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নিরেট কঠিন আইনটিকে সহজ সাবলীলভাবে উপস্থাপন করেছেন, স্যার। প্রবেশন প্রক্রিয়ায় আদালতের এখতিয়ার, বিচারক মন্ডলীর বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতা, প্রবেশন কর্মকর্তার কর্তব্য ও নৈতিক দৃঢ়তা, আইনজীবীদের কার্যকর ভূমিকা সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে বইটিতে।

স্যারের মানবিক মনন ও উদার দৃষ্টিভঙ্গির ফসল 'প্রবেশন ও প্যারোল আইন' গ্রন্থটির সংকলন। বর্তমানে জেলা প্রবেশন অফিসারের পাশাপাশি উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে প্রবেশনারের সংখ্যা বাড়ছে। সঠিকভাবে প্রাকদন্ডাদেশ প্রতিবেদন প্রস্তুত, বন্ড লিখন এবং অগ্রগতি প্রতিবেদন তৈরি প্রভৃতি বিষয়ের নিঁখুত উত্তর রয়েছে বইটিতে।

নিঃসন্দেহে জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ের সব প্রবেশন অফিসারদের কাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ এই বইটি। প্রবেশন কার্যক্রমের সফলতার নিমিত্তে সারাদেশের সম্মানিত সমাজসেবা অফিসারদের জন্য অপরিহার্য এই বইটি নিতে আগ্রহী কর্মকর্তাদের প্রতি আমার আন্তরিক সহযোগিতা থাকবে।

প্রবেশন ও প্যারোল আইন

লেখক: মো. সাইফুল ইসলাম (সাইফুল ইসলাম পলাশ, বর্তমানে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, রাজশাহী)।

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৪৯৬, মুদ্রিত মূল্য: ৮০০ টাকা, বিক্রয়মূল্য: ৫৫০ টাকা।

পাওয়া যাচ্ছে ইউনিভার্সেল বুক হাউস, আমিন বুক হাউস, রহিম ল' বুকসহ বিভিন্ন আইন বইয়ের লাইব্রেরিগুলোতে; এছাড়াও অনলাইনে অর্ডার করা যাচ্ছে- গনন ঙহষরহব গধৎশবঃরহম নামক ফেসবুক পেজে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে